কলকাতা: সাইবার প্রতারণায় দুষ্কৃতীদের মূল হাতিয়ার হয়ে উঠছে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা এআই (AI)। এআই ব্যবহার করেই বাড়ছে আধার এনাবেলড পেমেন্ট সিস্টেম বা এইপিএস (AEPS) প্রতারণা। আর তাতেই ভরতপুর, আলওয়ার বা জামতাড়া নয়, সাইবার প্রতারণার হটস্পট হয়ে উঠছে এই রাজ্য বাংলা। গত তিন বছরের সাইবার প্রতারণার তথ্য ঘেঁটে এ রাজ্যের অন্তত ৮ থেকে ১০টি জায়গাকে চিহ্নিত করা হয়েছে সাইবার প্রতারণার হটস্পট হিসাবে। সাইবার বিশেষজ্ঞ এবং সাইবার নিরাপত্তা নিয়ে যাঁরা কাজ করেন, তাঁদের আশঙ্কা, খুব দ্রুতই হয়ত এই ভরতপুর, জামতাড়ার মতো কুখ্যাত হয়ে উঠতে পারে রাজ্যের এই ছোট ছোট জনপদগুলো।
হটস্পট হিসাবে চিহ্নিত হয়েছে মালদহ, নদিয়া, মুর্শিদাবাদ, কলকাতা, হাওড়া, পূর্ব বর্ধমান, পশ্চিম বর্ধমান, ঝাড়গ্রামের একাধিক এলাকা। তবে অপরাধের এই মানচিত্র যদি তৈরি করা যায়, দেখা যাবে বেশির ভাগ জায়গাই হয় আন্তর্জাতিক সীমান্ত ঘেঁষা কিংবা আন্তরাজ্য সীমানা ঘেঁষা। আর্টিফিশিয়াল ইন্টালিজেন্স নির্ভর সার্চে উঠে এসেছে এই তথ্য। গত তিন বছর ধরে সাইবার প্রতারণার উৎস খোঁজ করতে গিয়েই উঠে এসেছে এই তথ্য।
আইআইটি কানপুর ও সাইবার নিরাপত্তা সংস্থা ফিউচার ক্রাইম রিসার্চ ফাউন্ডেশন যৌথ উদ্যোগে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স নির্ভর একটি সার্চ ইঞ্জিন ও ডেটাবেস তৈরি করেছে। সাইবার প্রতারণা, সাইবার অপরাধ সংক্রান্ত এই ডেটাবেস থেকে পাওয়া সাম্প্রতিক অতীতের সাইবার অপরাধ এবং প্রতারণার উৎস বিশ্লেষণ করতে গিয়ে বাংলার এই জায়গাগুলির নাম উঠে এসেছে। বিশেষজ্ঞরা ভবিষ্যতের ভরতপুর বা জামতাড়া হিসাবে চিহ্নিত করেছেন এই জায়গাগুলিকে।
সবথেকে তাৎপর্যপূর্ণ হল, যে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা কৃত্রিম মেধাকে ব্যবহার করে অপরাধীদের শনাক্ত করা এবং অপরাধ দমনের চেষ্টা চলছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, সেই কৃত্রিম মেধাকে ব্যবহার করেই একইসঙ্গে বাড়ছে প্রতারণার বহরও। আধার এনাবেলড পেমেন্ট সিস্টেম বা এইপিএস সামনে রেখে যে সমস্ত প্রতারণার অভিযোগ উঠছে, সেখানে প্রতারকরা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের ব্যাপক ব্যবহার করছে বলে বিশেষজ্ঞদের ধারণা।
এআই ব্যবহার করেই দ্রুততার সঙ্গে লক্ষ লক্ষ বায়োমেট্রিক স্ক্যানের মধ্যে থেকে মিল খুঁজে নেওয়া হচ্ছে আধারের মালিকের। অল্প বয়সে টাকা রোজগারের আশায় ১৮ থেকে ৩০ বছর বয়সী অনেকেই জেলার প্রত্যন্ত গ্রামগুলিতে যোগ দিচ্ছে প্রতারণা চক্রে। সাইবার এক্সপার্ট সাম্যজিৎ মুখোপাধ্যায় বলেন, “যারা টেকনিকাল কাজ করে তারা কিন্তু কখনওই সামনে আসবে না। ব্যাকএন্ড থেকেই কাজটা করে দেবে। যারা ধরা পড়ছে, তাদের কাজে লাগানো হচ্ছে ডেটা সংগ্রহ করার জন্য।”