কলকাতা: শিয়ালদহগামী কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস বিপর্যয় নিয়ে রেলকে কাঠগড়ায় দাঁড় করালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দুর্ঘটনাস্থলে রওনা দেওয়ার আগে রেলের পরিষেবা নিয়ে একগুচ্ছ ক্ষোভ উগরে দেন মমতা। রেলের ‘কবচ’ নিয়েও মুখ খোলেন তিনি। মমতার বক্তব্য, কবচ মানে অ্যান্টি কলিশন ডিভাইস। আর সেটা তিনিই তৈরি করে দিয়েছিলেন। বিষয়টা একই। এখন নাম বদলে এসব বলা হচ্ছে। দুর্ঘটনায় মৃতের সংখ্যা নিয়ে রেলের বক্তব্যের প্রেক্ষিতেও প্রশ্ন তুলে দেন মমতা। টেনে আনেন ওড়িশার বালেশ্বরে ট্রেন দুর্ঘটনার প্রসঙ্গ। তাঁর বক্তব্য, বালেশ্বরে এখনও দুর্ঘটনাস্থলে অনেক দেহ পড়ে রয়েছে, যেগুলো শনাক্তই করা সম্ভব হয়নি। সেগুলো সব ‘এক লটে জ্বালিয়ে’ দেওয়া হবে বলেও বিস্ফোরক অভিযোগ করেন মমতা।
মমতার বক্তব্য, দুর্ঘটনার খবর ভারত সরকারে কাছে পৌঁছানোর আগেই স্থানীয় প্রশাসনের তরফ থেকে তৎপরতার সঙ্গে উদ্ধারকার্য শুরু করে দেওয়া হয়েছিল। চিকিৎসা পরিষেবায় গতি আনা থেকে শুরু করে রক্তের ব্যবস্থা-সবই স্থানীয় প্রশাসনের তরফে করা হয়েছে। মৃতের সংখ্যা নিয়ে রেলের বক্তব্যেও প্রশ্ন তোলেন মমতা। রেলের তরফ থেকে বলা হয়েছে, ৯ জনের দেহ উদ্ধার হয়েছে। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ভর্তি রয়েছে একাধিক জন। যদিও PTI সূত্রে খবর, ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এই প্রসঙ্গে মমতা টেনে আনেন বালেশ্বরে দুর্ঘটনায় মৃতের সংখ্যা নিয়ে। তিনি বলেন, “আমি সেখানে গিয়েছিলাম। এখনও মনে হয় ওখানে প্রচুর দেহ পড়ে রয়েছে। শনাক্তকরণ হয়নি। হয়তো এক লটে জ্বালিয়ে দেবে। অথচ যাদের গেল, তাদের গেল।”
রেলের পরিষেবা নিয়ে বিস্তর অভিযোগ তোলেন মমতা। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “অ্যান্টি কলিশন ডিভাইস আমি তৈরি করে দিয়ে এসেছিলাম। বন্দে ভারত বলে যেটা চালাচ্ছে, সেটা দুরন্তরই মতো। দুরন্ত একমাত্র স্পিড আপ হয়েছিল রাজধানীর পরে। সেটাকেই নকল করে করেছে। যতটা না করেছে, তার থেকে বেশি ভাড়া বাড়িয়েছে।” মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিযোগ, “আমি যখন রেলমন্ত্রী ছিলাম, তখন অ্যান্টি কলিশন ডিভাইস করেছিলাম। আমি নিজে মারগাঁওতে গিয়েছিলাম, সেখানে দেখার পর আবিষ্কার করে প্রত্যেক ট্রেনে অ্যান্টি কলিশন ডিভাইস চালু করা হয়েছিল। যদিও চালকও ঘুমিয়ে পড়েন, অ্যালার্ম দেবেন, দুটো ট্রেন কাছাকাছি চলে এলে অ্যালার্ম দেবে। আগে মানুষের রক্ষাকবচ হোক, তারপর কথা। রেলের একটা শ্রী ছিল, আজ কী অবস্থা। এটা কোনও সমালোচনা নয়। ট্রেনের বেডগুলোতে শুতে দেওয়া হয় তাতে নোংরা, বাথরুমও পরিষ্কার করা হয় না, খাবারের মানও অত্যন্ত নিম্ন। রেলের মাধুর্য নষ্ট করে দিয়েছে।”