সৌরভ দত্ত, কলকাতা: হার্ট অ্যাটাকের উপসর্গ নিয়ে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসার জন্য গিয়েছিলেন ৫৪ বছর বয়সী স্বপন পাল। আর তাঁর রোগ নির্ণয় করতে যেতেই ‘হৃৎপিণ্ডে’ ধাক্কা খোদ চিকিৎসকদেরই! রুদ্ধশ্বাস গোয়েন্দা কাহিনীর ‘দেবাশিস ভট্ট’ আর সরকারি হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে থাকা স্বপন পাল যে একই বন্ধনীতে!
শজারুর কাঁটায় গোয়েন্দা গল্পের চরিত্র দেবাশিস ভট্টের দেহে শজারুর কাঁটা বিঁধলেও হৃৎপিণ্ড বাঁ দিকের পরিবর্তে ডানদিকে থাকায় প্রাণে বেঁচে গিয়েছিল গল্পের চরিত্র। সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন কোভিড আক্রান্ত প্রৌঢ়েরও একই রোগ। অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টি করে ঘোলার বাসিন্দা স্বপন পালকে সুস্থ করে তুললেন আরজিকর হাসপাতালের চিকিৎসকেরা।
কোভিড আক্রান্ত রোগীর হৃদরোগের কারণ জানতে স্বপন পালের এক্স-রে করানো হয়। আর এক্স রে প্লেট দেখে চমকে যান আরজিকর মেডিক্যাল কলেজের কার্ডিওলজি বিভাগের চিকিৎসকেরা। এ তো শজারুর কাঁটার দেবাশিস ভট্ট! আরজিকরের চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, একে করোনা তার ওপরে ডানদিকের হৃৎপিণ্ডের অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টি। সব মিলিয়ে কাজটা সহজ ছিল না। সেটাই কার্ডিওলজি বিভাগের প্রধান চিকিৎসক কনক মিত্রের নেতৃত্বে সম্ভব করে দেখিয়েছেন চিকিৎসক তীর্থঙ্কর রায়, সাগরজ্যোতি রায়, অভিজিৎ বোরসে, অরুণাভ মিত্র এবং পলাশকুমার মণ্ডল।
ড. কনক মিত্র জানান, গত ১৭ মে বুকে ব্যথা নিয়ে আরজিকরে চিকিৎসা করাতে আসেন স্বপনবাবু। রোগীকে ভর্তি করানোর সময় করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট পজিটিভ আসে। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার সময়ই এক্স-রে রিপোর্টে প্রৌঢ়ের বিরল রোগের সন্ধান পান চিকিৎসকেরা। কিন্তু একে কোভিড, তার ওপর হৃৎপিণ্ডের উল্টো অবস্থান। তাই করোনা থেকে পুরোপুরি সুস্থ হয়ে ওঠার পরে মঙ্গলবার প্রৌঢ়ের অস্ত্রোপচার করেন চিকিৎসকেরা। স্বপন পাল জানিয়েছেন, অস্ত্রোপচারের পর তিনি সুস্থই আছেন।