কলকাতা: ভোটের আগে মোট ৩৯ জন পুর প্রশাসককে সরাল নির্বাচন কমিশন (Election Comission)। কলকাতা-সহ বিধাননগর, শিলিগুড়ি, চন্দননগর, আসানসোল-সহ রাজ্যের ৩৯ জন পুরপ্রশাসককে অপসারণ করা হয়েছে।
পুরনিগম ও পুরসভার প্রশাসক মণ্ডলীতে রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের রাখা যাবে না। ভোটের আদর্শ আচরণবিধি যতদিন কার্যকর থাকছে ততদিন এই নির্দেশ বলবৎ থাকবে। এই মর্মে রাজ্যের মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি দিয়ে পুরনিগম ও পৌরসভার প্রশাসক হিসাবে রাজনৈতিক ব্যক্তিদের সরানোর জন্য নির্দেশ দিয়েছিল নির্বাচন কমিশন। সোমবার সকাল ১০টার মধ্যে নির্দেশ কার্যকর করার কথা বলা হয়েছিল। নির্বাচন নিরপেক্ষ ও বিশ্বাসযোগ্য করতেই কমিশনের এই সিদ্ধান্ত বলে জানানো হয়ছে। এই প্রেক্ষিতে নবান্নের তরফে সংশ্লিষ্ট পুর প্রশাসকদের সরিয়ে দেওয়া হল।
জানা গিয়েছে, কমিশনের তরফে একটি তালিকা তৈরি করা হয়েছে। যেখানে তিনটি কলাম জুড়ে রাজ্যের পুরপ্রশাসকদের নাম রয়েছে। এঁদের মধ্যে কারা কারা আসন্ন বিধানসভা ভোটে প্রার্থী হয়েছেন এবং কারা কারা প্রার্থী তালিকায় নেই অথচ রাজনৈতিকভাবে যুক্ত তাঁদের একটি তালিকা করে পুর প্রশাসকের পদ থেকে সরে যেতে নির্দেশ দেওয়া হয়। এর মধ্যে প্রার্থী তালিকায় থাকা ফিরহাদ হাকিম ইতিমধ্যে কলকাতা পুরসভার প্রশাসক পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন। এদিকে একুশের ভোটে অংশ নেওয়া এবং পুরসভার প্রশাসকের পদে থাকা অতীন ঘোষ, দেবাশিস কুমার প্রমুখকেও পদ ছাড়তে নির্দেশ দিয়েছে কমিশন। এছাড়া বিধানসভা ভোটে প্রার্থী নন অথচ, রাজনৈতিকভাবে প্রশাসনিক পদে বসা অমরনাথ চ্যাটার্জি, রতন দে প্রমুখকেও সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। সব মিলিয়ে রাজ্যের সমস্ত পুরসভা থেকে মোট ৩৯ জন পুর প্রশাসককে অপসারণ করল কমিশন।
আরও পড়ুন:অনুকরণ করে ইস্তাহার, বিজেপির সবই জুমলা, কটাক্ষ তৃণমূলের
প্রসঙ্গত, গত বছরের এপ্রিল মাসে রাজ্যের পুরসভাগুলিতে নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু করোনার কারণে নির্বাচন করানো সম্ভব হয়নি। যদিও পুরসভার পাঁচ বছর পূরণ হয়ে যাওয়ায় সবকটি পুরসভাতেই মেয়রদের বদলে প্রশাসক গঠন করা হয়। পুরপ্রধানদের প্রশাসনিক বোর্ডের চেয়ারম্যান করা হয়। কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিমকেও প্রশাসনিক বোর্ডের চেয়ারম্যান করা হয়েছিল। এর বিরোধিতায় রাজ্য বিজেপির নেতারা হাইকোর্টে মামলা করেছিল। কিন্তু বিজেপির তরফ থেকে দায়ের করা সেই মামলা খারিজ হয়ে যায়। এবার নির্বাচনের কমিশনের নির্দেশ অনুযায়ী প্রশাসক মণ্ডলী থেকে সমস্ত রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের সরানো হল। আর তাঁদের জায়গায় দায়িত্বে বসানো হচ্ছে রাজ্য সরকারের আধিকারিকদের।