কলকাতা : দীর্ঘদিন ধরে বামেদের দূর্গ হিসেবে পরিচিত ছিল ৯৮ নম্বর ওয়ার্ড। প্রায় তিন দশক বাদে সেখানে প্রথমবার দখল নিল তৃণমূল। আর জয়ী প্রার্থীর নাম ঘোষণা হতেই সেই ওয়ার্ডে বামেদের অফিসে চলে তাণ্ডব। ডিওয়াইএফআই-এর কার্যালয়ে ঢুকে ভাঙচুর চালানোর অভিযোগ ওঠে শাসক দলের কর্মী- সমর্থকদের বিরুদ্ধে। ঘটনায় তুমুল সমালোচনাও হয়। সেই ঘটনার দু দিন পরই কার্যালয় পুনরায় দখল করল বামেরা। আজ, বৃহস্পতিবার কয়েক হাজার মানুষ ওই কার্যালয়ের সামনে জড় হন। দলীয় ব্যানার লাগানো হয় দেওয়ালে। এ দিন মিছিলে নেতৃত্ব দিতে উপস্থিত ছিলেন বাম নেতা বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য, মৃত্যুঞ্জয় চক্রবর্তী।
এ দিন বিকেলে কয়েক হাজার মানুষ মিছিল করে ওই তিন তলা ভবনের দিকে যান। তালা খুলে ভিতরে প্রবেশ করেন কর্মী- সমর্থকরা। অফিসের ভিতরে দেওয়ালে লেখা ছিল ‘টিএমসিপি’। সেই লেখা এ দিন মুছে নতুন রঙ করে দেন তাঁরা। সরিয়ে ফেলা হয় তৃণমূলের পতাকা। ডিওয়াইএফআই-এর ব্যানার লাগানো হয় দেওয়ালে। কার্যালয়ের সামনে বামেদের স্লোগান তোলেন সমর্থকরা।
বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য এ দিন বলেন, ‘যারা দখল করেছিল তারা সভ্য সমাজের রাজনৈতিক কর্মী নয়। বাচ্চা ছেলেদের আমি দোষ দেব না। যারা পিছন থেকে মদত দিয়েছে, তারা সভ্য সমাজের রাজনৈতিক কর্মী নয়।’ তৃণমূলের সব সদস্যই গুণ্ডা নিয়ন্ত্রণের দাবিদার বলে উল্লেখ করেন তিনি। বর্ষীয়ান বাম নেতা বলেন, ‘বাস্তুহারা আন্দোলনের কথা নিশ্চয় ওরা জানে না। সেই বাস্তুহারা সমিতির অফিস ভাঙা, শুধু রাজনৈতিক অপরাধই নয়, সামাজিক অপরাধও।’ তাঁর কথায়, দুর্গা পুজো ছাড়া আর কিছুই করতে পারে না তৃণমূল। সবাইকে তৃণমূলের বিরুদ্ধে জোটবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
কলকাতা পুরসভার ৯৮ নম্বর ওয়ার্ডে এসএফআই ও ডিওয়াইএফআই-এর কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। পুরভোটের ফল প্রকাশের দিনই প্রকাশ্যে এসেছে সেই ভিডিয়ো। ওই ওয়ার্ডের তৃণমূল প্রার্থী অরূপ চক্রবর্তীর জয় ঘোষণা হওয়ার পরেই দেখা যায় এই ছবি। বাস্তহারা সমিতির অফিসও দখল করা হয় বলে অভিযোগ। ঘটনাস্থলে তৃণমূলের বিজয়োৎসব চলাকালীম উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসও।
ওই ওয়ার্ডের সিপিএম প্রার্থী মৃত্যুঞ্জয় চক্রবর্তী জানান, তৃণমূলের জয়লাভের পর ওই অফিসে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। কার্যত দলীয় কার্যালয় দখল করে নেয় তৃণমূল। এলাকায় গিয়ে খতিয়ে দেখা যায়, প্রকাশ্যে আসা ভিডিয়োতে যে বাড়িটি দেখা যাচ্ছে, সেটাই ওই এলাকায় বামেদের কার্যালয়। কার্যালয়ের সামনে ডিজে বাজিয়ে চলে তৃণমূলের বিজয়োৎসব। আর সেখানেই উপস্থিত রয়েছেন জয়ী তৃণমূল প্রার্থী অরূপ চক্রবর্তী ও রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। তবে ঘটনার সময় মন্ত্রী উপস্থিত ছিলেন কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়।