বিজেপি অফিস থেকে বেরোতেই ‘শুভেন্দু মুর্দাবাদ’ স্লোগান

'শৃঙ্খলাহীন একটা কোম্পানি' থেকে 'বেরিয়ে এসে প্রকৃত রাজনৈতিক দলের সদস্য' হতে পেরে আপ্লুত শুভেন্দু। বারবার তাঁর বক্তব্যে তা উঠে এল এদিন।

বিজেপি অফিস থেকে বেরোতেই 'শুভেন্দু মুর্দাবাদ' স্লোগান
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে শুভেন্দু অধিকারী।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Dec 26, 2020 | 4:41 PM

কলকাতা: বাংলা কংগ্রেসের থেকেও খারাপ দশা হবে তৃণমূলের। কেউ মনেও রাখবে না। হেস্টিংস-এ বিজেপির নির্বাচনী কার্যালয়ে দাঁড়িয়ে এমনটাই ভবিষ্যৎবাণী করলেন তৃণমূলের এক সময়ের চাণক্য মুকুল রায়। ‘যাঁরা গদ্দারি করে কংগ্রেসটা ভেঙেছিল, আজ তাঁরা অন্যদের গদ্দার বলছে’, কটাক্ষ মুকুলের। অন্যদিকে এদিন হেস্টিংস থেকে বেরোনোর সময় , শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে শোনা গেল মুর্দাবাদ স্লোগান। শুভেন্দুর কথায়, “আমি লজ্জিত আমি ২১ বছর এই দলটা করেছি। ৩৪ বছরের সিপিএমের ছেঁড়া চটি ২১ বছর ধরে টেনে নিয়ে গিয়েছি।”

শনিবার হেস্টিংস-এ নতুন সদস্যদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বিজেপি। শুভেন্দু অধিকারী, সুনীল মণ্ডলদের সেখানে সংবর্ধনা জানানো হয়। এই মঞ্চ থেকেই মুকুল বলেন, তৃণমূল ছাড়ার পরও সে দলের অনেকের সঙ্গেই তাঁর যোগাযোগ রয়েছে। ‘ভয়ে অনেকে হয়তো তৃণমূল ছাড়তে পারছিলেন না বা পারছেন না’। কিন্তু ‘অসম্মান যখন সীমা পার করে যাবে তাঁরাও দল ছাড়তে বাধ্য হবেন।’ ইতিমধ্যেই তার প্রমাণও মিলেছে।

আরও পড়ুন: সুনীল মণ্ডলের গাড়িতে হামলা, অমিত শাহকে রিপোর্ট রাজ্য বিজেপির

মুকুলের বার্তা, “রাজনীতির অঙ্কটা আমি ভালই বুঝি। আমিও আজ বলে যাচ্ছি তৃণমূলের প্রতিষ্ঠা লগ্নে আমার স্বাক্ষর ছিল। আমি মনে করি যারা আজ আমাদের নয়া সহকর্মীদের গদ্দার বলছে, তারা তো দলের সঙ্গে গদ্দারি করেছে। তারা তো দলের সঙ্গে গদ্দারি করে কংগ্রেসটা ভেঙেছিল। আজ মঞ্চ বেঁধে মাইক বেঁধে এসব করছে, শোভা পায় না। লিখে রাখুন বিপ্লবী বাংলা কংগ্রেসের থেকেও এই তৃণমূল কংগ্রেস খারাপ জায়গায় পৌঁছবে।”

সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের মঞ্চ থেকে শুভেন্দু অধিকারীও তাঁর পুরনো দল নিয়ে একের পর এক ক্ষোভ উগরে দেন। তিনি এখন তৃণমূলকে আর দল মানতেই নারাজ, সেটা ‘কোম্পানি’তে পরিণত হয়েছে। বরং বিজেপি তাঁকে ‘গ্রহণ’ করায় একেবারে ‘গদগদ’। গত কয়েকদিনের ‘ধারা’ বজায় রেখেই এদিনও অমিত শাহর ‘স্তুতি’ তাঁর মুখে, “আমরা অত্যন্ত খুশি। যেভাবে তাঁরা আমাদের গ্রহণ করেছেন, আমি নত মস্তকে সেই অভিবাদন গ্রহণ করি। আমরা অত্যন্ত কৃতজ্ঞ যে ভারতীয় জনতা পার্টির অন্যতম সংগঠক এবং দেশের প্রত্যেকটা মানুষের যিনি হৃদয় জয় করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বিপ্লবের তীর্থস্থান, বর্ণপরিচয়ের স্রষ্টা বিদ্যাসাগরের মাটিতে আমাদের গ্রহণ করেছেন। এর থেকে বড় প্রাপ্তি আর আমাদের হতে পারে না। এই প্রাপ্তি সঙ্গে নিয়েই আমরা এগোব।” ‘শৃঙ্খলাহীন একটা কোম্পানি’ থেকে ‘বেরিয়ে এসে প্রকৃত রাজনৈতিক দলের সদস্য’ হতে পেরে আপ্লুত শুভেন্দু। বারবার তাঁর বক্তব্যে উঠে এল এদিন।

শুভেন্দুর কথায়, “আমরা এতদিন যে দলে ছিলাম, সেটা কোম্পানিতে পরিণত হয়েছে। সেখানে কেউ অ্যাপয়েন্টমেন্ট লেটার পায় না , মিটিংয়ের রেজুলেশন লেখা হয় না। এই প্রথম আমরা একটা দলের সদস্য হলাম। আমাদের কাজ হবে বিধানসভা ভোটে দলকে জয়যুক্ত করা। বাংলাকে মোদীজির হাতে তুলে দিতে হবে। বাংলা ও দিল্লিতে একই সরকার না হলে অগ্রগতি সম্ভব নয়।” এদিকে অনুষ্ঠান থেকে বের হওয়ার পরই ‘শুভেন্দু অধিকারী মুর্দাবাদ’ স্লোগানে সরব হন বেশ কয়েকজন। বিজেপির দাবি, তাঁরা তৃণমূলেরই লোক। তৃণমূলের পাল্টা কটাক্ষ, এসব মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত প্রতিবাদেরই বহিঃপ্রকাশ।