Bowbazar: ছেলের বইগুলো বের করতে দিন, বউবাজারে কান্নাভরা চোখে ট্রলি হাতে কাতর আর্তি মায়ের

TV9 Bangla Digital | Edited By: Soumya Saha

Oct 15, 2022 | 9:09 AM

KMRCL: স্পন্ডালাইটিসের সমস্যা রয়েছে। বেশি ভারী কিছু তুলতে পারেন না। শুক্রবার যখন ছেলেকে নিয়ে বেরিয়ে আসেন, তখনও বিশেষ কিছু নিতে পারেননি। জিনিসপত্র নেওয়ার সুযোগও পাননি তখন। হাতের সামনে যেটুকু যা নিতে পেরেছেন, তাই নিয়েই বেরিয়ে এসেছিলেন।

Bowbazar: ছেলের বইগুলো বের করতে দিন, বউবাজারে কান্নাভরা চোখে ট্রলি হাতে কাতর আর্তি মায়ের
বউবাজারে ঘরছাড়া নবনীতা বড়ুয়া

Follow Us

কলকাতা: চোখের জল বাঁধ মানছে না। রাত পেরিয়ে ভোর হয়েছে। কেএমআরসিএল-এর (KMRCL) তরফে রাত্রিবাসের বন্দোবস্ত করা হয়েছে বটে। হোটেলের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। কিন্তু যাঁদের এক লহমায় ঘর ছেড়ে বেরিয়ে আসতে হয়েছে, তাঁদের কি আর রাতের ঘুম আসে? চরম দুর্ভোগের শিকার বাকিদের মতো বিনিদ্র রাত কেটেছে নবনীতা বড়ুয়ারও। মেট্রোর কাজে যে বাড়িগুলি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তার মধ্যে নবনীতা দেবীদের বাড়িও রয়েছে। ফাটল-আতঙ্কে ছেলেকে নিয়ে বেরিয়ে আসতে হয়েছে বাড়ি ছেড়ে। স্পন্ডালাইটিসের ব্যাথাটা মাঝেমধ্যেই চাগাড় দিয়ে ওঠে। বেশি ভারী কিছু তুলতে পারেন না। শুক্রবার যখন ছেলেকে নিয়ে বেরিয়ে আসেন, তখনও বিশেষ কিছু নিতে পারেননি। জিনিসপত্র নেওয়ার সুযোগও পাননি তখন। হাতের সামনে যেটুকু যা নিতে পেরেছেন, তাই নিয়েই বেরিয়ে এসেছিলেন।

সারা রাত দুশ্চিন্তায় ঘুম হয়নি। স্বামী মারা গিয়েছেন গত মাসেই। ছেলে রৌণক বড়ুয়ার সামনেই হাফ-ইয়ার্লি পরীক্ষা। সেই সব বইও রয়ে গিয়েছে ফাটল ধরা বাড়ির মধ্যে। কিন্তু ছেলের যে পরীক্ষা সামনে! পড়াশোনার কী হবে? তাই হাজারো দুশ্চিন্তা বুকে নিয়ে ট্রলি নিয়ে পৌঁছে গিয়েছেন তিনি ফাটল ধরা বাড়ির সামনে। ট্রলিতে করে যে ক’টা বই নিয়ে যাওয়া যায় আর কি! কিন্তু ফাটল ধরা বাড়ির অবস্থাও যে ভাল না। দুর্ঘটনা এড়াতে এখনই কাউকে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না বাড়ির ভিতরে। বলা হচ্ছে বেলা ১১ টার আগে কাউকে ঢুকতে দেওয়া হবে না। কান্না-ভেজা চোখে মায়ের কাতর আর্জি, পরীক্ষার জন্য বইটুকু বের করতে দেওয়া হোক।

সংসারের যাবতীয় দায়ভার এখন টানতে হয় নবনীতা দেবীকেই। আগে একটি কাজ করতেন। কিন্তু স্বামীর শরীরের অবস্থা ভাল ছিল না। দুইবার ব্রেন স্ট্রোক হয়েছিল। তৃতীয় স্ট্রোকে মারা যান। তখন থেকেই জীবনে একের পর এক সংগ্রাম শুরু নবনীতা দেবীর। চোখের জল আজ আর থামছে না তাঁর। বলছেন, “আর পারছি না। নিজে ভিতর থেকেই হেরে গিয়েছি। যে অবস্থায় পড়ে রয়েছি, কী বলব নিজেই বুঝতে পারছি না। এখন সবই ভগবান দেখবে।”

 

Next Article