কলকাতা: ফের আন্দোলনের প্রস্তুতি জুনিয়র চিকিৎসকদের। মেডিক্যাল কাউন্সিলে অভীক দে, বিরুপাক্ষ বিশ্বাসের পুনর্বহালে তপ্ত স্বাস্থ্যক্ষেত্র। শুক্রবার স্বাস্থ্য ভবন অভিযানের পরিকল্পনা WBJDF’এর। এদিন আরজি করে সাংবাদিক বৈঠক করে জুনিয়র ডক্টর্স ফ্রন্ট। এদিকে তিলোত্তমা কাণ্ডের পর একাধিক অনিয়মের অভিযোগে অভীক, বিরুপাক্ষর বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি গঠন করেছিল স্বাস্থ্য ভবন। স্বাস্থ্য ভবনের গঠিত কমিটির রিপোর্টে অভীক, বিরুপাক্ষের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপের সুপারিশও করা হয়েছিল বলে খবর।
টিভি নাইনের হাতে এসেছে সেই রিপোর্টের প্রতিলিপি। অভীকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করে কমিটির রিপোর্টে লেখা রয়েছে, `অভীক দে’র বিরুদ্ধে ভয় দেখানো, অনৈতিক উপায় অবলম্বন সংক্রান্ত একাধিক অভিযোগের বাস্তবতা রয়েছে। এরপরও অভীক দে’র রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলের এথিক্যাল অ্যান্ড পেনাল কমিটিতে যুক্ত থাকা এবং রাজ্যের প্রতিনিধি হিসাবে ফার্মাসি কাউন্সিলের সদস্য পদ প্রাপ্তি দুর্ভাগ্যজনক। তাই দুটি পদ থেকেই তাঁকে অব্যাহতি দেওয়া হোক’। একইসঙ্গে, স্বাস্থ্য বিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষায় প্রভাব খাটানোর অভিযোগের বাস্তবতা মিলেছে বলে কমিটির রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে।
এমবিবিএসের সব বিষয়ে অনার্স পাওয়া ডাক্তারির পড়াশোনায় বিরল ঘটনা বলেই মত বিশেষজ্ঞদের। কমিটির রিপোর্টে বলা হয়েছে, সুশান্ত বিশ্বাস নামে এক চিকিৎসক লিখিত বয়ানে স্বীকার করেছেন, অভীক দে’র প্রতি প্রশ্নাতীত আনুগত্য দেখিয়েই অযোগ্য হওয়া সত্ত্বেও তিনি সবকটি বিষয়ে অনার্স পেয়েছেন! একইসঙ্গে এসএসকেএমে অভীক দে’র নিজের পিজি কোর্সে ভর্তি নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে।
সূত্রের খবর, রুরাল সার্ভিস কোটায় এসএসকেএমে পিজি কোর্সে ভর্তির সুযোগ পান অভীক। বর্ধমানের অনাময় হাসপাতালে ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮ সাল থেকে ১ নভেম্বর ২০২৩ সাল পর্যন্ত অনাময়ের রেডিওডায়াগনসিস বিভাগে কাজ করেছেন বলে দাবি করেছেন অভীক। যদিও অনাময়ের সুপার কমিটিকে লিখিতভাবে জানিয়েছেন, সেই সময় সেখানকার রেডিওডায়াগনসিস বিভাগে অভীক দে নামে কেউ কাজ করেননি! বিরুপাক্ষ বিশ্বাসের চিকিৎসকের রেজিস্ট্রেশন বাতিলের পক্ষে সওয়াল করেছিল স্বাস্থ্য ভবনের তদন্ত কমিটি। তোলাবাজি-সহ নানা অভিযোগে রাজ্যের একাধিক থানায় এফআইআর রয়েছে বিরুপাক্ষের বিরুদ্ধে। তদন্ত কমিটির পর্যবেক্ষণ, সরকারি কোনও পদে থাকারই উপযুক্ত নন বিরুপাক্ষ! চিকিৎসকদের প্রশ্ন, এরপরও কী ভাবে অভীক-বিরুপাক্ষের পুর্নবহাল সম্ভব? সন্দীপ ঘোষের মতো এই দু’জনের বিরুদ্ধে স্বাস্থ্য ভবনের গড়ে তোলা কমিটির রিপোর্টে কেন আমল দিল না ওয়েস্ট বেঙ্গল মেডিক্যাল কাউন্সিল।