রায়গঞ্জ: রাত পোহালেই ছিল ভোট (Panchayat Election 2023)। শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি চলছে ভোট কেন্দ্রে। পৌঁছে গিয়েছেন ভোট কর্মীরা। আচমকা, দরজায় আওয়াজ। চিৎকার-চেঁচামেচি। দরজা কার্যত ঠেলে খুলে ফেলা হল। ঘরে ঢুকল ভোট লুটেরারা। গভীর রাত থেকে শুরু হল বোমামাজি। তারপর গতকাল ভোটের দিনও দিনভর বোমাবাজির মাঝে ভোট নিয়েছেন সুপ্রিয় নন্দী। তাঁর ডিউটি পড়েছিল উত্তর দিনাজপুরের ইটাহার ব্লকের একটি বুথে। টিভি-৯ বাংলায় শোনালেন সেই ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা।
ভগবানের কৃপা যে ওখান থেকে বেঁচে ফিরতে পেরেছি। ভোটের আগের দিন রাতে আমরা তখন সবে শুয়েছি। ঘড়িতে রাত তিনটে বাজে। একজন এসে লাথি মেরে দরজাটা ভেঙে দিল। সেই আওয়াজেই আমরা উঠে পড়ি। ঘরে ঢুকেই ওরা ব্যালট চাইল। সঙ্গে সঙ্গেই ওরা প্যাকেট খুলে গ্রাম পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতির ব্যালট ওরা লুঠ করে নিয়ে চলে গেল। তারপরই শুরু হল বোমাবাজি। আমাদের সঙ্গে একজন হোম গার্ড ছিলেন। এদিকে ঘটনা দেখে তিনিও ভয়ে কাঁপছেন। কিন্তু আমরা তো গিয়েছি তাঁরই ভরসায়। এদিকে তিনি এসে আমাদের পিছনে মুখ লুকাচ্ছেন।
কাল তো সকাল থেকে ভোট চলল। বিকালের দিকে কিছু লোক এসে আমাদের কাছ থেকে কিছু কাগজ চাইতে শুরু করে। কিন্তু, আগের দিন অনেক কাগজ চুরি হয়ে গিয়েছিল। তাই প্রিসাইডিং অফিসার তা দেখাতে পারেননি। তখনই বুথের মধ্যে ভয়ঙ্কর সংঘর্ষ শুরু হয়ে যায়। এরপরের অভিজ্ঞতা আমি ভাষায় প্রকাশ করতে পারব না। আমাকে ঘরের মধ্যে বন্দি করা হয়। চারদিক থেকে দরজা-জানলা সব বন্ধ করে দেওয়া হয়। বাইরে বোমাবাজি চলতে থাকে। সাড়ে তিনটে থেকে আমি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানোর চেষ্টা করি। তাঁরা শুধু বলতে থাকেন আপনারা অপেক্ষা করুন। ফোর্স পাঠানো হচ্ছে। এদিকে তখন কয়েক হাজার লোক আমাদের ঘিরে রেখেছে। অবশেষে বিকাল সাড়ে ৫টা নাগাদ বাহিনী আসে।