কলকাতা: ৯ তারিখ শেষ হচ্ছে ‘ডেডলাইন’। তারমধ্যে কেন্দ্র সরকার বাংলার পাটশিল্পের দুরাবস্থা নিয়ে ব্যবস্থা না নিলে আগামীতে আরও বড় আন্দোলনের হুশিয়ারি দিয়ে রেখেছেন ব্যারাকপুরের বিজেপি সাংসদ(BJP MP from Barrackpore) অর্জুন সিং। প্রয়োজনে যোগ দেবেন মমতার আন্দোলনে। খোদ দলেরই সাংসদের ‘বিদ্রোহী’ মেজাজে গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই চাপে রয়েছে পদ্ম শিবির। আচমকা কেন এই রুদ্র রূপ? তা নিয়েই টিভি-৯ বাংলার বিশেষ সাক্ষাৎকারে একাধিক বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন অর্জুন সিং। অর্জুনের দাবি ‘ললিপপের রাজনীতিতে’ এক বিন্দুও বিশ্বাস নেই তাঁর। লড়াইয়ের ময়দানে কোনও ‘সমঝোতা’ তিনি করবেন না।
প্রসঙ্গত, বাংলায় আইন-শৃঙ্খলার অবনতি নিয়ে বারবারই তৃণমূল সরকারকে কাঠগড়ায় তুলেছে বিরোধীরা। দাবি উঠেছে ৩৫৫ বা ৩৫৬ ধারা জারির। বিজেপির এই দাবিও কী তবে ললিপপের রাজনীতির ফসল? প্রশ্নের উত্তরে অর্জুন বলেন, “আমরা য়ারা বিজেপিতে আছি তারা তো এ দাবি তুলতেই পারি। দাবি তোলার ক্ষেত্রে তো কোনও অসুবিধা নেই”। দাবি তো উঠল, কিন্তু বাংলার রাজনীতির ময়দানে এটা কী সম্ভবপর ছিল? অর্জুনের মতে, “একদমই তা নিয়ে আমার কোনও আশা ছিল না। কিন্তু, রাজনীতি করছি, বলতেই হবে আমাকে। আপনার চ্যানেলেও বলতে হবে”। একসময় তৃণমূল ছেড়ে যোগ দিয়েছিলেন বিজেপিতে। একাধিক ইস্যুতে আওয়াজ তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যের বিরুদ্ধে। কিন্তু, এবার মমতা প্রসঙ্গে সুর নরম করতে শুরু করেছেন অর্জুন। তাহলে কী মোদীর নেতৃত্বের থেকে মমতার নেতৃত্বে নতুন করে আস্থা ফিরে পাচ্ছেন অর্জুন? প্রশ্নের উত্তরে অর্জুনের সাবধানী জবাব, “যাঁরা জননেতা হয় তাঁদেরকেই লড়াইয়ে প্রথমসারিতে থাকতে হয়। সংসদীয় রাজনীতির লড়াইয়ে উনি তো নিশ্চয় এগিয়ে রয়েছেন। তাই তো আবার ক্ষমতায় এসেছেন। যদি উনি পিছিয়ে থাকতেন তাহলে তো ক্ষমতায় আসতে পারতেন না। কিন্তু আমাদের দলে লড়াইয়ের জন্য কোনও একক মুখ নেই। পশ্চিমবঙ্গে আমাদের যে জায়গা তৈরি করার দরকার ছিল তা করতে পারিনি। তাই আমরা হেরেছি।”
তবে কী বিজেপির অন্দরে কোনও জননেতা নেই? এই প্রশ্নেও সরাসরি শুভেন্দুর নাম নিতে দেখা যায় অর্জুনকে। বিজেপির অন্দরে একমাত্র শুভেন্দুকেই জননেতা মানতে রাজি তিনি। তাঁর দাবি, “শুভেন্দু ছাড়া যাঁরা আছেন, তাঁরা যদি নিজেদের জননেতা বলে ভেবে থাকেন তাহলে তা ঠিক নয়”। এই শুভেন্দুর সঙ্গেই শেষ বিধানসভা নির্বাচনে জোরদার লড়াই দেখতে পাওয়া গিয়েছিল নন্দীগ্রামে। তবে কী জননেতা হিসাবে শুভেন্দুর থেকে মমতার গ্রহণযোগ্যতা অর্জুনের কাছে বেশি? প্রশ্ন শুনে খানিক ‘অস্বস্তিতে’ পড়লেও ব্যারাকপুরের সাংসদের মত, নিজের যোগ্যতাতেই মমতা আজ মুখ্যমন্ত্রীর আসনে। তবে, এখনও লড়াই চলছে। লড়াই করে শুভেন্দুকে ওই জায়গা তৈরি করতে হবে।