বিপর্যয়ের বাংলা থেকে মুখ্যসচিবকে দিল্লিতে ‘পোস্টিং’ কেন্দ্রের, তাপস-অধীর বলছেন ‘প্রতিহিংসা’, তথাগতর কাছে ‘স্বাভাবিক ঘটনা’

May 29, 2021 | 3:27 PM

রাজ্যের কোভিড (COVID-19) পরিস্থিতি সামলাতে অভিজ্ঞ আমলার প্রয়োজন। সেই কারণে যাতে মুখ্যসচিবের মেয়াদ ৩ মাস বাড়ানো হয় সম্প্রতি।

বিপর্যয়ের বাংলা থেকে মুখ্যসচিবকে দিল্লিতে পোস্টিং কেন্দ্রের, তাপস-অধীর বলছেন প্রতিহিংসা, তথাগতর কাছে স্বাভাবিক ঘটনা
নিজস্ব চিত্র

Follow Us

কলকাতা: শুক্রবারই রাজ্যে এসেছে কেন্দ্রের পত্রবোমা। রাজ্যের মুখ্যসচিবের পদ ছেড়ে দিল্লির নর্থ ব্লকের দফতরে যেতে হবে আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে। ৩১ মে রাজ্যের মুখ্যসচিব হিসাবে তাঁর মেয়াদ ফুরোচ্ছে। সেদিনই দিল্লিতে যেতে হবে তাঁকে। সকাল ১০টার মধ্যে কর্মিবর্গ ও প্রশিক্ষণ মন্ত্রকে (ডিওপিটি) যোগ দিতে বলা হয়েছে কেন্দ্রের তরফে। অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে ক্যাবিনেট নিয়োগ কমিটির এই নির্দেশ সেদিনই এল, যেদিন ইয়াস পরবর্তী পরিস্থিতির পর্যালোচনায় বাংলায় আসেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

কলাইকুন্ডায় বৈঠকের বদলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকে ক্ষয়ক্ষতির একটি রিপোর্ট তুলে দিয়ে রওনা হয়ে যান বিপর্যস্ত দিঘার পথে। এরপরই যা মোড় নেয় ‘রাজনৈতিক সাইক্লোন’-এ। ইতিমধ্যেই বিভিন্ন মহল আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে দিল্লি পাঠানো নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। বিশেষ করে ইয়াস-কোভিডের জোড়া ফলায় যখন ক্ষত বিক্ষত বাংলা, ‘অভিজ্ঞ’ আলাপনকে সেই মুহূর্তে দিল্লিতে ডেকে নেওয়ার আদৌ কি দরকার ছিল?

কী বলছে বিভিন্ন মহল-

তাপস রায় (তৃণমূল নেতা)
বিধানসভা নির্বাচনে হেরে বাংলার উপর প্রতিশোধ নিচ্ছে বিজেপি। চিরকাল কেউই কোনও পদে থাকেন না। এই দুর্যোগের সময় মুখ্যসচিবের মেয়াদ তিন মাস বাড়ানো হয়েছিল। শুক্রবার কেন্দ্র সরকারের যে নির্দেশ তা একেবারেই অযৌক্তিক। ওদের বাংলার প্রতি রাগ, ক্ষোভ, প্রতিহিংসা যে রয়েছে এ গুলি তারই বহিঃপ্রকাশ। ক্যাবিনেট নিয়োগ কমিটির এই সিদ্ধান্ত নজিরবিহীন।

অধীররঞ্জন চৌধুরী (কংগ্রেস নেতা)

এখন রাজ্যে ভয়ঙ্কর বন্যা, কোভিড পরিস্থিতি এই সময়টা খুব এমার্জেন্সি পিরিয়ড। এ সময় যখন মুখ্যসচিব তাঁর দীর্ঘ দিনের কাজের অভিজ্ঞতাকে সামনে রেখে এই পরিস্থিতি মোকাবিলার দায়িত্বে রয়েছেন, সেই সময় এই ভাবে উঠিয়ে নেওয়াটা একটু অবাক লাগল। এটার কি সত্যি দরকার ছিল? প্রতিহিংসার মানসিকতা, সব মিলে কিন্তু এটা হচ্ছে। এটা কিন্তু আমাদের কারও জন্যই ভাল হচ্ছে না।

তথাগত রায় (বিজেপি)

একজন মুখ্যসচিব পরে কেন্দ্রের কোনও মন্ত্রকে যাবেন এটা অত্যন্ত স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। এর আগে অনেক হয়েছে। তখন তো এত হইচই হয়নি।

বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য (আইনজীবী)

আইনের দিক থেকে দেখলে এর মধ্যে খুব একটা বিশেষত্ব কিছু নেই। একজন আমলাকে এখান থেকে ওখানে পোস্টিং দিতেই পারে। কিন্তু প্রশ্ন একটা থেকে যায়, যিনি মুখ্যসচিবের কাজ করছেন, তাঁকে হঠাৎ করে এ ভাবে নিয়ে যাওয়ার কারণ কী? বিশেষ করে মুখ্যসচিবের যখন অবসরকালীন সময় এসে গিয়েছে।

বিশ্বনাথ চক্রবর্তী (রাজনৈতিক বিশ্লেষক)

দেশের প্রধানমন্ত্রী কলাইকুন্ডাতে পর্যালোচনা বৈঠকে এসেছেন, সেখানে রাজ্য সরকারের একজনও প্রতিনিধি নেই। দেশের প্রধানমন্ত্রীর কাছে এটা বড় বিড়ম্বনার ছিল। প্রশাসনিক দিক থেকেই এই বার্তাটা দেওয়া হয়েছে বলে আমার মনে হয়। আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় যেহেতু মুখ্যসচিব, দায়টা তাঁর। দায়বদ্ধতা তাঁরই দেখানো হয়েছে। সেই জায়গা থেকেই মনে হয় তাঁকে ডেকে পাঠানো হয়েছে।

Next Article