Attack on ED: ‘বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী সম্পর্কে অভিযোগ শুনলেও FIR নেবেন?’ পুলিশের ভূমিকায় বিস্মিত বিচারপতি মান্থা
Sandeshkhali Case in Calcutta High Court: সন্দেশখালির ঘটনায় মোট দুটি এফআইআর হয়েছে। একটি এফআইআর করেছেন দিদার বক্স মোল্লা নামে এক ব্যক্তি, যিনি নিজেকে শেখ শাহজাহানের কেয়ারটেকার বলে দাবি করেন। তাঁর অভিযোগ ছিল, শাহজাহানের বাড়িতে তালা ভেঙে ঢুকে টাকা ও একাধিক জিনিস চুরি করা হয়েছে। মহিলাদের শ্লীলতাহানি পর্যন্ত করার অভিযোগ ওঠে।
কলকাতা: সন্দেশখালি-কাণ্ডে বড় ধাক্কা রাজ্য পুলিশের। ইডি-র বিরুদ্ধে করা এফআইআর-এ অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। সন্দেশখালির ঘটনায় দুটি এফআইআর-এর বয়ানের মধ্যে যে বিস্তর ফারাক রয়েছে, তা দেখে কার্যত বিস্ময় প্রকাশ করেন হাইকোর্টের বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা। প্রাথমিক কোনও অনুসন্ধান না করেই কীভাবে এফআইআর করল পুলিশ, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেম বিচারপতি। দুটি এফআইআর-এর মধ্যে পার্থক্য কেন, তা জানতে রাজ্যের কাছে হলফনামা তলব করেছে আদালত। পাশাপাশি, পরবর্তী শুনানিতে এফআইআর-এর আসল কপি ও কেস ডায়েরি আদালতে জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনে দুটি এফআইআর-এর ফরেনসিক পরীক্ষা করাতে হবে বলেও মন্তব্য করেছেন বিচারপতি।
দিদার বক্স মোল্লার করা এফআইআর-এ স্থগিতাদেশ
সন্দেশখালির ঘটনায় মোট দুটি এফআইআর হয়েছে। একটি এফআইআর করেছেন দিদার বক্স মোল্লা নামে এক ব্যক্তি, যিনি নিজেকে শেখ শাহজাহানের কেয়ারটেকার বলে দাবি করেন। তাঁর অভিযোগ ছিল, শাহজাহানের বাড়িতে তালা ভেঙে ঢুকে টাকা ও একাধিক জিনিস চুরি করা হয়েছে। মহিলাদের শ্লীলতাহানি পর্যন্ত করার অভিযোগ ওঠে। আর একটি স্বতঃপ্রণোদিত এফআইআর করে পুলিশ। সেই এফআইআর-এর বয়ান আলাদা। দিদার বক্স মোল্লার করা এফআইআর-এ স্থগিতাদেশ দেওয়ার আবেদন জানিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিল ইডি।
ইডি-র আইনজীবী এসভি রাজু এদিন জানিয়েছেন, তল্লাশি অভিযানে গেলে ইডি-র আধিকারিকদের প্রচুর লোক ঘেরাও করে। মারধর করা হয়। ইডি আধিকারিকরা হাসপাতালে ভর্তি হন। কাজে বাধা দেওয়া হয় ও পরবর্তীতে মিথ্যা এফআইআর করা হয়। ইডি-র দাবি, তাদের করা অভিযোগের ভিত্তিতে কোনও পদক্ষেপ গ্রহণ করছে না পুলিশ। তদন্তভার সিবিআই-কে দেওয়ার আর্জিও জানিয়েছে তারা।
শাহজাহানের ফোন থেকে ২৮টি ফোন গিয়েছে
ইডি আরও জানিয়েছে, অফিসাররা কোনওভাবেই দরজা ভেঙে বা খুলে ভেতরে ঢোকেননি। আইনজীবী জানান, শাহজাহান শেখকে বারবার ফোন করার চেষ্টা করা হয়েছিল। ওঁর ফোন অনবরত ব্যস্ত ছিল। উনি ফোন করে লোক জমায়েত করছিল বলেই ধারনা করা হচ্ছে। আইনজীবী ধীরজ ত্রিবেদী বলেন, “দেখা যাচ্ছে, সেই সময় শাহজাহানের ফোন থেকে ২৮টি ফোন গিয়েছে। সেই ফোনের লোকেশন সেই সময় তাঁর বাড়ির ভেতরেই ছিল। ৭টা ১৫-তে শাহজাহান প্রথম ফোন রিসিভ করেন। তারপর থেকে তাঁর ফোন অনবরত ব্যস্ত ছিল।” এজি কিশোর দত্ত জানান, কিছু অপরিচিত ব্যক্তির নামে এফআইআর হয়েছে। এফআইআর করা ছাড়া কোনও অপশন ছিল না।
এনকোয়ারি না করেই FIR?
বিচারপতি মান্থা প্রশ্ন করেন, ১০টা ৩০ মিনিটে অভিযোগ পেলেন আর এফআইআর দায়ের হয়ে গেল ১০টা ৩০-এই? যদি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সম্পর্কে কেউ অভিযোগ জানাতে যায়, আপনারা কোনও এনকোয়ারি না করেই অভিযোগ নিয়ে নেবেন?
এজি আরও জানান, ইডি পুলিশের সঙ্গে কোনও আলোচনা না করেই তল্লাশি চালাতে গিয়েছিল। পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যাওয়ার পর তারা স্থানীয় থানাকে জানায়। স্থানীয় পুলিশই ইডি আধিকারিকদের উদ্ধার করে প্রাথমিক চিকিৎসা করে।
বিচারপতি প্রশ্ন করেছেন, পুলিস অফিসার এসআই পিনাকি ঘটনাস্থল থেকে ফেরার পর ওসি কি একবারও জিজ্ঞাসা করেননি যে আসল ঘটনাটা কী ঘটেছিলো? একই সময় দুটো বিপরীত অভিযোগ কীভাবে এল, পুলিশ কী করল? প্রয়োজনে ওসি শুভাশিস প্রামাণিক এবং এস.আই পিনাকির থেকে হলফনামা তলব করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিচারপতি। বিচারপতি মান্থা বলেন, “হতে পারে ম্যানুপুলেশন, হতে পারে একসময় এফআইআর হয়েছে। প্রয়োজনে দুটো এফআইআর-এর ফরেন্সিক করানো প্রয়োজন।”