‘বিচার ব্যবস্থার ওপর আস্থা নেই? কেন কোর্টে গেলেন আইনমন্ত্রী’, প্রশ্ন বিচারপতির

Jun 07, 2021 | 9:20 PM

আইন ব্যবস্থার ওপর আস্থা না থাকা যাওয়ার কারণ নয়। উল্লেখ করলেন সিঙ্ঘভি।

বিচার ব্যবস্থার ওপর আস্থা নেই? কেন কোর্টে গেলেন আইনমন্ত্রী, প্রশ্ন বিচারপতির
অলংকরণ: অভীক দেবনাথ

Follow Us

কলকাতা: নিম্ন আদালতে জামিনের দিন কেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও আইনমন্ত্রী মলয় ঘটক সিআইডি অফিসে যান, সেই বিষয়ে প্রশ্ন উঠেছে আগেও। এ বার ফের সওয়াল-জবাব চলাকালীন আইনমন্ত্রীর উপস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন তুললেন বিচারপতি। সোমবার, নারদ মামলার শুনানিতে সেই প্রশ্ন ওঠে কলকাতা হাইকোর্টে। এতে কী প্রভাব পড়তে পারে, সেই প্রশ্নও উঠেছে আদালতে। সিবিআই-এর সওয়াল শেষ হয়েছে ইতিমধ্যেই। আপাতত এই মামলায় অভিযুক্তদের পক্ষে সওয়াল করছেন আইনজীবী অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি। মঙ্গলবার ফের এই মামলার শুনানি রয়েছে।

‘আইনমন্ত্রীর কি বিচারব্যবস্থার উপরে বিশ্বাস নেই?’

বিচারপতি ইন্দ্র প্রসন্ন মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘ধরা যাক কোনও মামলাকারী দেখল যে বিরোধী পক্ষ বিচারপতির বাড়ি গিয়েছেন। সে ক্ষেত্রে তার মনে ধারণা হতেই পারে তিনি ঘুষ দিতে গিয়েছেন। সিবিআই বিচারপতির নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেনি। মানুষের ধারণা নিয়ে বলেছে।’

সিঙ্ঘভির দাবি, সাধারণ মানুষের ধারণার কোনও কারণ হতে পারে এমন কোনও জাজমেন্ট দেখাতে পারবে না সিবিআই। ভারপ্রাপ্ত বিচারপতি রাজেশ বিন্দল বলেন, ‘আইনমন্ত্রীর কি বিচারব্যবস্থার ওপর বিশ্বাস নেই। তিনি কেন গিয়েছিলেন কোর্টে?’  বিচারপতি ট্যান্ডন বলেন, ‘যে সব মন্ত্রীরা পাঁচ দিন আগে শপথ নিয়েছিলেন তাঁরা যদি গিয়ে বিরোধিতা করেন জনমানসে কি তার প্রভাব পড়বে না? বিক্ষোভের প্রয়োজনীয়তা কোথায় ছিল?’

সিঙ্ঘভির জবাব, ‘মুখ্যমন্ত্রী বা বাকি মন্ত্রীরা আইনে আস্থা নেই বলে বিক্ষোভ দেখান নি। বিক্ষোভ দেখানো হয়েছে সিবিআই-এর বিরোধিতা করে।

‘লোপাট করার জন্য আর কি তথ্য প্রমাণ বাকি আছে?’

আদালতের তরফে বলা হয়, জামিনের আবেদন বিবেচনা করার ক্ষেত্রে ৬০০ বছরের পুরোনো একটা পদ্ধতি আছে। যেখানে মূলত ৩ টি বিষয়ের কথা বিবেচনা করেন বিচারক বা বিচারপতিরা। ১) পালিয়ে যাওয়ার সম্ভবনা , ২) অসহযোগিতা,  তথ্য প্রমাণ লোপাট।

সিঙ্ঘভি বলেন, ‘অভিযুক্তদের মধ্যে একজন ২০১১ সাল থেকে মন্ত্রী এবং ৫০ বছর ধরে বিধায়ক। ঘটনা ঘটার এতদিন পর লোপাট করার জন্য আর কী তথ্য প্রমাণ বাকি আছে? এতদিন পর আর অসহযোগিতা না করার প্রশ্ন আসছে কোথা থেকে? সমাজের এত গভীরে যাদের শিকড় তাদের পালিয়ে যাওয়ার প্রশ্ন আসছে কোথা থেকে?’ তিনি
সুপ্রিম কোর্টের চিদাম্বরমের জামিন মামলার উল্লেখ করেন।

সিঙ্ঘভি আরও জানান, ‘কয়েক বছর আগে এই হেভিওয়েটদের কণ্ঠস্বর নমুনা দেওয়ার জন্য ডেকে পাঠানো হয়েছিল। তারা সহযোগিতা করেছিলেন। আইন অনুযায়ী তাদের ততক্ষণ গ্রেফতার করা যাবে না যতক্ষণ না পর্যন্ত তদন্তকারী আধিকারিক উপযুক্ত কারণ দেখাচ্ছেন।

নারদ মামলা:

গত ১৭ মে নারদ মামলায় অভিযুক্ত চার হেভিওয়েট নেতা সুব্রত মুখোপাধ্যায়, ফিরহাদ হাকিম, মদন মিত্র ও শোভন চট্টোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করা হয়। ওই দিন নিম্ন আদালত তাঁদের জামিন দেয়। এরপর সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে যায় সিবিআই। পরে হাইকোর্টেও ওই চার নেতার অন্তবর্তী জামিন মিলেছে। তবে, মামলা অন্যত্র সরানোর আবেদনের শুনানি চলছে হাইকোর্টে। সিবিআইয়ের হয়ে সওয়াল করছেন সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা। অভিযুক্তদের হয়ে লড়ছেন কংগ্রেস সাংসদ তথা আইনজীবী অভিষেক মনু সিংভি।

Next Article