কলকাতা: তিস্তা, আত্রেয়ী নিয়ে উত্তরবঙ্গের রাজনীতির জল মাপলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার নবান্ন সভাঘরে এক বৈঠক থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বারবার বোঝাতে চাইলেন, উত্তরবঙ্গের মানুষ বিজেপিকে ঢেলে ভোট দিলেও, তৃণমূল সেখানকার মানুষের স্বার্থে লড়াই চালিয়ে যাবে। এদিন বিভিন্ন পুরসভার আধিকারিক, চেয়ারম্যান থেকে মন্ত্রী-নেতা-আমলাদের নিয়ে রিভিউ মিটিং করেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানেই ভারত-বাংলাদেশ জলবণ্টন নিয়ে বিজেপিকে একহাত নেন তিনি। তিস্তার পাশাপাশি দক্ষিণ দিনাজপুরের প্রাণের নদী আত্রেয়ী নিয়েও সরব হন।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের কথায়, “বালুরঘাটের মানুষ ঢেলে ভোট দিয়েছে বিজেপিকে। এটা তাঁদের অধিকার। কিন্তু তাঁরা তো জানেন, যে এই জল যে আসত বালুরঘাটের মানুষ পেতেন, দক্ষিণ দিনাজপুরের মানুষ পেতেন। ওখানে বাংলাদেশ চিনকে দিয়ে একটা ড্যাম করে টোটালটা বন্ধ করে দিয়েছে। আমি বারবার চিঠি দিয়ে প্রতিবাদ করেছি। আমাদের জল এপারে আসা বন্ধ করে দিয়েছে। তাও কেন্দ্র কোনও কিছু করেনি।”
দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার প্রাণধারা আত্রেয়ী নদী। তবে এই আত্রেয়ী বয়ে যায় ওপার বাংলারও বেশ কিছু অংশ দিয়ে। ফলে বাংলা-বাংলাদেশের যে যে জিনিস নিয়ে দাবির লড়াই, আত্রেয়ীও সে তালিকায় রয়েছে। মমতার অভিযোগ, ওপার বাংলার মোহনপুরে আত্রেয়ীতে বাধ দিয়েছে হাসিনা সরকার। সে কারণে এপারের আত্রেয়ীর বুক শুখা। কিন্তু বর্ষা এলে লকগেট খুলে দেয়। তাতে আবার প্লাবিত হয়ে যায় এপার বাংলার বিস্তীর্ণ এলাকা। এই আত্রেয়ী নিয়ে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার মানুষের ক্ষোভ বহুদিনের। কৃষির পাশাপাশি মৎস্যজীবীদের জন্যও এই নদীর গুরুত্ব অসীম। তবে বিষয়টি যেহেতু আন্তর্জাতিক, তাই সমাধানও সেই পর্যায়ে গিয়েই সম্ভব বলে দাবি শাসকশিবিরের।
এদিন মমতা তিস্তার জলবণ্টন নিয়েও উষ্মা প্রকাশ করেন। মমতা বলেন, “আমরা বাংলাদেশকে যথেষ্ট ভালবাসি। তাদের জন্য ছিটমহল করে দিয়েছি। ইন্দো-বাংলাদেশ রেল সার্ভিস করে দিয়েছি। রেলমন্ত্রী ছিলাম যখন, বনগাঁ পেট্রাপোল, রানাঘাট-গেদে আমার করা। বাস সার্ভিসও করে দিয়েছি।” কিন্তু তিস্তায় ১৪টা হাইড্রোইলেট্রিক পাওয়ার হয়েছে, ফরাক্কা নিয়ে আবার চুক্তি রিনিউ হচ্ছে, তা নিয়ে মমতাকে জানানো হয়নি কেন্দ্রের তরফে বলে জানান তিনি। মমতার কথায়, “জলের আরেক নাম জীবন। ওরা জানে না উত্তরবঙ্গের একটা মানুষ আগামিদিন পানীয় জল পাবে না। জল নেই তিস্তায়।” উত্তরবঙ্গে জিতেই বঞ্চনা শুরু বলে দাবি মমতার।