‘তোতাপাখি খাঁচায় থাকা খারাপ, উড়ে গিয়ে ক্ষতি করা আরও খারাপ’, সিবিআই-কে খোঁচা সিঙ্ঘভির

Jun 08, 2021 | 10:36 PM

আদালতে ফিরহাদ হাকিমের হলফনামা পড়ে প্রশ্ন তুললেন বিচারপতিরা।

তোতাপাখি খাঁচায় থাকা খারাপ, উড়ে গিয়ে ক্ষতি করা আরও খারাপ, সিবিআই-কে খোঁচা সিঙ্ঘভির
অলংকরণ: অভীক দেবনাথ

Follow Us

কলকাতা: সিবিআই-কে এক সময় ‘খাঁচার তোতাপাখি’ বলে উল্লেখ করেছিল সুপ্রিম কোর্ট। আর নারদ মামলার শুনানিতেও এ বার সেই কথা তুলেই খোঁচা দিলেন অভিযুক্তের পক্ষের আইনজীবী অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি। অন্য দিকে, ফিরহাদ হাকিমের হলফনামা পড়ে শোনানো হয় মঙ্গলবার। সেখানে গ্রেফতার হওয়ার দিন আদালতের বাইরের পরিস্থিতির উল্লেখ আছে। সে হলফনামা দেখে বিচারপরিদের বক্তব্য, ‘আপনি কী ভাবে জানলেন, বাইরে কী হচ্ছে।

ববি হাকিমের হলফনামা:

এ দিন, ববি হাকিমের হলফনামা দেন মনু সিঙ্ঘভি। সিবিআই-এর অভিযোগ খারিজ করা হয় তাতে। বলা হয়, গ্রেফতারের সময় প্রচুর মানুষ আসে। নিজে গাড়ির সামনে থেকে হাতজোড় করে সবাইকে ফিরে যেতে বলেন ববি হাকিম। ২০১৭-র এফআইআর- এর পর একবারও তদন্তে অসহযোগিতা করা হয়নি বলে উল্লেখ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, ‘সিবিআই দফতরের সামনে সিসিটিভি ফুটেজ সামনে আনা হোক। এজলাসেও আদৌ মন্ত্রীরা যাননি। আইনমন্ত্রী গিয়েছিলেন শুধু পরামর্শ দিতে।

ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দল তখন বলেন, ‘অভিযুক্ত কী ভাবে জানলেন কারা কোথায় ছিলেন? এই হলফনামায় কোথায় লেখা? তিনি এই তথ্য কোথা থেকে পেলেন? জবাবে সিঙ্ঘভি বলেন, ববি হাকিমের আত্মীয়রা গিয়েছিলেন। সেখান থেকেই জানতে পারেন। মুখ্যমন্ত্রীও অভিযুক্তদের আত্মীয়দের সঙ্গেই বসেছিলেন। আইনজীবী আরও বলেন, ‘সিবিআই নিজে সশরীরে গিয়ে চার্জশিট দিল, অথচ নিজেরাই আবার ভার্চুয়াল শুনানির আর্জি জানাল। প্রভাবশালী মানেই প্রমাণ নষ্ট করা হচ্ছে এমন কোনও মানেই নেই।’ তাঁর কথায়, ‘তোতাপাখি খাঁচায় বন্দি হওয়া খারাপ, তবে আরও খারাপ যদি খাঁচা থেকে বেরিয়ে ঝড়ের মতো উড়ে প্রত্যেক বাড়িতে গিয়ে ক্ষতি করে।’

‘সংবিধানের সব সংস্থাকে অগ্রাহ্য করে গ্রেফতার’

সিঙ্ঘভি বলেন, ‘রাজ্যপালের কাছে গিয়ে অনুমতি নিল, অথচ হাজার পদক্ষেপের মধ্যে বিধান সভার স্পিকারের কাছে গেলনা! মন্ত্রীদের কাছেও সিবিআই যায়নি। সংবিধানের সব সংস্থাকে অগ্রাহ্য করেই কাজ হয়ে গেল।’ বিচারপতি ইন্দ্রপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায় ও সৌমেন মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘এখন এই কোর্ট এই আলোচনা শুনবে না। কোনও সিদ্ধান্ত নেবে না। তাই অন্য পয়েন্ট বলুন।’

সিবিআই প্রজাপতির মতো উড়ছে:

সিঙ্ঘভির কথায়, ৪০৭( ট্রান্সফার)- এর কথা শুধু মেল করে বলেছে সিবিআই। কখনও ৪০৭, কখনও ২২৬ ( হাইকোর্টের এক্তিয়ার), কখনও ৪৮২ বলছে সিবিআই। সিবিআই।যেন প্রজাপতির মতো উড়ছে। আর মৌমাছির মতো হুল ফোটাচ্ছে।

নারদ মামলা:

গত ১৭ মে নারদ মামলায় অভিযুক্ত চার হেভিওয়েট নেতা সুব্রত মুখোপাধ্যায়, ফিরহাদ হাকিম, মদন মিত্র ও শোভন চট্টোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করা হয়। ওই দিন নিম্ন আদালত তাঁদের জামিন দেয়। এরপর সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে যায় সিবিআই। পরে হাইকোর্টেও ওই চার নেতার অন্তবর্তী জামিন মিলেছে। তবে, মামলা অন্যত্র সরানোর আবেদনের শুনানি চলছে হাইকোর্টে। সিবিআইয়ের হয়ে সওয়াল করছেন সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা। অভিযুক্তদের হয়ে লড়ছেন কংগ্রেস সাংসদ তথা আইনজীবী অভিষেক মনু সিংভি।

Next Article