Makeup Artist: চোখে দেখেন না, তাঁর হাতের ছোঁয়াতেই ছড়ায় আলো! দৃষ্টিহীন মেকআপ আর্টিস্টের গল্প বলছে হার না মানা লড়াইয়ের কথা
Makeup Artist: চিকিৎসকেরা জানান, আকস্মিক আঘাতের ফলে রেটিনা ডিটাচমেন্ট হয়েছে। বহু জায়গায় চিকিৎসা, একাধিক অপারেশন করেও মেলেনি কোনও স্থায়ী সমাধান। সেই সঙ্কটকালে পাশে দাঁড়ান তাঁর স্কুল জীবনের বন্ধু দেবাশিস ঘোষ।

সোনারপুর: চোখে দেখতে পান না। কিন্তু, তাঁর হাতের এক ছোঁয়াতেই ছড়ায় আলো। তাঁর হাতে যখন কেউ সাজে, তখন সেই মানুষের রূপ-লাবণ্য পায় যেন এক অন্য মাত্রা। তিনি অসিত বিশ্বাস – রাজপুরের এক দৃষ্টিহীন মেকআপ আর্টিস্ট। তাঁর গল্পই এখন ঘুরছে মানুষের মুখে মুখে। জীবনের শুরুটা হয়েছিল আর পাঁচটা মানুষের মতো স্বাভাবিক ছন্দেই। ছোট থেকেই চঞ্চল, প্রাণবন্ত অসিত বরাবরই সমাজসেবায় আগ্রহী। পড়াশোনা করেছেন এলাকারই স্কুলে, তারপর বিদ্যানিধি স্কুল থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাশ করে অ্যান্ড্রুজ কলেজ থেকে বাণিজ্যে স্নাতক করেন। পাশাপাশি, নাচ ও সাজসজ্জার প্রতিও ছিল তাঁর গভীর টান। তখনই মেকআপের জগতে হাতেখড়ি। বন্ধুদের নিয়ে সমাজসেবামূলক কাজ করতেন। কিন্তু, ২০২১ সালের দোলের আগের দিন ঘটে গেল এক ভয়াবহ দুর্ঘটনা। চোখে ঢুকে যায় রং। হারিয়ে ফেলেন দৃষ্টিশক্তি।
চিকিৎসকেরা জানান, আকস্মিক আঘাতের ফলে রেটিনা ডিটাচমেন্ট হয়েছে। বহু জায়গায় চিকিৎসা, একাধিক অপারেশন করেও মেলেনি কোনও স্থায়ী সমাধান। সেই সঙ্কটকালে পাশে দাঁড়ান তাঁর স্কুল জীবনের বন্ধু দেবাশিস ঘোষ। বন্ধুর সহচর্যে, ধীরে ধীরে হতাশা কাটিয়ে মেকআপ ব্রাশ আবার হাতে তুলে নেন অসিত। চোখে না দেখতে পেলেও এই অসিতের স্পর্শে সেজে ওঠেন নববধূরা। বিয়ের বাজারে তাঁর ‘ডিমান্ডও’ এখন এক্কেবারে আকাশছোঁয়া। কনের সাজ, ফেস ট্রিটমেন্ট, হেয়ার স্টাইলিং — সবই করেন নিখুঁতভাবে।
অসিতকে সাহায্য করে পাড়ার এক ভাইঝি ও দুই ছাত্রী। কিন্তু সবকিছুর ঊর্ধ্বে যিনি প্রতিটি মুহূর্তে আছেন তাঁর পাশে, তিনি হলেন অসিতের মা। এই বয়সেও তিনি বাজারে বসে সবজি বিক্রি করেন, শুধু ছেলের চিকিৎসা আর সংসার চালানোর জন্য। তাঁর একটাই আশা – একদিন হয়তো তাঁর ছেলে আবার দেখতে পাবে, ফিরে পাবে হারানো আলো।





