কলকাতা: রাজ্যে চোখ রাঙাচ্ছে ডেঙ্গি। আক্রান্তের সংখ্যা জুলাইয়ের শেষ সপ্তাহে সাড়ে তিন হাজার ছাড়িয়েছে। রাজ্যে গত এক সপ্তাহের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে পাঁচ জন। বিষয়টি নিয়ে উদ্বিগ্ন স্বাস্থ্য অধিকর্তারা। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বৈঠকেও বসবেন মুখ্যসচিব। তার আগে বিধানসভায় দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বললেন, “ডেঙ্গি বাংলাদেশ থেকে আসছে। কী করব?” এদিন বিধানসভা অধিবেশনে ডেঙ্গির পরিস্থিতি নিয়ে কথার সময়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “ডেঙ্গি বাংলাদেশ থেকে আসছে। যাঁদের ধরা পড়েছে, সব বাংলাদেশ থেকে এসেছেন। প্রতিবেশী রাজ্য। কী করব?”
প্রত্যেক বছরই বর্ষার সময়ে ডেঙ্গির প্রকোপ বাড়ে। এবার ডেঙ্গির দোসর ম্যালেরিয়াও। ২৫ জুলাই পর্যন্ত চলতি মাসেই ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা ৫। আক্রান্তের সংখ্যা জুলাইয়ের শেষ সপ্তাহে সাড়ে তিন হাজার ছাড়িয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে বৃহস্পতিবারই হবে অ্যাডভাইজ়রি কমিটির বৈঠক হচ্ছে। কলকাতা-সন্নিহিত এলাকাগুলিতে লাফিয়ে বাড়ছে ডেঙ্গির সংক্রান্ত। পরিসংখ্যান বলছে, গড়ে মোট আক্রান্তের ৬৫ শতাংশই গ্রাম বাংলার। কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম পরিস্থিতি মোকাবিলা ও তদারকি করতে স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে বৈঠক করেন।
ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষ আগেই বলেছিলেন, “প্রতিবেশী দেশ, বিশেষ করে ঢাকায় ডেঙ্গির পরিস্থিতি আশঙ্কাজনক।” অবিলম্বে সমস্ত ইমিগ্রেশন পয়েন্টে রক্ত পরীক্ষা কেন্দ্র স্থাপন করার ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য বিভাগকে চিঠি দেবেন বলেও জানিয়েছিলেন তিনি। এদিন বিধানসভায় সে প্রসঙ্গই উত্থাপন করলেন মুখ্যমন্ত্রী। ইমিগ্রেশনের সময়েই রক্ত পরীক্ষা করানো হবে বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশে ডেঙ্গির পরিস্থিতি উদ্বেগজনক। সেক্ষেত্রে বাংলাদেশ থেকে আসা যাত্রীরা ডেঙ্গির বাহক হতে পারেন বলে স্বাস্থ্য কর্তাদের একাংশ মনে করছেন। ‘ট্রাভল হিস্ট্রি’ খতিয়ে দেখলে দেখা যাবে রানাঘাট-১, রানাঘাট-২, হরিণঘাটা, কৃষ্ণনগর-১, আমডাঙা, বসিরহাটে ডেঙ্গি আক্রান্তের তালিকায় শীর্ষে। সেক্ষেত্রে সবই মোটামুটি সীমান্তবর্তী এলাকা। সেক্ষেত্রে রাজ্যে ডেঙ্গির পরিস্থিতির দায় কিছুটা হলেও বাংলাদেশের ঘাড়ে ঠেললেন মুখ্যমন্ত্রী।
যদিও ডেঙ্গি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর এই বিবৃতিকে কটাক্ষ করেছেন রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে তিনি বলেন, “মশা মারার জন্য একটা টিম নিয়ে যান আরাবুল ইসলাম, শওকত মোল্লা, শাহাজান শেখ, জাহাঙ্গির শেখকে নিয়ে যান। ওঁরা সবাই বর্ডার বিশেষজ্ঞ। রোহিঙ্গাদের পারাপার করাতে পারেন ওঁরা। তাই ওঁদের নিয়ে যান। উদয়ন গুহকেও নিয়ে যেতে পারেন। চার্টার্ড ফ্লাইটে নিয়ে যান।”