Metro Rail: রেলের টাকা পেয়েও পাইপ সরাচ্ছে না পুরসভা, ফের শহরে মেট্রোর কাজে বাধা!
Metro Rail: এখনও পর্যন্ত সেই পাইপলাইন এবং জল প্রকল্পের কাঠামোকে সরানোর ব্যাপারে কোনও রকম তৎপরতা কলকাতা পুরসভার তরফে দেখা যায়নি।

কলকাতা: জোকা-ধর্মতলা মেট্রো করিডরের কাজে গতি এসেছে সম্প্রতি। জমি জটিলতা কাটিয়ে খিদিরপুর সংলগ্ন অংশ থেকে টানেল বোরিং মেশিন মাটির তলায় প্রবেশ করেছে। কিন্তু দেখা দিয়েছে এক নয়া সমস্যা। ডায়মন্ড হারবার রোডের তলায় থাকা একাধিক জলের পাইপ লাইন নিয়ে জটিলতা বেড়েছে। ডায়মন্ড হারবার রোডে মোমিনপুর থেকে খিদিরপুর পর্যন্ত মেট্রো নির্মাণের কাজ চলছে দীর্ঘদিন ধরেই। এই কাজের গতির ক্ষেত্রে অন্যতম অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে এই জলের পাইপ লাইন।
এই পাইপ লাইনগুলি স্থানান্তর করার জন্য কলকাতা পুরসভার সঙ্গে জোকা-ধর্মতলা মেট্রো প্রকল্প নির্মাণকারী সংস্থা আরভিএনএল একাধিকবার বৈঠক করেছে। এমনকী, পাইপ লাইন স্থানান্তরের কাজের জন্য কলকাতা পুরসভাকে টাকা দেওয়া হয়েছে বলে আরভিএনএল সূত্রে খবর। কিন্তু এখনও পর্যন্ত সেই পাইপলাইন এবং জল প্রকল্পের কাঠামোকে সরানোর ব্যাপারে কোনও রকম তৎপরতা কলকাতা পুরসভার তরফে দেখা যায়নি।
কলকাতা পুরসভার জল সরবরাহ বিভাগ সূত্রে খবর, ১২০০ মিলিমিটার থেকে শুরু করে ১০০ মিলিমিটার পর্যন্ত ব্যসের পাইপলাইন রয়েছে। মোমিনপুর, একবালপুর, খিদিরপুর, আলিপুর বডিগার্ড লাইন সহ একাধিক অংশের জল সরবরাহ হয় এই পাইপলাইনের মাধ্যমে।
কলকাতা পুরসভা সূত্রে খবর, এই পাইপলাইন এবং আনুষঙ্গিক কাঠামো স্থানান্তরের খরচ প্রায় ৪১ কোটি টাকা। তাই স্থানান্তর নিয়েই এখন চ্যালেঞ্জের মুখে কলকাতা পুরসভা।
পুরসভার তথ্য বলছে, স্থানান্তর করার যে পরিকল্পনা করা হয়েছে, তাতে দেখা যাচ্ছে
১) সার্কুলার গার্ডেনরিচ রোড থেকে আলিপুর বডিগার্ড লাইন কমপ্লেক্স পর্যন্ত ৯০০ মিলিমিটার ব্যাসের পাইপ স্থানান্তর করতে হবে, যার আনুমানিক খরচ ধরা হয়েছে ৪ কোটি টাকা।
২) ময়ূরভঞ্জ রোড থেকে ন্যাশনাল লাইব্রেরি অ্যাভিনিউ পর্যন্ত ১২০০ মিলিমিটার ব্যাসের এমএস পাইপলাইন স্থানান্তর করা হবে, যার আনুমানিক খরচ ৩.৫ কোটি টাকা।
৩) মোমিনপুর থেকে গোপাল ঘোষ রোড পর্যন্ত ৩০০ মিলিমিটার ব্যাসের পাইপলাইন স্থানান্তর করতে হবে। যার জন্য আনুমানিক খরচ ধরা হয়েছে ১.৫ কোটি টাকা।
৪) এছাড়াও রয়েছে ৭৫০ মিমি এবং ৫০০ মিমি ব্যাসের পাইপলাইন সহ আনুষঙ্গিক কাঠামো স্থানান্তরের কাজ, যার জন্য আনুমানিক খরচ আরও কয়েক কোটি টাকা ধরা হয়েছে।
সব মিলিয়ে প্রায় ৪১ কোটি টাকার প্রকল্পের কাজ এই স্থানান্তরের জন্য করতে হবে বলে পুরসভা সূত্রে খবর। রেল বিকাশ নিগম লিমিটেডের তরফে এই খরচের প্রায় পুরোটাই বহন করা হচ্ছে। আরভিএনএল-এর তরফে কলকাতা পুরসভাকে বারবার চিঠি দেওয়া হয়েছে পাইপলাইনগুলি স্থানান্তরের জন্য।
এমনকী মেট্রো প্রকল্পের পূর্ব দিকে জমিও খোঁজা হয়েছে। কিন্তু কলকাতা পুরসভার তরফে কোনও রকম সক্রিয়তা দেখা যাচ্ছে না বলেই মেট্রো আধিকারিকদের নিজস্ব বৈঠকে উঠে এসেছে। কলকাতা পুরসভার জল সরবরাহ বিভাগের আধিকারিকদের কথায়, পাইপলাইন স্থানান্তর এত সহজ কাজ নয়।
প্রাথমিক পরিকল্পনা অনুযায়ী, প্রথমে অস্থায়ী পাইপলাইনগুলি বসিয়ে এখান থেকে জল সরবরাহ করা হবে, তারপর স্থায়ী পাইপলাইনগুলি স্থানান্তর করা হবে। মোট ৩৩টি প্রকল্পের পৃথক পৃথকভাবে কাজ করা সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কিন্তু কবে? সেই উত্তর নেই পুরসভার কাছে।
আরভিএনএল সূত্রে খবর, মোমিনপুর থেকে ন্যাশনাল লাইব্রেরি অ্যাভিনিউ পর্যন্ত মাটির উপর থেকে মেট্রোর করিডর তৈরি হচ্ছে। ন্যাশনাল লাইব্রেরি অ্যাভিনিউ থেকে খিদিরপুর হয়ে পার্ক স্ট্রিটের দিকে যে অংশ চলে যাচ্ছে সেটির জন্য মাটির তলায় করিডর তৈরি হচ্ছে। এই মাটির তলায় কাজ করতে গিয়েই পাইপ লাইনে জটিলতার মুখে পড়ছে মেট্রো প্রকল্প। এই জটিলতা কাটিয়ে মেট্রো প্রকল্পের কাজ মসৃণভাবে এগিয়ে নিয়ে যাওয়াই এখন আরভিএনএল এবং কলকাতা পুরসভার কাছে চ্যালেঞ্জ।
