Mamata Banerjee: এক মাসের সময় দিলেন মমতা

Deeksha Bhuiyan | Edited By: শর্মিষ্ঠা চক্রবর্তী

Jun 27, 2024 | 1:30 PM

Mamata Banerjee: আর যেন নতুন করে না বসে, সেটা জেলাশাসককে দেখে নিতে হবে। কোনও নেতা যদি ইন্ধন দেন, তাঁকে গ্রেফতার করে নেবেন সঙ্গে সঙ্গে। সে যে দলেরই হোক। কোনও পুলিশ যদি বলে, তাঁকে পুলিশকেও গ্রেফতার করা হবে। ওপরতলার পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করবে। রাজ্যের পরিচয় নষ্ট হচ্ছে। আমি তো বারণ করি নি। হকারি একটা ব্যবসা। তাঁদের সংসারগুলো চলবে কীভাবে।

Mamata Banerjee: এক মাসের সময় দিলেন মমতা
নবান্ন থেকে সরাসরি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
Image Credit source: TV9 Bangla

Follow Us

কলকাতা: শহর জুড়ে উচ্ছেদের আবহেই ফের বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নবান্নের জেলাশাসক, পুলিশ সুপারদের সঙ্গে বৈঠক। নবান্ন থেকে সেই বৈঠকের সরাসরি সম্প্রসারণ হচ্ছে. দেখুন এক নজরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কী কী বললেন….

KEY HIGHLIHTS

  1. আমরা যেটা বলতে চাই, সেটা হল একটা সিস্টেমের মধ্যে চলতে। আমি একজনকে সিস্টেম বানাতে বলেছি। রাজীব কুমারকে একটি সিস্টেম বানাতে বলেছি। সেটা বানিয়ে আমাকে দেবে। দিঘা, মুকুটমণিপুরে হকার তুলে দেওয়া হয়েছে। আর যেন নতুন করে না বসে, সেটা জেলাশাসককে দেখে নিতে হবে। কোনও নেতা যদি ইন্ধন দেন, তাঁকে গ্রেফতার করে নেবেন সঙ্গে সঙ্গে। সে যে দলেরই হোক। কোনও পুলিশ যদি বলে, তাঁকে পুলিশকেও গ্রেফতার করা হবে। ওপরতলার পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করবে। রাজ্যের পরিচয় নষ্ট হচ্ছে। আমি তো বারণ করি নি। হকারি একটা ব্যবসা। তাঁদের সংসারগুলো চলবে কীভাবে।
  2. কোভিডের সময়েও ৭ হাজার ৬৭৩ জন হকারকে ২ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্য সাথীর আওতায় আনা হয়েছে। কিন্কু রাস্তা ফুটপাতই যদি দখল হয়ে যায়, দুর্ঘটনা বড়ে। যে যাঁর মতো প্লাস্টিক জমা করছে, গোডাউন বানিয়ে দিচ্ছে। হকার কমিটির যাঁরা রয়েছেন, তাঁদের দেখা উচিত ছিল। স্টলের পাশে গোডাউন বানানোর অধিকার নেই। সে যত বড়ই নেতা হোন, কাউকে ছেড়ে কথা বলছি না।
  3.  হকারদের জীবন ও জীবিকা সুরক্ষিত রেখেই যাতে সাধারণ মানুষেরও সুবিধা হয়, সেরকম পদক্ষেপ আগেই করেছি। এই সংক্রান্ত আইনও করা হয়েছে। আইনে হকার নিয়ন্ত্রণের জন্য রাজ্যে ১২৮টি আর্বান লোকাল বডিতে টাউন ভেন্ডিং কমিটি করা হয়েছে। হকারদের নাম রেজিস্ট্রেশন, রেসট্রিক্টেড জোন ঠিক করা হয়েছে, ঠিক করা হকারদের পরিচয়পত্র ইস্যু করা, সবই এই কমিটি দেখে। হোয়াই দে টেকিং টু মাচ টাইম? ইলেকশন করে করে বারোটা বাজছে, কাজের কাছ হচ্ছে না। ১ হাজার ৪৫ টি ন্যাচারাল মার্কেট. ৪৪৮৭টি হেরিটেজ মার্কেট আইডেন্টিফায়েড হয়েছে। হকারদের আইনত বৈধতা দিতে আইডি কার্ড করতে বলেছিলাম।
  4. KMC এলাকায় নাম রেজিস্ট্রেশনের জন্য ৬১ হাজারের বেশিহকার আবেদন করেছিলেন। এর মধ্যে ৫৯ হাজার সিলেক্টেড। ২ হাজার বাদ গিয়েছে। কারণ তাদের চারটে করে ডালা। বাকিদের সুযোগ দিন। দয়া করে হকার নেতারা চাঁদা তুলবেন না, আর পুলিশকেও সেকথা বলছি। পুলিশ আর হকার নেতারা গরিব মানুষগুলোর থেকে চাঁদা তুলবেন না।
  5. ভিডিয়ো সার্ভে করা হচ্ছে, যাঁরা যোগ্য, রেজিস্ট্রেশন পাননি, আরেকবার সার্ভে করে দেখা হবে, তাতের যদি একটা ডালায় রাজি হয়, একটা পরিবারে দুইভাই থাকতে পারে, যদি অন্য নামে। কিন্তু বহিরাগত নয়। তাঁদেরটা রিকনসিডর করব। তবে অন্য একটা জায়গা দেখতে হবে। গড়িয়াহাটে তো হাঁটার জায়গাই নেই। চারপাশে স্ট্ল দেওয়া হয়েছে। প্লাস্টিক দেবেন না। স্টলের পিছনে ফায়ার ফ্রি নীল সাদা স্ক্রিন। হকার বাজার দেখতে সুন্দর করতে হবে। নিউ মার্কেট ঘিঞ্জি। কর্পোরেশনের গায়েই হকার বসে গিয়েছে। কাউন্সিলররা দেখেও দেখছেন না। আমি তো বলছি না তাঁদের সরিয়ে দিতে হবে। আমি বলছি নির্দিষ্ট জোন করা হোক। একটা দিক ফাঁকা থাকবে।
  6. নীল সাদা ফায়ার ফ্রি মেটারিয়ালস দিয়ে স্টল। স্টলগুলোকে নাম্বারিং করা হবে। স্টলের মেটারিয়াল রাখার জায়গার জন্য নির্দিষ্ট একটা বিল্ডিং। চার পাঁচটা ভ্যান দিতে হবে। এইটুকু খরচা করতে পারি, তাতে মহাভারত অশুদ্ধ হবে না। গড়িয়াহাটের আদি ঢাকেশ্বরী বস্ত্রালয়ের ওদিকে, দুটো ফুট একসঙ্গে বন্ধ হয়ে গিয়েছে। একটা সাইডে ব্যবসা চলুক। কাছাকাছি বিল্ডিং ফ্রি থাকলে সেটা খুঁজে বার করতে হবে। কাউকে বেকার করে দেওয়ার অধিকার আমার নেই।
  7.  সব মিউনিসিপ্যালিটি একই নিয়মে চলবে। রাস্তা দখলে কাউন্সিলরদের অনেক দোষ রয়েছে। তাঁরা ভাবছেন, রাস্তা দিয়ে দিচ্ছি, টাকা পেয়ে যাচ্ছি, মাসে চাঁদা পেলাম,  তেমনটা করলে কিন্তু হবে না। ডাল ভাত তরকারি খেয়ে কি হচ্ছে না? তাতে সন্তুষ্ট থাকা যাচ্ছে না? এখন তো বাড়িতে লোকে মিষ্টিও নিয়ে যায় না। পাশে ডায়বেটিস হয়ে যায়। মানুষের বাঁচার জন্য যতটুকু দরকার, ততটুকুই করুন। লোভ করা ভালো নয়। লোভ সংবরণ করুন। এক্ষেত্রে লোকাল নেতা পুলিশ সবচেয়ে বেশি দায়ী। প্রথমে বসাচ্ছেন, তারপর বুলডোজার দিয়ে উচ্ছেদ করতে যাবেন, আমি একদম বরদাস্ত করছি না। প্রথম থেকেই পদক্ষেপ করতে হবে। ডাবগ্রামে দেখেছেন, আমি জেলা প্রেসিডেন্টকে গ্রেফতার করিয়ে দিয়েছি।
  8. সরকারি জমি কিন্তু মিউটেশন করানো। গত সাত বছরে কী কী জমি হস্তান্তর হয়েছে, খোঁজ নেওয়ার নির্দেশ। কোনও একটা দল, পুকুর ভরাট করে তিন তলা বাড়ি করে নিয়েছে। বাড়িটা RSS-এর। তৃণমূলের বাড়ি ভাঙলে, আরএসএসের কেন না? বিক্রমগড়ে তো প্রায় শুনতে পাচ্ছি, এই দখল করছে, এটা কি ছেলের হাতের মোয়া হয়ে গিয়েছে? আমি একা বকবক করব? রাজীব যখন সিপি ছিল, ভিডিয়ো করেছিলাম, এর বাইরে বাড়বে না। সত্যিই ওরা বসতে পারে, তবে সেচ দফতরের ক্যানেলের ওপর নয়। ওদের বুঝিয়ে সরাতে হবে। মারধর করে বুলডোজার দিয়ে নয়। ফাঁকা জায়গায় বসাতে হবে।
  9. অফিস পাড়ায় মা ক্যান্টিন করে দিন। ভেন্ডার আসবে, বিক্রি করবে, চলে যাবে। পরিষ্কার জোন করে দিন। বাকি  লোকেদের যা খাওয়ার ইচ্ছা, তার জন্য দূরে একটা পরিষ্কার জোন করে দিন। পুলিশ, আর্বান ডিপার্টমেন্টের সেক্রেটারি বিগত চার মাস কাজ করেনি বলে, সব ভুলে গেছে। ইলেকশন কমিশনে গেলে মনে করে ইলেকশন কমিশনটাই সব। রাজ্য বলে কিছু নেই। বাবা-মা বলে কিছু নেই।
  10. চিড়িয়াখানার পাশে যাঁরা বসছিল, তাঁরা ফুটপাতটাও দখল করে নিয়েছে। রাস্তায় বসছে। তাতে সমস্যা হয়। ফুট ওভারব্রিজ করা হল। লক্ষ লক্ষ লোক আসে চিড়িয়াখানায়। সবাই যে জেনুইন কীভাবে বলবেন, এই তো দেখলেন. বাংলাদেশের এমপি-কে এনে খুন করে দিয়ে চলে গেল। পুলিশও আমি চেঞ্জ করতে পারছি না, কারণ বছরের প্রতি দিনই প্রায় ইলেকশন। সিস্টেমটাকেই ব্রেক করে দিচ্ছে। সরকারি জমি দখল করে বাড়ি করছে। যখন টেক ওভার করছি, চলে যাচ্ছে কোর্টে। অর্ডার নিয়ে চলে আসছে। কোর্টকে ভাল করে বোঝাতে হবে। আমরা কোর্টকে বোঝাতে ব্যর্থ। মলয় ঘটককে নির্দেশ, একটা বৈঠক করতে হবে, সঙ্গে মেয়র ডেপুটি মেয়র দুজনেই যাবে। বার কাউন্সিলর, বার অ্যাসোলিয়েশনকে নিয়ে  চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, ফিরহাদ হাকিম, আর অরূপ যেতে হবে। দমকলকে সার্ভে করতে হবে।
  11. বাগরি মার্কেটে বারবার আগুন লাগে, অনেক বাড়ি যে কোনও মুহুর্তে ভেঙে পড়তে পারে, অনেক মার্কেট রয়েছে এমন, লোকে বাজার করে গিয়ে মারা যাবে বলে দিলাম, তৎপরতার সঙ্গে ঠিক করতে হবে। আদালতকে বোঝাতে হবে। এক দেড় কোটি টাকা হলেই বাজার ভাল করে হয়ে যায়। আমি একটা ফান্ড তৈরি করতে পারি। আগে প্ল্যান হাতে পেলে।
  12. হকার জোন বিল্ডিং, হকার স্টল, আর বাজার করতে হবে।
  13. অবৈধ পার্কিং জোন। পুলিশ নেতাদের টাকা খাইয়ে অবৈধ পার্কিং জোন তৈরি করেছে। আলিপুরে একটা করে দিয়েছি। কত ছেলেমেয়ে বেকার, তাদের দিয়ে কাজ করান। তাদের ইন্টার্নশিপ দিন। তারাই এসে খবর দেবে, কোথায় জল জমছে, কোথায় আবর্জনা জমছে… সব  খবর এসে দিয়ে যাবে ওরা।
  14. টেন্ডার করা যাবে না, টেন্ডারে টাকা খেয়ে নিচ্ছে। যে করবে একা, সারা বাংলা জুড়ে করবে।
  15. কলকাতা কি এমনিই এত সুন্দর হয়ে গিয়েছে? তখনকার মেয়রকে নিয়ে বৈঠকে বসেছিলাম। এক ছাতার তলায় সব আনতে হবে। হকার জোনের জন্য বাড়ি পাবেন, না পেলে ছোট্ট পুলিশ দিয়ে করে দিন। আর দয়া করে প্ল্যানটা পাঠান।
  16. রাজারহাট, নিউটাউন এমনকি NKDA তেও হাত পড়ে গিয়েছে। যে যাঁর মতো লুঠে নিচ্ছে, যেন লুঠ আমার অধিকার। পুলিশের মধ্যে দেখছি লোভ বেড়ে যাচ্ছে। ভাবছে আমি তো ২ বছর ওসি আছি, যতটা পারি করে নিই। এবার থেকে ACP স্ট্রং করতে হবে। যদি কোনও পুলিশ ইন্ধন দেয়. সরিয়ে দেব। সরকার কিন্তু এটা করতে পারে।
  17. লোকাল মাফিয়ারা, বালি মাফিয়া, জমি মাফিয়া ওরা সব করে খাচ্ছে, আমি কেন বদনামটা নেবো? ওরা ডান হাতে টাকা নিচ্ছে, বাঁ হাতে টাকাটা বিজেপিকে দিচ্ছে। আমার দরকার পড়ে না। আমার দরকার হলে ভিক্ষা করে নেব। আমি একটা টাকাও সরকারের নিই না। এক মাসের সময় দিলাম। সার্ভে করে সব প্ল্যান, রিপোর্ট জমা করবেন। দেরি করা যাবে না।
  18. মুখ্যমন্ত্রী হকার ইউনিয়নের একজন নেতা বললেন, দিদি আমি বললেন, নিউ মার্কেট এলাকায় যতগুলো সমস্যা রয়েছে, তিন মাস সময় দিন ঠিক করে দেবো। এখন ভিডিয়ো করুন, তারপর দেখবেন। মমতা বললেন, ভাই তিন মাস সময় নিও না। আমরা সার্ভে করব। এক মাস সময় দিলাম। তোমরা কোথায় রাখবেন, আমরা ঠিক করে দেব। পুলিশের একটু সাহায্য লাগবে। ডেপুটি মেয়র দেবাশিস স্যারের সঙ্গে বসেছিলাম। মমতা বললেন, ও বসে কিছু করতে পারবে না। ওরা করতে পারল না বলেই তো আমাকে বসতে হল। এক মাস সময় দিলাম। গোডাউন খোঁজার জন্য বাড়ি খোঁজা চলবে।
  19. ৪১ বছর ধরে হকারি করেছি। কিন্তু এখন ভেন্ডিং কমিটিতে আমাদের হকারদেরকে না রেখে, সংগঠন যাঁরা করেছেন, তাঁদেরকে রাখা হয়নি। আপনার নির্দেশ মাথা পেতে নিচ্ছি। মমতা বললেন, ভেন্ডিং কমিটিকে ভুলে যান। আমি এখনই উচ্ছেদের মধ্যে নেই, এক মাসের মধ্যে কাজ করতে হবে।
  20. এক যুবক বললেন, নিউ মার্কেট হকার কমিটিতে যত জন রয়েছেন, সবাই ইউনিয়নের লোক। শক্তি দা আমাদের ইউনিয়নের লোক নন শক্তিদা সিপিএম করে। মমতা বললেন. ভাই প্লিজ। আমি সিপিএম বিজেপি করি না। আমি তোমার কথা শুনব না। সবাইকে নিয়ে চলতে হবে। এই তুমি কথা বলবে না। শক্তি তুমি বসো, চিন্তা করো না।
Next Article