কলকাতা: গার্ডেনরিচের ঘটনা তো একটা অধ্যায়ের সূচনা করেছে। কিন্তু সেই অধ্যায়ের প্রতিটা পর্বে এখন যোগ হচ্ছে নিত্য নতুন নাম। এবার নতুন নগরী নিউটাউনে। কলকাতায় তথ্য প্রযুক্তি তালুকে আসার পথে নিউটাউনের রাস্তার দু’ধারে পরপর আবাসন। চোখ ধাঁধিয়ে যাওয়ার মতো আবাসন। কোটি টাকায় বিকোয় সেই সেখানকার ফ্ল্যাট। মানুষ মুখিয়ে থাকেন, কীভাবে সেখানে একটা ফ্ল্যাট বুক করতে পারেন! কিন্তু জানেন সেই সব বাড়িতেও কিন্তু লুকিয়ে ভয়ানক বিপদ! হেলে পড়ছে নিউটাউনের একের পর এক অভিজাত আবাসন। সিএ, সিডি, ডিবি ব্লকে হেলে পড়া বাড়ির বিপজ্জনক ছবি। সিএ ব্লকের ‘কমপ্লিশন সার্টিফিকেট’ দেওয়ার পরই হেলে পড়েছে আবাসন। একের পর এক বাড়ি, আবাসন হেলে পড়ার কারণটা কী? তাহলে কি নিউটাউনের মাটিতেই কোনও সমস্যা হচ্ছে? মাটি পরীক্ষা না করে কিছুই বলা সম্ভব নয়, জানিয়ে দিয়েছে NKDA।
হেলে পড়া আবাসনের এক বাসিন্দা বলেন, “আমাদের আবাসন তো হেলে রয়েছেই। এর আরও দুটি পরের আবাসনও হেলে রয়েছে। বাইরে থেকে দাঁড়িয়ে দেখলেই বুঝতে পারবেন। এটাই নাকি স্মার্ট সিটি। কিন্তু স্মার্ট সিটিতে এরকম একটা পরিস্থিতি হওয়ায় উচিতই নয়। জানি না এই আবাসনগুলোর ভবিষ্যৎ কী!”
আবাসনের আরেক বাসিন্দা বলেন, “নির্মাণের সময়ে কোথায় কী গন্ডগোল হয়েছে, তা তো আমাদের পক্ষে জানা সম্ভব নয়। হয়তো টাই বিম না করে নির্মাণ হয়েছে। একটা দিকে সাড়ে ৩২ ইঞ্চি, আরেকটা সাইটে ২৬ ইঞ্চির থেকে একটু বেশি। ইঞ্জিনিয়ারদের কোনও ধারণাই নেই। যে কোনও মিস্ত্রি এনে কাজ করিয়ে নিচ্ছেন। তাতেই সমস্যা।”
ডিবি ব্লকের হেলে পড়া আবাসনের আরেক মহিলা বাসিন্দা বললেন, “গোটা বাড়িটাই হেলে পড়েছে। তার জন্য আমরা প্রচণ্ড চিন্তায় আছি। যে কোনও সময়েই যা ইচ্ছা হতে পারে। কিন্তু এ চিন্তার কথা কাকে বলব! আমাদের মতো নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবার তো একটাই ফ্ল্যাট কিনতে পারে। আমাদের জেনারেশনটা রয়েছে। এরপর তো আমাদের পরের জেনারেশনও এই ফ্ল্যাটেই থাকবে।”
কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, নিউটাউনে লক্ষ-কোটি টাকার ফ্ল্যাট কিনে এইভাবে চিন্তিত কেন হতে হচ্ছে বাসিন্দাদের? কেনই বা নিউটাউনের ফ্ল্যাটগুলো এইভাবে হেলে পড়ছে? উত্তরে NKDAএর এক অধিকর্তা বলেন, “কেন বাড়িটি হেলে পড়ছে? তার কারণ হচ্ছে আনইক্যুয়াল সেকেলমেন্ট অফ সয়েল। অর্থাৎ মাটিরই সমস্যা। কিন্তু পুরো বিশ্লেষণটা কোনও সোয়েল বিশেষজ্ঞদের পক্ষেই বলা সম্ভব।”