কলকাতা: বাড়িতে এক ছোট মেয়ে রয়েছে। বয়স ১১ বছর। সোমবার ছিল মেয়ের জন্মদিন। ছোট্ট মেয়েটা আবদার করেছিল, বাবা বাড়ি এলে তবেই কেক কাটবে। সেই টানেই তাড়াতাড়ি বাড়ি ফেরার জন্য উঠেছিলেন ‘অভিশপ্ত’ কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসে। কিন্তু আর মেয়ের সঙ্গে দেখা হল না। মেয়ের জন্মদিনও উদযাপন করা হল না। নিউ জলপাইগুড়ি ছেড়ে আসার পর কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের ভয়াবহ দুর্ঘটনায় কাড়ল কলকাতার শুভজিৎ মালির প্রাণ। তাঁর নিষ্প্রাণ দেহ পড়ে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজের মর্গে। বালিগঞ্জের ১৭, জামির লেনের বাড়িতে এখন শুধুই কান্নার রোল আর স্বজন হারানোর যন্ত্রণা।
শুভজিৎ মালিকে কাজের সূত্রে প্রায়শই ভিন রাজ্যে যেতে হয়। সম্প্রতি গিয়েছিলেন নাগাল্যান্ডে। গিয়েছিলেন চার চাকার গাড়ি চালিয়ে। সেখানে গাড়ি সাপ্লাই দিয়ে ফিরছিলেন কলকাতায়। এই কাজ তিনি গত প্রায় পাঁচ বছর ধরে করে আসছেন। গাড়ি নিয়ে ভিন রাজ্যে যান, সাপ্লাই দিয়ে আবার ফিরে আসেন। কিন্তু এবার মেয়ের আবদার মেটাতে দ্রুত বাড়ি ফেরার জন্য ট্রেনে চেপেই বাড়ি ফেরার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। শুভজিতের মৃত্যু সংবাদ পাওয়ার পর থেকেই বালিগঞ্জে জামির লেনের বাড়িতে নেমে এসেছে শোকের ছায়া।
শুভজিতের সঙ্গে গতকাল রাতে শেষ কথা হয়েছিল তাঁর স্ত্রী। স্ত্রীকে বলেছিলেন, বাড়ি ফিরে সবাইকে ঘুরতে নিয়ে যাবেন। বাড়ি এসে খিচুড়ি-মাছভাজা খেতে চেয়েছিলেন। তারপর আজ সকাল থেকে আর একবারও কথা হয়নি। সকাল থেকে অপেক্ষা করছিলেন ফোন আসবে। কিন্তু সেই ফোন আর আসেনি। এরই মধ্যে আসে এই দুঃসংবাদ। যে বাড়িতে আনন্দ উৎসবের তোড়জোড় চলছিল, সেই বাড়িতে হঠাৎ করে নেমে এসেছে অন্ধকার।