কলকাতা: একশো দিনের কাজের বকেয়া টাকা আদায়ের ইস্যুই এখন বড় অস্ত্র তৃণমূলের। বকেয়া আদায়ের দাবিতে দিল্লির বুকে দু’দিনের আন্দোলনের পর এবার বাংলাতেও আন্দোলনের ঝাঁঝ বাড়াচ্ছেন তৃণমূলের অঘোষিত ‘সেকেন্ড ম্যান’ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। দিল্লিতে গিয়ে কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী গিরিরাজ সিংয়ের দেখা মেলেনি। দেখা মেলেনি তাঁর ডেপুটি সাধ্বী নিরঞ্জন জ্যোতিরও। তাই এবার রাজ্যপালের সাক্ষাৎ চান অভিষেকরা। হুঙ্কার দিয়েছেন, তৃণমূলের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে রাজ্যপাল বোস দেখা না করা পর্যন্ত তিনি রাজভবনের বাইরেই অপেক্ষা করবেন। কাল সারারাত কাটিয়েছেন রাজভবনের বাইরে তৈরি হওয়া অবস্থান মঞ্চেই।
রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে, দলের সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ২৬ দিনের অনশন মঞ্চের স্মৃতিই যেন উস্কে দিলেন অভিষেক। প্রায় দু’দশক আগে মমতাও এমনই একটা মঞ্চ বেঁধেছিলেন ধর্মতলায়। সেবারও ছিল প্রান্তিক মানুষজনের দাবি-দাওয়া। সিঙ্গুরের অনিচ্ছুক কৃষকদের জমি ফেরানোর দাবিতে অনশনে বসেছিলেন মমতা। আর কাল, অভিষেকও ঘোষণা করে দিলেন যতক্ষণ না বাংলার ‘বঞ্চিতদের’ ইস্যুতে বোস দেখা করবেন, তাঁদের ধরনা চলতে থাকবে।
দিল্লির পর এবার বাংলার মাটিতে আন্দোলনে অভিষেক। দাবি, একশো দিনের কাজে বাংলার ‘বঞ্চিতদের’ বকেয়া টাকা আদায়। তৃণমূলের দাবি, বাংলার এই ‘বঞ্চিতদের’ সংখ্যা প্রায় ২০ লাখ। আর এই ইস্যুকে হাতিয়ার করেই লাগাতার অবস্থান বিক্ষোভে সামিল তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্যায়।
চব্বিশে দিল্লির তখতের মহারণের আগে একশো দিনের কাজে বকেয়া টাকাই এখন বড় অস্ত্র তৃণমূলের কাছে। এই অস্ত্রে শান দিয়েই এবারের পঞ্চায়েত ভোটে ব্যাপক সাফল্য পেয়েছে তৃণমূল শিবির। রাজনৈতিক মহলের একাংশ মনে করছে, তাই এবার লোকসভা ভোটের আগেও এই অস্ত্রেই আরও বেশি করে শান দিতে চাইছে রাজ্যের শাসক দল। একশো দিনের কাজের টাকায় বাংলার ‘ভুক্তভোগীদের’ ইস্যুকে হাতিয়ার করে মাটি কামড়ে পড়ে থেকে লড়াই শুরু করে দিয়েছে ঘাসফুল শিবির।
রাজভবনের বাইরে তৈরি হয়েছে অবস্থান মঞ্চ। কাল সারারাত রাজভবনের বাইরেই কাটিয়েছেন অভিষেক। বাড়ি ফেরেননি। ঘোষণা করে দিয়েছেন, যতক্ষণ না রাজ্যপাল তাঁদের সঙ্গে দেখা করছেন, ততক্ষণ তৃণমূলের এই ধরনা-অবস্থান কর্মসূচি চলবে। গতরাতের পর আজ বেলা ১১টা থেকে আবার মঞ্চে ঝাঁঝ বাড়াবেন অভিষেক ও তৃণমূলের অন্যান্য প্রথম সারির নেতারা।