কলকাতা: পাঁচ দফা দাবি। আর এই পাঁচ দফা দাবিতে অনড় থেকেই কালীঘাটে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাসভবনে গিয়েছিলেন জুনিয়র ডাক্তাররা। সেখানে বৈঠক শেষে রাতে মুখ্যমন্ত্রী জানান, প্রথম দাবিটি সিবিআইয়ের তদন্তাধীন। বাকি ৪টি দাবির মধ্যে তিনটি দাবি মানা হয়েছে। তার মধ্যে রয়েছে কলকাতার পুলিশ কমিশনারের পদ থেকে বিনীত গোয়েলকে সরানো। সোমবারের সেই বৈঠকের পর মঙ্গলবার বিকেলেই সরানো হয়েছে বিনীত গোয়েলকে। কিন্তু, কলকাতার সিপিকে সরানোর দাবি কি সহজেই মেনে নিয়েছে রাজ্য সরকার? বিনীত গোয়েলকে এদিন সরানোর পর আন্দোলনকারী জুনিয়র ডাক্তাররা বলছেন, কলকাতার সিপিকে সরানোর জন্য তাঁরা তাঁদের যুক্তি তুলে ধরেছিলেন। উঠেছিল রিজওয়ানুর রহমানের প্রসঙ্গও।
এদিন টিভি৯ বাংলাকে একান্ত সাক্ষাৎকারে দুই জুনিয়র ডাক্তার পরিচয় পান্ডা ও অমৃতা ভট্টাচার্য গতকালের বৈঠকে সিপিকে নিয়ে আলোচনার প্রসঙ্গ তুলে ধরেন। অমৃত বলেন, “গতকাল মুখ্যমন্ত্রী আমাদের প্রথমেই বলেন, তিনি আন্দোলনকে সমর্থন করেন। তিনি জানান যে এই ৫টা দাবি নিয়ে আলোচনা করা যায়।”
দুই জুনিয়র ডাক্তার জানান, সিপির পদ থেকে বিনীত গোয়েলকে সরানো নিয়ে তাঁরা নিজেদের যুক্তি দেন। পাল্টা রাজ্যের তরফে যুক্তি দেওয়া হয়। পরিচয় পান্ডা বলেন, “রাজ্যের তরফে আলোচনায় বলা হয়, ডিসি নর্থ প্রথমে ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন। তাহলে সিপিকে কেন সরানোর দাবি জানানো হচ্ছে। ১৪ অগস্টের ঘটনাকে পুলিশের ব্যর্থতা বলে মানতে চাইছিল না রাজ্য। আমরা বলি, সুপ্রিম কোর্ট বলেছে ব্যর্থ। পুলিশই মেনে নিয়েছে ১৪ অগস্টের ব্যর্থতার কথা।” তাহলে সেই ব্যর্থতার দায়ভার সিপির উপর বর্তায় বলে যুক্তি তুলে ধরেন জুনিয়র ডাক্তাররা।
কয়েকদিন নবান্ন থেকে মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, “কলকাতার পুলিশ কমিশনার আমার কাছে অনেকবার এসেছেন পদত্যাগের জন্য। সামনে পুজো। আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বে যিনি থাকবেন, তাঁকে তো জানতে হবে কোন পাড়ায় কী পুজো, কী থিম, কোথায় কত পুলিশ পোস্টিং রয়েছে?” গতকালের বৈঠকে পুজোর মুখে সিপিকে সরানোর প্রসঙ্গে উঠে আসে রিজওয়ানুর রহমানের ঘটনার কথা।
২০০৭ সালে রিজওয়ানুর রহমানের মৃত্যু ঘিরে তৎকালীন পুলিশ কমিশনার প্রসূন মুখোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন বিরোধীরা। শেষপর্যন্ত পুজোর সময়ই বদলি করা হয়েছিল প্রসূন মুখোপাধ্যায়কে। গতকালের বৈঠকে উঠেছিল প্রসূন মুখোপাধ্যায়কে সরানোর প্রসঙ্গ। অমৃতা বলেন, “কলকাতা পুলিশ যথেষ্ট সক্ষম। একজন সিপি আছেন বলে পুজোর ভিড় দক্ষতার সঙ্গে সামলাচ্ছেন পুলিশকর্মীরা, এমনটা নয়।”
দুই জুনিয়র ডাক্তার জানান, সিপিকে সরানো নিয়ে তাঁদের যুক্তি শোনার পর মুখ্যমন্ত্রী আধিকারিকদের নিয়ে উঠে যান। কিছুক্ষণ পর তাঁরা ফিরে এসে জানান, সিপিকে সরানো হবে।
ডিসি সেন্ট্রাল ইন্দিরা মুখোপাধ্যায়কেও সরানোর দাবি জানিয়েছিলেন জুনিয়র ডাক্তাররা। তাঁরা জানান, সাংবাদিক বৈঠকে ভুল তথ্য তুলে ধরেছেন ডিসি সেন্ট্রাল। তবে কেন তাঁদের এই দাবি মানা হয়নি, তা তাঁরা জানেন না বলে জানালেন দুই জুনিয়র ডাক্তার।