কলকাতা: ‘অমল আলোয়’ আজ নামল আঁধার! বিখ্যাত কার্টুনিস্ট অমল চক্রবর্তীর মৃত্যুর খবরে এমনটাই বলছে শিল্প মহল। কার্টুন-দুনিয়ায় এক গভীর শূন্যতা তৈরি করে বুধবার সকালে চলে গেলেন অমল চক্রবর্তী। প্রায় ৭০ বছর ধরে তাঁর আঁকা কার্টুন দেখেছে বাংলার পাঠকেরা। খবরের কাগজের প্রথম পাতায় কার্টুন আঁকার যে রেওয়াজ, সেটা এই বাংলায় এসেছিল তাঁর হাত ধরেই। আর তাঁর হাত ধরেই সেই পকেট কার্টুন বিদায় নিল বলে মনে করছেন কার্টুনিস্ট উদয় দেব।
গত সেপ্টেম্বর মাসেই ৯০ বছর পূর্ণ করেছেন অমল চক্রবর্তী। শরীর ভাল ছিল না বেশ কিছুদিন ধরেই। সম্প্রতি তিনি ভর্তি হন আর জি কর হাসপাতালে। বুধবার সকালে সেখানেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। তবে তাঁর কাজের যে ব্যপ্তি ছিল, তাতে বাংলার পাঠক কুল তাঁকে মনে রাখবে দীর্ঘদিন।
অমল চক্রবর্তী নামে পরিচিত হলেও তাঁর পুরো নাম অমলেন্দু চক্রবর্তী। মূলত রাজনৈতিক কার্টুন আঁকতেন তিনি। অমৃতবাজার পত্রিকা, যুগান্তর, আনন্দবাজার পত্রিকায় কার্টুন এঁকেছেন একসময়ে। পরবর্তীতে ১৯৯২ সালে ‘সংবাদ প্রতিদিন’ পত্রিকার জন্মলগ্ন থেকেই সেখানে চাকরি করতেন অমল চক্রবর্তী। ‘সংবাদ প্রতিদিন’ পত্রিকায় নিয়মিত প্রকাশিত হত তাঁর পকেট কার্টুন ‘অমল আলোয়।’
কার্টুনিস্ট উদয় দেব জানিয়েছেন, দেশের বিখ্যাত কার্টুন শিল্পী কে শঙ্কর পিল্লাই-এর ছাত্র ছিলেন অমল চক্রবর্তী। শঙ্কর পিল্লাই তাঁকে বারবার বলতেন, ‘অমল কার্টুনটা আঁকতে হবে।’ সেই অনুপ্রেরণাতেই তাঁর কাজ শুরু। রাজনৈতিক কার্টুনের একটা বিশেষ দিক হল এই পকেট কার্টুন, যা খবরের কাগজের প্রথম পাতায় থাকার কথা। দীর্ঘদিন ধরে সেই পকেট কার্টুন আঁকার কাজটাই করে এসেছেন অমল চক্রবর্তী। উদয় দেব বলছেন, “গ্রামবাংলাকে এই ধরনের কার্টুনের সঙ্গে পরিচিত করিয়েছিলেন অমল বাবুই। তাঁর চলে যাওয়ায় আর বাংলার শহরতলির মানুষ পকেট কার্টুন দেখতে পাবে না।” তাঁর কথায়, ‘অমল দা-র চলে যাওয়ায় একটা যুগের অবসান হল।’