কলকাতা: করোনা (Coronavirus) পরবর্তী সময়ে রক্তের আকাল দেশে। ব্লাড ব্যাঙ্কগুলিও (Blood Bank) রক্তের অভাবে দীর্ঘদিন ধরেই ধুঁকছিল। তার উপর বিরল গ্রুপের রক্তের প্রয়োজন হলে কপালে দুশ্চিন্তার ভাঁজ আরও চওড়া হচ্ছিল রোগী পরিজনদের। এরমধ্যে এক বিরল গ্রুপের রক্ত ‘অপচয়ের’ অভিযোগ উঠছে কলকাতার এক ব্ল্যাড ব্যাঙ্কের (Blood Bank in Kolkata) বিরুদ্ধে। মেয়াদ পেরোতে আর ১ মাসেরও কম সময় থাকলেও প্রয়োজন হওয়ার পরও সেই রক্ত গেল না রোগীর কাছে। এ খবর প্রকাশ্যে আসতেই তা নিয়ে বিস্তর চাপানউতর শুরু হয়েছে স্বাস্থ্য মহলে।
বিরল বম্বে ব্লাড গ্রুপের রক্ত সচরাচর পাওয়া যায় না। সেই রক্তই এখন সরকারি ব্লাড ব্যাঙ্কের সৌজন্যে অপচয়ের সম্মুখীন! সমন্বয়ে ঘাটতি নাকি স্রেফ গাফিলতি? কী কারণে এই পরিস্থিতি? উঠছে প্রশ্ন। মুমূর্ষু রোগীর Oh+ বা বিরল বম্বে ব্লাড গ্রুপের রক্ত প্রয়োজন শুনলেই নাভিশ্বাস ওঠার জোগাড় হয় ব্লাড ব্যাঙ্ক পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত স্বাস্থ্যকর্মীদের। সারা দেশে এই বিরল গ্রুপের রক্তের অধিকারী মেরেকেটে ১০০ জন। স্বাভাবিক ভাবে এমন মহার্ঘ গ্রুপের রক্ত যাতে অহেতুক শরীর থেকে বার না করা হয়, সে বিষয়ে সচেষ্ট থাকে রাজ্যের রক্ত সঞ্চালন পর্ষদ। আর এখানেই আরেকবার কাঠগড়ায় মানিকতলা সেন্ট্রাল ব্লাড ব্যাঙ্ক। গত ১২ নভেম্বর এক দাতার কাছ থেকে বম্বে ব্লাড গ্রুপের রক্ত সংগ্রহ করে মানিকতলা সেন্ট্রাল ব্লাড ব্যাঙ্ক। ১৭ নভেম্বর আগ্রার বাসিন্দা এক তরুণীর ওই রক্তের প্রয়োজন হয়। কিন্তু, সেই রক্ত তরুণীকে না দিয়ে আরেকজন বম্বে গ্রুপের রক্তদাতার কাছে রক্ত টেনে আগ্রা পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়।
সূত্রের খবর, সেন্ট্রাল ব্লাড ব্যাঙ্কে পড়ে থাকা বম্বে ব্লাড গ্রুপের মেয়াদ ১৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত। এর মধ্যে বিরল গ্রুপের রক্ত কাজে না লাগলে তা নষ্ট হয়ে যাবে। একইসঙ্গে একজন দাতা রক্ত দেওয়ার পর তিনমাস রক্ত দিতে পারেন না। সেখানে সেই রক্ত প্রয়োজন হওয়ার পরেও কেন দেওয়া হল না তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। এই বিরল রক্ত তো Oh+ গ্রুপের রোগীর কাছে কার্যত সঞ্জীবনী। সমন্বয়ের অভাবে এই গাফিলতির দায় কার? অতি বিরল গ্রুপের রক্ত নিয়ে এ ধরনের গাফিলতি কতখানি যুক্তিযুক্ত? স্বাস্থ্য অধিকর্তার বক্তব্য, রক্তের নমুনা ক্রসম্যাচে না মিললে অনেক সময় তা রোগীকে দেওয়া যায় না। কিন্তু সেন্ট্রাল ব্লাড ব্যাঙ্কে পড়ে থাকা রক্তের তো ক্রসম্যাচই হয়নি। এ প্রসঙ্গে সমাজকর্মী দীপঙ্কর মিত্র বলেন, “আমরা তো জানতামই না মানিকতলা সেন্ট্রাল ব্লাড ব্যাঙ্কে রক্ত আছে। স্বাস্থ্য দফতরের ওয়েবসাইটেও সেই তথ্য নেই।”