Dilip Ghosh On Subrata Mukherjee: ‘একসঙ্গে বসে খেয়েছি, গল্প করেছি কত! খুবই মিষ্টি খেতে ভালবাসতেন’, সুব্রতর স্মৃতিচারণায় নস্ট্যালজিক দিলীপ
Dilip Ghosh On Subrata Mukherjee: "নিঃসন্দেহে এরকম ব্যক্তি চলে যাওয়া রাজনীতিতে বড়ো একটা গ্যাপ তৈরি হল।"
কলকাতা: প্রতিপক্ষ ছিলেন। কিন্তু তিনি যে বিচক্ষণ রাজনীতিবিদ, সেকথা অনস্বীকার্য। “সুব্রতবাবু ব্যক্তিগতভাবে অনেকের অভিভাবক ছিলেন।” বর্ষীয়ান মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের (Subrata Mukherjee) প্রয়াণে বললেন বিজেপির কেন্দ্রীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh)। শুক্রবার ইকোপার্কে প্রাতঃভ্রমণে বেরিয়ে তিনি বলেন, “সুব্রতবাবু এক প্রকার বাংলার রাজনীতির আইকন ছিলেন। তাঁর মৃত্যু হয়তো ৭৫ বছর বয়সে হয়েছে। তবু মনে হচ্ছে খুব তাড়াতাড়ি চলে গেলেন। ৫০-৬০ বছর ধরে রাজনীতি জীবনে অ্যাক্টিভ থেকেছেন। সামাজিক জীবনে সবার সঙ্গে তাঁর স্বাভাবিক সম্পর্ক ছিল। দল বা বয়স কোনও কিছু ওঁ ভাবতেন না। ব্যক্তিগত ভাবে অনেকের অভিভাবক ছিলেন।”
কথাগুলি বলার ফাঁকে নস্ট্যালজিক হয়ে পড়েন দিলীপ ঘোষ। পুরনো অনেক কথা উঠে আসে তাঁর মুখে। তিনি বলেন, “বিধান সভায় যাওয়ার পর ওঁর সামনা সামনি হয়েছি। ১৬ সাল থেকে তিন বছর ছিলাম। অনেকবার দেখা হয়েছে বিএ কমিটিতে বসে এক সঙ্গে খাওয়া দাওয়া হত। এত বছর বয়সে ওঁ মিষ্টি খেতেন খুব। বিধান সভার মধ্যে বেঞ্চে বসে অনেক্ষণ আলোচনা হয়েছে। ওঁ যে ধরনের মজার মজার কথা বলতেন, সোজাসাপটা বলতেন, এটা যেমন আনন্দদায়ক ছিল, মজারও ছিল তেমনই শিক্ষারও ব্যাপার ছিল। নিঃসন্দেহে এরকম ব্যক্তি চলে যাওয়া রাজনীতিতে বড়ো একটা গ্যাপ তৈরি হল।”
দিলীপের সংযোজন, “রাজনীতির ক্ষেত্রে ওঁদের মতো মানুষরা চলে যাওয়াটা বড় ক্ষতির। মূল্যবোধ ও পরম্পরার যে রাজনীতি সেটায় একটা বড় গ্যাপ তৈরি হয়ে গিয়েছে। বেশ কয়েকজন নেতাকে আমরা ইদানিং হারিয়েছি ।পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে বড়ো একটা গ্যাপ তৈরি হচ্ছে । ওঁ যে পার্টির নেতা ছিলেন, সে পার্টির যেমন ক্ষতি নিঃসন্দেহে বাংলার রাজনীতির বড়ো ক্ষতি হল।”
সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের প্রয়াণে, তাঁকে শ্রদ্ধা জানাতে রাজ্য সরকার আজ, সরকারি কার্যালয়গুলিতে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
কালীপুজোর রাতে গোটা রাজ্যে নেমে আসে অন্ধকার। প্রয়াত হন রাজ্যের বর্ষীয়ান মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়। ৭৫ বছরে সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের জীবনাবসান। সকাল ১০টা থেকে মরদেহ থাকবে রবীন্দ্রসদনে। রবীন্দ্রসদন থেকে মরদেহ আসবে বালিগঞ্জের বাড়িতে।
সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের মৃত্যুতে শোকবিহ্বল মুখ্য়মন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবারই তিনি বলেছেন, “সুব্রতদার দেহ আমার পক্ষে দেখা সম্ভব নয়।” বৃহস্পতিবার এসএসকেএম হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। রাত ৯ টা ২২ মিনিটে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন সুব্রত। ২৫ অক্টোবর থেকে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন তিনি। রাতে পিস ওয়ার্ল্ডেই রাখা ছিল মন্ত্রীর দেহ। পিস ওয়ার্ল্ড থেকে দেহ নিয়ে যাওয়া হবে রবীন্দ্র সদনে।
সকাল ১০টা-দুপুর ২টো পর্যন্ত রবীন্দ্রসদনে শেষ শ্রদ্ধা জানানো হবে। দুপুর ২টোর পর বাড়ি নিয়ে যাওয়া হবে দেহ। কেওড়াতলা মহাশ্মশানে প্রয়াত রাজনীতিকের শেষ কৃত্য। আজ, শুক্রবার সরকারি দফতরে অর্ধনমিত থাকবে জাতীয় পতাকা। প্রয়াত মন্ত্রীর শ্রদ্ধায় রাজ্য সরকারের এই সিদ্ধান্ত।