কলকাতা: কলকাতা হোক বা জেলা। চিত্র সব জায়গায় প্রায় এক। স্কুলগুলির অ্যাকাউন্টে ঢুকছে না টাকা। বছর শেষে শিক্ষাবর্ষের ৭৫ শতাংশ টাকাই পেল না রাজ্যের স্কুলগুলি। যার জেরে বিপাকে তারা। পড়াশোনা চালাতে এনজিও (NGO)-র শরণাপন্ন হতে হচ্ছে স্কুলগুলিকে। সূত্রের খবর, পুকুরের মাছ বিক্রি করে চক ডাস্টার কিনছে স্কুল কর্তৃপক্ষ। কোথাও আবার নিজেদের মধ্যে চাঁদা তুলে চক-ডাস্টার-রেজিস্ট্রার খাতা কিনছে তারা। শুধু কী তাই! চুক্তিভিত্তির কর্মীদেরও টাকা দিতে পারছে না অনেক স্কুল। শিক্ষাদফতর যখন এর দায় কেন্দ্রের দিকে চাপাতে চাইছে। সেই সময় প্রধান শিক্ষক সংগঠনেরই এক নেতার দাবি, লক্ষ্মীর ভাণ্ডার-পুজোর অনুদান সবই বাড়ছে। কিন্তু স্কুলের জন্য টাকা বরাদ্দ হচ্ছে না?
বস্তুত, সরকারি স্কুলের রক্ষণাবেক্ষণের জন্য কম্পোজিট গ্রান্ট দেয় রাজ্যের শিক্ষাদফতর। কম্পোজিট গ্রান্ট বাবদ স্কুল বছরে পায় ১ লক্ষ টাকা পায়। কেন্দ্র ও রাজ্য যৌথভাবে এই টাকা পাঠায়। এ বছর স্কুলগুলো পেল মাত্র ২৫ হাজার টাকা। ঘাটতি ৭৫ হাজার টাকা। এই ঘাটতি কে পূরণ করবে? ঘাটতি মেটাতে কার্যত স্কুলগুলি এলাকাবাসীর কাছে হাত পাতছে। অর্থাৎ ডোনার খুঁজছে তারা। এনজিওর শরণাপন্ন হচ্ছে।
বাঁকুড়ার স্কুলের এক শিক্ষক বলেন, “বেসরকারিকরণের পথে সরকার কি ঠেলছে? গরিব মানুষের সব ছেলেমেয়ে। তারা কোথায় যাবে? আমরা ধার-দেনা করছি। যে দোকান থেকে কিনতাম চক-ডাস্টার সেখানে গিয়ে বলছি কিছুদিন ধার দাও। এটা কতদিন চলবে?” প্রধান শিক্ষক সংগঠনের নেতা চন্দন মাইতি বলেন, “লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের টাকা পাচ্ছে। পুজো কমিটি বর্ধিত হারে টাকা পাচ্ছে। স্কুল গুলির টাকা এখনও ঢোকেনি। শিক্ষা দফতর যদি এখনও না ভাবে অব্যবস্থা তৈরি হবে।” অপরদিকে, কেন্দ্রীয় শিক্ষাপ্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার বলেন, “নিয়োগে দুর্নীতি হয়েছে। আর এখন কম্পোজিট গ্রান্ট না দিয়ে স্কুলগুলি যাতে বন্ধ হয়ে যায় সেই চেষ্টা করছে।” যদিও, রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর দাবি, “কেন্দ্রের কাছ থেকে ১২০০ কোটি পাওনা রয়েছে। সেটা এলে সুবিধা হবে। এই টাকা অবিলম্বে কেন্দ্রের দিয়ে দেওয়া উচিত। এটা শুধু দুর্ভাগ্যজনক নয়, এটা নিন্দনীয়।”