কলকাতা: ক্ষমতায় আসার পরই দিঘার সৌন্দর্যায়নে মন দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। ইয়াস (Yaas)-এর দাপটে তছনছ হয়ে গিয়েছে সেই সমুদ্র সৈকত। অনেক কিছুই ভেঙে গিয়েছে। সাইক্লোনের পর সেই সৌন্দর্যাায়নের কাজ নিয়েই সরব হলেন মুখ্যমন্ত্রী। ‘পেভার ব্লক’ কী ভাবে খুলে গেল, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘যারা করেছে তাদের দোষ, তদন্ত হওয়া উচিৎ’। ‘যারা করেছে তাদের দোষ, তদন্ত হওয়া উচিৎ’। আর এই অভিযোগ যে কার্যত অধিকারী পরিবারের দিকে যাচ্ছে, তেমনটাই মত ওয়াকিবহাল মহলের। এই দিঘা উন্নয়ন পর্ষদের দায়িত্বে ছিলেন শিশির অধিকারী। এ ছাড়া, মমতা বারবার অভিযোগ করেছেন তাঁকে পূর্ব মেদিনীপুরে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। তাই মমতা তদন্তের কথা বলে আরও একবার অভিযোগ শানালেন বলেই মনে করা হচ্ছে। অন্য দিকে, ১২ তারিখে ফের আসছে ভরা কোটাল। ইয়াসের বিপদ কেটে যেতেই ফের রাজ্যের আধিকারিকদের সেই বিষয়ে সতর্ক করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
আমফানে পড়ে যাওয়া গাছ কোথায় গেল? তিনদিনের মধ্যে রিপোর্ট তলব
ইয়াসের আগে গত বছর বাংলায় আঘাত হেনেছিল আমফান। সেই ঝড়ে বহু গাছ পড়ে গিয়েছিল। সেই সব কাজ কোথায় গেল, তা নিয়ে এ বার প্রশ্ন তুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নবান্ন থেকে তিনি বলেন, ‘অনেক গাছ কাটা হয়েছিল, সে গুলো কোথায় গেল? বলেছিলাম গাছ ফেলে নদী ভাঙন আটকানো যেতে পারে।’ মমতার অভিযোগ, সেই গাছ কখনও বন দফতর তুলে নিয়ে যায়, কখনও পুরসভা নিয়ে যায়, কণও সেচ দফতর নিয়ে যায়। এর কোনও হিসেব নেই। তিনদিনের মধ্যে সেই সংক্রান্ত রিপোর্ট চাইলেন মমতা। তিনি বলেন, ‘আমফানে পড়ে যাওয়া গাছগুলো কোথায় গেল? ব্যবহার করা হয়েছে কিনা, তিন দিনের মধ্যে সেই রিপোর্ট দিতে হবে।’
দিঘায় কী পদক্ষেপ? ছবি এঁকে বোঝালেন মমতা:
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘দিঘায় সৌন্দর্যায়নের যে কাজ হয়েছিল, তা নষ্ট হয়ে গিয়েছে। সেচ দফতরের একটা ব্রিজের কাজ ৪-৫ বছর ধরে পড়ে আছে। চেয়ারগুলো পর্যন্ত সমুদ্রে ভেসে গিয়েছে। পাথর পুরোপুরি ভাঙেনি, সে গুলো আরেকটু মজবুত করতে হবে। পাথরের চেয়ার বানাতে হবে, যাতে উড়ে না যায়। দিঘার বোল্ডারগুলো নেই। বিশ্ব বাংলার দোকান ছিল, সেটাও উড়ে গিয়েছে।’ পেভার ব্লক ঠিক মতো খোদাই করে না বসানোয় ভেঙে গিয়েছে বলে দবি করেছেন মমতা। যদিও তিনি বলেন, ‘ইঞ্জিনিয়াররা দেখলে আরও ভালোভাবে বলতে পারবে।’
৬ মাস কবে শেষ হবে?
সেচ দফতরের ওপর আরও একবার ক্ষোভ উগরে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। দিঘায় সেচ দফতরের একটি ব্রিজ তৈরি করার কথা ছিল। মমতার দাবি তিনি যখনই জিজ্ঞেস করতেন, তখনই তাঁকে বলা হত, ‘আর ৬ মাস।’ একসময় রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের দায়িত্বে থাকা সেচ দফতরের দিকে প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়ে তিনি বলেন, ‘৬ মাস কবে শেষ হবে?’ দ্রুত ওই সেতুর কাজ শেষ করার বার্তা দিয়েছেন তিনি।
দিঘা উন্নয়ন পর্ষদের দায়িত্বে মুখ্যসচিব:
ইয়াসের দিঘা উন্নয়ন পর্ষদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল তৎকালীন মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে। কিন্তু তারপর তিনি পদত্যাগ করায় আপাতত দিঘা উন্নয়ন পর্ষদের দায়িত্ব বর্তমান মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদীকেই দিয়েছেন বলে জানালেন মমতা। দিঘা উন্নয়ন পর্ষদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘উন্নয়ন পর্ষদ থেকে হকারদের দোকানগুলো করে দিতে হবে। গরিব লোক ওখানে ব্যবসা করে খায়। দিঘি বাড়িতে কারা কাজ করছে সেগুলোও দেখতে হবে দিঘা উন্নয়ন পর্ষদকে।’