কলকাতা: সাইকেল থেকে পড়ে হাত ভেঙে যাওয়ায় সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে গিয়েছিল মল্লিকপুরের বাসিন্দা জয় মণ্ডল। সঙ্গে ছিলেন তাঁর বাবা দীপক মণ্ডল। একজন হাড় ভেঙে যাওয়া রোগীকে যে অভিজ্ঞতার মধ্যে দিয়ে যেতে হল, তা কল্পনাও করেনি জয়ের পরিবার। একটা প্লাস্টার করতে গিয়ে নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজের মতো হাসপাতালে ভয়াবহ অভিজ্ঞতার শিকার হতে হল মণ্ডল পরিবারকে।
জয়ের বাবার অভিযোগ, ৯ ঘণ্টা কোনও চিকিৎসা ছাড়াই ফেলে রাখা হয়েছিল তাঁর ছেলেকে। তাঁকে বলা হয়েছিল, থানায় ডায়েরি না করলে চিকিৎসা হবে না। অনেক ঘোরার পর ২০০ টাকা নিয়ে ডায়েরি করার কথা বলে একজন।
এ তো গেল প্রথম পর্ব। মণ্ডল পরিবারের অভিযোগ, তাঁদের ছেলেকে গিনিপিগ বানানো হয়েছিল। বারবার প্লাস্টার কেটে জুনিয়রদের পাঠ দিচ্ছিলেন সিনিয়ররা! পরিবারের অভিযোগ, জুনিয়র ডাক্তাররা প্রথমে প্লাস্টার করা হয় আঙুল পর্যন্ত। পরে সিনিয়র চিকিৎসকরা এসে বলেন, ‘এতদূর প্লাস্টার করেছিস কেন?’ এ কথা বলার পর কাটা হয় প্লাস্টার। এরপর সিনিয়র চিকিৎসকরা বলেন, ‘এই ভিতর থেকে তুলোটা বের করেছিস?’ আবার কাটা হয় প্লাস্টার। অভিযোগ, রোগী যন্ত্রণায় চীৎকার করলে চিকিৎসরা তাঁকে বলেন, ‘তুই চুপ কর।’ গালাগালিও দেন বলে অভিযোগ।
রোগীর মা বলছেন, ‘আমরা তো জানি ডাক্তাররা ভগবান। আমরা চাই ওদের উচিত শিক্ষা হোক।’ এএইচএসডি-র সম্পাদক উৎপল বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘আমি চাই অভিযোগ জানানোর সঠিক পদ্ধতি মেনে অভিযোগ জানানো হোক।’
অভিযোগের বহর আরও লম্বা। হাসপাতালে ওষুধ থাকা সত্ত্বেও চিরকুটে লিখে কোন দোকানে যেতে হবে বলে দিচ্ছেন চিকিৎসকরা! ছাড়ও দেওয়া হচ্ছে না বলে দাবি করেন জয়ের বাবা। কথাটা স্বীকারও করে নেন ওষুধ ব্যবসায়ী। ব্যবসায়ীর বলেন, ওষুধ ফ্রিতে দিলে বাইরে সেল হবে কী করে! এনআরএস থেকে যে এমন চিরকুট মাঝে মধ্যেই আসে, সে কথাও স্বীকার করে নেন ওই ব্যবসায়ী।
রোগী কল্য়াণ সমিতির চেয়ারম্যান শান্তনু সেন বলেন, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে গিয়ে চিকিৎসক ও নার্সের নাম জানাক রোগীর পরিবার। তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। জয় মণ্ডলের পরিবার ইতিমধ্যেই লিখিত অভিযোগ জানিয়েছে কর্তৃপক্ষের কাছে।