কলকাতা: দিল্লিতে গিয়েছেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ঠাসা কর্মসূচি। আর এসবের মধ্যেই ইন্ডিয়া জোটে কংগ্রেসের ভূমিকা নিয়ে সুর চড়ালেন তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন, কংগ্রেসের ‘জমিদারি নীতি’ আর চলবে না। সম্প্রতি তিন রাজ্যে ভরাডুবির দায়ও কংগ্রেসের একার ঘাড়েই ঠেললেন তিনি। বললেন, “তিন রাজ্যে যেভাবে কংগ্রেস হেরেছে, সেটা কংগ্রেসের একার হার। নিজেরা লড়তে গিয়েছিল একা একা। ইন্ডিয়া স্পিরিট নিয়ে যায়নি।” তাঁর বক্তব্য, যদি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অন্যান্য সিনিয়র নেতাদের মুখ সামনে রাখত কংগ্রেস ওই তিন রাজ্যে, তাহলে যে স্পিরিট তৈরি হত, সেটা হয়নি।
ইন্ডিয়া জোটও যাতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বিরোধী জোটের অন্যতম মুখ করে এগোয়, সেই বার্তাও দিলেন কুণাল ঘোষ। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক অভিজ্ঞতার কথাও তুলে ধরেন তৃণমূল মুখপাত্র। সাত বারের সাংসদ মমতা। সঙ্গে চার বারের কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। তিন বারের মুখ্যমন্ত্রী। শুধু তাই নয়, কুণালের বক্তব্য, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিভিন্ন প্রকল্পগুলি ভিন রাজ্যে অন্যান্য দলগুলি ভোটের সময় নকল করছে। সেক্ষেত্রে কুণালের প্রশ্ন, “মানুষ জেরক্স নেবে কেন?মানুষ তো অরিজিনাল চাইছে।”
ইন্ডিয়া জোটের লড়াইয়ের অন্যতম মুখ হিসেবে যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই দেখতে চাইছে তৃণমূল, সেকথাও এদিন স্পষ্ট করে দেন কুণাল। তাঁর কথায়, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিশ্বাসযোগ্য মুখ ও অন্যান্য সিনিয়র নেতাদের মুখকে সামনে রেখে যদি ইন্ডিয়া জোট লড়ে, তাহলে বিজেপি তিন অঙ্কও পার করতে পারবে না।’
কিন্তু কংগ্রেস শিবির থেকে যদি রাহুল গান্ধীকে প্রজেক্ট করা হয়? সেক্ষেত্রে? সেই নিয়েও সাংবাদিকদের প্রশ্নে কুণালের সাফ বক্তব্য, ‘সেটা কংগ্রেসের ব্যাপার। তারা তো নিজেরা লড়ে তিন রাজ্যে নিজেদের মুখ পুড়িয়েছে। ফলে তাদের স্ট্র্যাটেজি, নীতি, দৃষ্টিভঙ্গি যে বিজেপিকে হারানোর জন্য যথোপযুক্ত নয়, তা তো ইতিমধ্যে প্রমাণিত।’
কংগ্রেসকে খোঁচা দিয়ে কুণাল আরও বুঝিয়ে দিলেন, তিন রাজ্যে পরাজয়ের ধাক্কার গ্লানি কাটাতে ইন্ডিয়া জোটকে সাহায্য করেছে তৃণমূলই। বললেন, ‘পরাজয়ের গ্লানি কাটিয়ে শেষ পর্যন্ত ইন্ডিয়ার জোশ ফিরেছে মহুয়া মৈত্রর রক্তক্ষরণের মধ্য দিয়ে। যেদিন মহুয়াকে বহিষ্কার করা হল, সেদিন তৃণমূলের রক্তক্ষরণ ও ত্যাগের মধ্যে দিয়ে ইন্ডিয়া জোটে প্রাণ প্রতিষ্ঠা হয়েছে। ফলে কংগ্রেসের জমিদারি নীতি আর চলবে না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সহ অন্যান্য সিনিয়র নেতাদের মুখ সামনে রেখে সংঘবদ্ধ ইন্ডিয়া জোটের স্পিরিট তুলে ধরতে হবে।’
সাংবাদিক বৈঠকে একাধিকবার জোট ইন্ডিয়ার মুখ হিসেবে মমতার পাশাপাশি অন্যান্য সিনিয়র নেতাদের প্রসঙ্গ বললেও, কোন সিনিয়র নেতাদের কথা বলছেন, সে বিষয়টি স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেননি কুণাল। তবে তাঁর বক্তব্য, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখ সামনে রাখলে, এই জোট আরও বিশ্বাসযোগ্য চেহারা নেবে।