কলকাতা: ‘দিদির দূত’, ‘দিদিকে বলো’-র পর এবার ‘সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী’। আগেই এই কর্মসূচির কথা ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। বৃহস্পতিবার নবান্ন থেকে এই কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন তিনি। নয়া কর্মসূচির মাধ্যমে জনগণ সরাসরি নিজের এলাকার সমস্যা তুলে ধরতে পারবেন। এর আগে গ্রিভান্স সেলে মেল করে বা চিঠি লিখে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে অভিযোগ জানানো যেত। নতুন কর্মসূচিতে ফোনেই জানানো যাবে অভাব-অভিযোগ। এই নতুন হাতিয়ারেই কি পঞ্চায়েত ভোটে বাজিমাত করতে চাইছে শাসক শিবির? প্রশ্ন রাজনৈতিক মহলের।
ওয়াকিবহাল মহলের মতে, ২০১৯-এর লোকসভা ভোটের ফল দেখিয়ে দেয় তৃণমূল কিছুটা জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। দ্রুত ক্ষতে প্রলেপ দেওয়ার উদ্যোগ নেয় শাসক দল। প্রশান্ত কিশোরের সংস্থাকে মাঠে নামায় তৃণমূল। ‘দিদিকে বলো’, নবান্নে গ্রিভান্স সেল খুলে মানুষের অভাব অভিযোগ শোনার মতো জনসংযোগ কর্মসূচি নেয়। সেই সব কর্মসূচি শাসক দলকে একুশের বিধানসভা ভোটে ইতিবাচক ফল দেয়। তৃতীয়বার ক্ষমতায় এলেও তৃণমূলের বিরুদ্ধে অভিযোগের শেষ নেই। পদে-পদে বিঁধছেন বিরোধীরা। নিয়োগ কেলেঙ্কারি থেকে আবাস, একশো দিনের কাজ-সহ নানা সরকারি প্রকল্পে দুর্নীতির ভূরি-ভূরি অভিযোগ। এরই মধ্যে সাগরদিঘি-র উপনির্বাচনে শাসক দলের ভরাডুবি ও সংখ্যালঘুদের সমর্থন কমতে থাকা উদ্বেগে ফেলছে নেতৃত্বকে।
দলের তরফে ‘এক ফোনে অভিষেক’,’ তৃণমূলে জনজোয়ার’ এবং সরকারের তরফে ‘সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী’- পঞ্চায়েত ভোটের আগে জনসংযোগে ৩৬০ ডিগ্রি পূরণ করতে চাইছে তৃণমূল। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ঘন ঘন জনসংযোগ কর্মসূচিতে মানুষের সমস্ত সমস্যার সমাধান হয়ত সম্ভব নয়। কিন্তু বহু জায়গায় গিয়ে এবং বহু কানে জনতার অভাব অভিযোগ শুনলে জনবিচ্ছিন্নতার সম্ভাবনা ঠেকিয়ে রাখা যাবে।
কীভাবে অভিযোগ জানানো যাবে মুখ্যমন্ত্রীকে?
আজ কর্মসূচিটির আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধনের পর একটি ফোন নম্বর দিতে পারেন মমতা। যেখানে ফোন করলে তা সরাসরিভাবে ফোন যাবে মুখ্যমন্ত্রীর সচিবালয়ে। এর জন্য কল-সেন্টার তৈরি করাও হয়েছে। নিয়োগ করা হবে পেশাদার লোকজন।
সাধারণ মানুষ বা সমষ্টিগতভাবে অভিযোগ যা আসবে সেগুলি গুরুত্ব অনুযায়ী মুখ্যমন্ত্রীর নজরে আনা হবে। প্রয়োজনীয়তা বুঝে সমাধান করবে মুখ্যমন্ত্রীর দফতর। সমস্যা গুরুতর হলে অফিসাররা অভিযোগকারীর কাছে পৌঁছে যাবেন।