Suvendu Adhikari: পায়ে হেঁটে মাতঙ্গিনী থেকে গান্ধী মূর্তি, জনসংযোগে জোর শুভেন্দুদের
BJP in West Bengal: মাতঙ্গিনী হাজরা থেকে গান্ধী মূর্তির পাদদেশে হেঁটেই পৌঁছলেন শুভেন্দু অধিকারী। আর এই স্বল্প যাত্রাপথে সরাসরি জনসংযোগের সুদূরপ্রসারী কৌশলের সূচনা করলেন।
সৌরভ দত্ত
বামেদের একের পর এক সভায় যে পরিমাণ ভিড় হচ্ছে, তা নিয়ে বেশ ইতিবাচক কথা শোনা গিয়েছে তৃণমূল মুখপাত্রর গলায়। আর বুধবার বিজেপি শিবিরও নেমে পড়ল জনসংযোগে। পদ্ম বিধায়কদের সঙ্গে নিয়ে জনসংযোগে নামলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। বিধানসভা থেকে বেরিয়ে সোজা চলে গেলেন শহরের প্রাণকেন্দ্রে চলা নিয়োগপ্রার্থীদের অবস্থান মঞ্চে। আন্দোলনকারীদের সঙ্গে শুধু দেখা করাই নয়, মাতঙ্গিনী হাজরা থেকে গান্ধী মূর্তির পাদদেশে হেঁটেই পৌঁছলেন তিনি। আর এই স্বল্প যাত্রাপথে সরাসরি জনসংযোগের সুদূরপ্রসারী কৌশলের সূচনা করলেন। কখনও বাসযাত্রীদের উদ্দেশে হাত নাড়লেন… তো কখনও একের পর এক কেলেঙ্কারির প্রেক্ষিতে সরাসরি যাত্রীদের বললেন, ‘আর কবে জাগবেন!’ ফুটপাথের ধারে তরুণ প্রজন্মকে বললেন, ‘ঘুঘনি-ঝালমুড়ি বেঁচো না ভাই!’
বুধবার বিধানসভার অধিবেশন শেষে প্রথমেই মাতঙ্গিনী হাজরা মূর্তির পাদদেশে এসএসসি গ্রুপ-সি, গ্রুপ ডি, রাজ্য গ্রুপ-ডি, আপার প্রাইমারির আন্দোলনকারীদের নিয়োগ প্রার্থীদের সঙ্গে দেখা করেন তিনি। প্রথমে আন্দোলনকারীদের কীসের দাবিতে আন্দোলন, তা শোনেন। আর শোনার ফাঁকেই শাসক শিবিরকে নিশানা করে একের পর এক খোঁচা দিতে থাকেন। আন্দোলনকারীদের প্রতি বিরোধী দলনেতার বক্তব্য, নিয়োগে অনিয়মের নথি তাঁর হাতে তুলে দিন আন্দোলনকারীরা। আইনি সাহায্যের পাশাপাশি সবরকম সহযোগিতা মিলবে। প্রধান বিরোধী দল হিসাবে যে তাঁরা অবস্থান মঞ্চে এসেছেন, তা জানাতেও ভুললেন না। জানতে চাইলেন, পুজোর মধ্যেও আন্দোলন চলবে কি না? সদর্থক আশ্বাস পাওয়ার পর জানিয়ে দিলেন, পুজোর সময় তিনিও আন্দোলনকারীদের সঙ্গে অবস্থান মঞ্চ ভাগ করে নেবেন।
এই সব কথাবার্তার ফাঁকে কখনও নিয়োগের দাবি সম্বলিত পোড়া রুটির হাতে তুলে নিলেন… তো কখনও আন্দোলনকারীদের কারও সন্তানকে কোলে তুলে নিলেন। এ সব ফ্রেমের দাম ভালই জানে বঙ্গ রাজনীতি। আর সে সব ফ্রেমের জন্ম দিতে দিতেই পৌঁছন গাঁধী মূর্তির পাদদেশে। যেখানে সাড়ে পাঁচশো দিনের উপরে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন এসএসসি নবম, দশম, একাদশ, দ্বাদশ শ্রেণির নিয়োগপ্রার্থীরা। মাস দুয়েক আগে ক্যামাক স্ট্রিটে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। মাস দুয়েক পরেও সমস্যার সমাধান যে হয়নি, তা বিরোধী দলনেতাকে জানান গান্ধী মূর্তির পাদদেশে আন্দোলনকারীরা। সটান কটাক্ষ করতেও দেরি করেননি শুভেন্দু। সেই সঙ্গে আগামী আটচল্লিশ ঘণ্টার মধ্যে পাঁচ প্রতিনিধির সঙ্গে নিজামে তাঁর অফিসে বৈঠক করবেন বলে বলেন বিরোধী দলনেতা।
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার ধর্মতলার ইনসাফ সভার চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যেই বিজেপি বিধায়ক দলের এই আকস্মিক কর্মসূচি। আর সেই মতো বিধানসভা থেকে বাসে করে মাতঙ্গিনী হাজরার মূর্তি আসা হোক বা মাতঙ্গিনী হাজরা থেকে হেঁটে গান্ধী মূর্তির পাদদেশ যাত্রা হোক… সব মিলিয়ে এর মধ্যে কি বঙ্গ বিজেপির জনসংযোগের নতুন কৌশল লুকিয়ে? উত্তর মিলবে যথা সময়ে।