কলকাতা : বাংলার রাজনীতিতে যখন শাসক দলের দুর্নীতি নিয়ে তুমুল চর্চা চলছে, তার মধ্যেই ভাইফোঁটায় যোগ হল, চর্চার নতুন উপাদান। বান্ধবী বৈশাখীকে সঙ্গে নিয়ে কালীঘাটে গিয়ে মমতার হাত থেকে ভাইফোঁটা নিয়েছেন শোভন চট্টোপাধ্যায়। প্রাক্তন মেয়রের তৃণমূল তথা রাজনীতিতে প্রত্যাবর্তন নিয়ে তাই জল্পনা তুঙ্গে। তবে শোভনের স্ত্রী তথা তৃণমূল বিধায়ক রত্না চট্টোপাধ্যায়ের স্পষ্ট দাবি, মমতা ক্ষমা করলেও বেহালা তথা বাংলার মানুষ ক্ষমা করবেন না শোভনকে।
দীর্ঘদিনের রাজনীতিক শোভন ২০১৮ সালে তৃণমূল ছাড়েন। তারপর তিনি বিজেপিতে যোগ দিলেও গত কয়েক বছরে রাজনীতি থেকে ক্রমশ দূরত্ব বেড়েছে তাঁর। কার্যত তাঁর ব্যক্তিগত জীবন নিয়েই চর্চা হয়েছে বেশি। তাই রত্নার দাবি, রাজনীতিতে এলেও উল্লেখযোগ্য কিছু করে উঠতে পারবেন না তিনি। TV9 বাংলায় এক এক্সক্লুসিভ সাক্ষাৎকারে রত্না জানিয়েছেন, শোভনবাবুকে নিয়ে এত চর্চার কোনও কারণ আছে বলে তিনি মনে করেন না।
প্রত্যাবর্তনের জল্পনা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে রত্না বলেন, ‘শোভন চট্টোপাধ্য়ায় বরাবরই মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ের থেকে ভাইফোঁটা নেন। এটা নতুন কিছু নয়। বিজেপিতে চলে যাওয়ার পর দিদির সঙ্গে মনোমালিন্য হয়েছিল। তবে এ নিয়ে এত জলঘোলার কোনও প্রয়োজন নেই। শোভনবাবু ৪-৫ বছর রাজনীতিতে নেই। এখন কিছু করতে গেলে নতুন করে শুরু করতে হবে, আমি যেমন করেছি।’
যদি শোভন রাজনীতিতে সক্রিয় হয়ে ফিরেও আসেন, তাতে বেহালা তো দূর, বাংলার রাজনীতিতে তিনি কোনও জায়গা করতে পারবেন না বলে মনে করেন স্ত্রী রত্না। তিনি বলেন, ‘এখন সমীকরণ অনেক বদলে গিয়েছে। রাজনীতিতে একেকটা দিন একেক বছরের মতো। তাই আমি মনে করি না কাল এলেই পরশু জায়গা পেয়ে যাবেন। আর এই কয়েক বছরে শোভনবাবু যা কিছু ঘটিয়েছেন, তাতে বেহালার মানুষ ক্ষমা করবেন কি না জানি না। বাংলার মানুষও ক্ষমা করবেন কি না, তা নিয়েও সন্দেহ আছে।’
পুরনো সতীর্থ হিসেবে ফিরে এলে শোভনকে স্বাগত জানাবেন রত্না। তাঁর কথায়, শোভন দীর্ঘদিনের রাজনীতিক, দক্ষ সংগঠক, ভাল প্রশাসক। রত্না মনে করেন, মমতা এমন কিছুই বলেননি যে তাঁকে ছেড়ে চলে যেতে হত। পরিবারের সদস্য হয়ে শোভনের উত্থানের জন্য অনেক স্বার্থত্যাগ করতে হয়েছে বলেও উল্লেখ করেছেন রত্না। তিনি মনে করিয়ে দিয়েছেন, মমতার হাত ধরে কীভাবে মন্ত্রী, মেয়র হয়েছিলেন শোভন।
রত্না বলেন, দিদির মন খুব নরম। তিনি বকেন আবার ভালও বাসেন। তাই শোভনের ছেড়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত ভুল ছিল বলে মনে করেন তিনি। তাঁর দাবি, ৬০ বছরের জীবনে ২০১৮ সালের নভেম্বরেই সবথেকে বড় ভুল করেছিলেন শোভন। তবে সব শেষে রত্নার মত, রাজনীতি ভালভাবে করতে পারলে ভাল।