কলকাতা: বছর পাঁচেক আগে ভোট হিংসার শিকার হয়েছিলেন ঝাড়গ্রামের ভোল গ্রামের বাসিন্দা মাতাল দিগার। বিজেপি করতেন তিনি। বেলিয়াবেড়ায় তৃণমূল ও বিজেপির সংঘর্ষে গুরুতর জখম হয়েছিলেন। পরে কলকাতায় এসএসকেএম হাসপাতালে মারা যান। এ বছর পঞ্চায়েতে মনোনয়নপর্বের আগে তৃণমূলে যোগ দেন মাতাল দিগারের পরিবার। নিহত সেই বিজেপি কর্মীর দাদা, নাতি-সহ পরিজনেরাই একুশে জুলাইয়ের সভায়। গোপীবল্লভপুর-২ ব্লকের অন্তর্গত ভোল গ্রাম। সেই ব্লকেরই বাসিন্দা আবার বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ। তৃণমূলের সঙ্গেই বিজেপির সংঘর্ষে যেখানে মাতাল দিগারের মৃত্যু হয় বলে অভিযোগ। সেখানে কেন তাঁর পরিবার বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে? মাতাল দিগারের নাতি পবিত্র দিগারের বক্তব্য, দাদুকে যাঁরা খুন করেছেন তাঁদের শাস্তি নিশ্চিত করতে হলে তৃণমূল করা ছাড়া রাস্তা নেই।
মাতাল দিগারের পরিবার আগে ছিল সিপিএম। তাঁরা বলছেন, “ব্রিগেডে অনেকবার এসেছি। একুশে জুলাই প্রথম। সিপিএম ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর আশ্রয় না পেয়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলাম। এখন বিজেপিতে থেকে হিংসার মুখে পড়লে আশ্রয় মেলে না। থানায় ডায়েরি করার জন্যও নেতাদের পাশে পাওয়া যায় না। তাই তৃণমূলে যোগ দিলাম।”
২০১৭ সালের ঘটনা। বেলিয়াবেড়ায় তুমুল সংঘর্ষে জড়ায় বিজেপি ও তৃণমূল। সেই ঘটনায় বিজেপি কর্মী মাতাল দিগারও গুরুতর জখম হন। পরে হাসপাতালে মৃত্যু হলে তাঁর ছেলে ১১ জন তৃণমূল নেতা কর্মীর নামে অভিযোগ দায়ের করেন। এই ঘটনার জল গড়ায় বহুদূর। সে সময় বিজেপির পশ্চিমবঙ্গ মহিলা মোর্চার সভানেত্রী ছিলেন সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়। তিনি জেলায় সভা করে বলেছিলেন, মানুষ পথে নেমে অত্যাচারী তৃণমূল নেতাদের ঘর থেকে বের করে এনে পেটাবে। মাতাল দিগারে মৃত্যুকে সামনে রেখে জঙ্গলমহলে বিজেপি সে সময় লাগাতার প্রচারসভা করে। তবে সেসব এখন অতীত। বিজেপিতে ভরসা হারিয়ে সেই পরিবারই তৃণমূলে, ২১ জুলাইয়ে ধর্মতলামুখী।