কলকাতা: স্কটল্যান্ড ইয়ার্ডের সঙ্গে তুলনা করা হয় কলকাতা পুলিশকে। অথচ তিলোত্তমাকাণ্ডের আবহে সেই কলকাতা পুলিশের অস্বস্তির অন্ত নেই। ১ সেপ্টেম্বর পুলিশ দিবস। এদিনও অস্বস্তি এড়াতে পারল না লালবাজার। সম্প্রতি বাস থেকে টাকা নেওয়ার একটি ছবি ভাইরাল হয়। তোলাবাজির অভিযোগ ওঠে পুলিশের বিরুদ্ধে। কলকাতা পুলিশ সেটিকে ‘ফেক’ লিখে দিয়েছিল। কলকাতা পুলিশ তাদের ফেসবুক পেজে দাবি করেছিল, জরিমানা নেওয়া হচ্ছে। কিন্তু আজ দেখা গেল, ছবিটি ২০২৩ সালের। তারপরই সাম্প্রতিক পোস্টটি পুলিশ সরিয়ে ফেলে ফেসবুক পেজ থেকে।
এক সিভিক ভলান্টিয়ার তিলোত্তমার খুন-ধর্ষণে অভিযুক্ত। সেই অভিযুক্ত গ্রেফতারও হন ব্যাটালিয়ানের ব্যারাক থেকেই।
শুক্রবার রাতে কলকাতা পুলিশের মুখ পুড়িয়েছেন আর এক সিভিক ভলান্টিয়ার। ব্যারিকেড ভেঙে প্রতিবাদ মঞ্চে ঢুকে পড়েন মদ্যপ সিভিক, অভিযোগ তোলেন রবীন্দ্রভারতীর প্রতিবাদীরা। সিভিককে পালানোর সুযোগ করে দিয়ে আন্দোলনকারীদের বিক্ষোভের মুখে পড়েন ট্রাফিক সার্জেন্ট। দু’জনের বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হয়েছে লালবাজার।
একের পর এক ঘটনা। বারবার কলকাতা পুলিশের দিকে অভিযোগের আঙুল। সমাজে ইমেজ বাঁচাতে সমাজমাধ্যমের শরণাপন্ন হয়েছে কলকাতা পুলিশ। সেখানেও অস্বস্তির কাঁটা। দু’-তিন ধরে হঠাত্ এই ছবিটা ভাইরাল! বাস থেকে টাকা তোলার অভিযোগ। ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে কলকাতা পুলিশ দাবি করে, ছবিটি ফেক। ২৫ অগস্ট নাকি আইন মেনেই জরিমানা করা হয়েছিল, সঙ্গে একটি চালানের ইমেজও পোস্ট করে পুলিশ।
এর পরই ঘটনা নয়া মোড় নেয়। সোশ্যাল মিডিয়ায় নাগরিকরা আর একটি পোস্ট হাতিয়ার করে দাবি করেন, ছবিটিই ২০২৩ সালের অগস্টের। বেহালায় লরির ধাক্কায় ছাত্রমৃত্যুর ক’দিন পরই তোলা। প্রশ্ন ওঠে, ২০২৩ সালের ঘটনা! এ বছর ২৫ অগস্ট কী ভাবে জরিমানা করল কলকাতা পুলিশ?
সোশ্যাল মিডিয়ায় নাগরিকরা প্রশ্ন তুলতেই প্রথমে টাইমলাইন থেকে পোস্টটি সরিয়ে দেয় কলকাতা পুলিশ। কমেন্টও অফ করে দেয়। রবিবার পুলিশ দিবস। এই নিয়েও কলকাতা পুলিশ একটি পোস্ট করেছিল। সেখানেও নাগরিকরা ছবি-বিতর্ক নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। এর পর বিকেলের দিকে FAKE সংক্রান্ত গোটা পোস্টই সরিয়ে দেয় পুলিশ। প্রশ্ন ওঠে, ফেক বলে নিজেই ফেঁসে গেল কলকাতা পুলিশ?
বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, “কলকাতা পুলিশ তো এখন ফেক ভিডিয়ো, ফেক ছবি, ক্রপ করা ছবিই দেখাচ্ছে। পুলিশের মুখ এত কালো হয়ে গিয়েছে, ফেক ছাড়া আর কিছু চলবে না।” তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষের বক্তব্য, “যারা সোশ্যাল মিডিয়া হ্য়ান্ডেল করেন, তাঁদের আরও বেশি করে সতর্ক থাকা উচিত। এমন কিছু দিয়ে দিলাম, যা তথ্যগত ভুল।”