শুভেন্দু হালদার ও দীক্ষা ভুঁইঞার রিপোর্ট
কলকাতা ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা: আর কয়েকদিন। নতুন বছরের জানুয়ারির আট তারিখ থেকে শুরু গঙ্গাসাগর মেলা। কাতারে-কাতারে পুণ্যার্থীর সমাগম হয় সেখানে। এ দিকে, বাংলাদেশের অশান্ত পরিস্থিতির প্রভাব পড়েছে এ রাজ্যেও। তাই কোনও রকম অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে আরও তৎপর রাজ্য সরকার। গঙ্গাসাগর মেলায় এবার নিরাপত্তা ইসরোর প্রযুক্তি। ইসরোর সাহায্যে স্যাটেলাইট ও জিপিএস ট্র্যাকিং-এর ব্যবস্থা। শুধু তাই নয় আইবি-কেও সতর্ক থাকার নির্দেশ।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশে সংখ্য়ালঘু হিন্দুদের উপর অত্যাচারের পর থেকে কখনও সেদেশে কট্টরপন্থী নেতা,কখনও বা প্রাক্তন সেনাপ্রধান কখনও আবার বিএনপি নেতারা বিতর্কিত মন্তব্য করেছেন। কেউ বলছেন কলকাতা দখলের কথা, কারও মুখে আবার উঠে এল ভারত দখলের প্রসঙ্গে। এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে গঙ্গাসাগর মেলা নিয়ে আরও তৎপর এ রাজ্যের প্রশাসন।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কী বলেছেন?
“বাস, ভেসেল, লঞ্চে জিপিএস ট্র্যাকিং-এর ব্যবস্থা করা হয়েছে। ভেসেলে স্যাটেলাইট ট্র্যাকিংয়ের ব্যবস্থাও থাকবে ইসরোর সাহায্যে। যাতে ইন্টারনেটের গন্ডগোল বা জিপিএস ট্র্যাকিংয়ের সমস্যা হলেও যাতে কোনও ভাবে কাজে অসুবিধা না হয় সেই কারণে ইসরোর সাহায্য নেওয়া হয়েছে।” এছাড়াও নজরদারি বাড়াতে নৌসেনাকে রাজ্যের ড্রোন ব্যবহারের পরমর্শ দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “গঙ্গাসাগরে আমাদের যে মেগা কন্ট্রোল রুম থাকবে আমাদের ব্যবহার করতে হবে।”
কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে?
এ দিকে, গতকাল মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পর এবারের মেলায় সব মিলিয়ে প্রায় পনেরো হাজার পুলিশ কর্মী মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সুন্দরবন জেলা পুলিশ। বিশেষ করে মেলায় আগত মহিলাদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে উইনার্স টিমকে বিশেষভাবে ব্যবহার করা হবে। থাকছে ক্যুইক রেসপন্স টিম। ট্রাফিক ম্যনেজমেন্টের জন্য আলাদা দল থাকবে। থাকবে বোম ডিসপোসাল স্কোয়্যাড। নদীপথেও স্পিডবোট এবং লঞ্চ দিয়ে নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করা হবে। থাকছে সিসিটিভি ক্যামেরা ও ড্রোন। সাদা পোশাকের পুলিশও মোতায়েন থাকবে। এছাড়াও উপকূল রক্ষী বাহিনী এবং বিএসএফকে সতর্ক করা হয়েছে রাজ্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে। মেলা চলাকালীন উপকূল রক্ষী বাহিনীর পক্ষ থেকে জলপথে ছোট জাহাজ, হোভারক্রাফ্টে করে নজরদারি চালানো হবে। এছাড়াও মেলা চলাকালীন গঙ্গাসাগরের উপর হেলিকপ্টার, এয়ারক্রাফ্ট এবং ড্রোনের মাধ্যমে উপকূল রক্ষী বাহিনী নজরদারি চালানোর কথা রয়েছে।
এ বারের সাগর মেলায় আসা পুণ্যার্থীদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষাকে সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। মেলায় আসা ভিন রাজ্যের তীর্থযাত্রীদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে আগামী ১০ জানুয়ারি থেকে ১৫ই জানুয়ারি মৎস্যজীবীদের মাছ ধরতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে প্রশাসন। মেলা প্রাঙ্গণে মোতায়েন রাখা হচ্ছে এনডিআরএফ, এসডিআরএফ এবং সিভিল ডিফেন্সের দলও।