নয়াদিল্লি: রাজ্য সরকারের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসের সম্পর্ক নজর কেড়েছে রাজনৈতিক মহলের। বিশেষত জগদীপ ধনখড়ের আমলের সঙ্গে এই রাজ্যপালের আমলে তফাৎ স্পষ্ট। তা নিয়ে রাজ্যের বিরোধী দল বিজেপির রাজ্য নেতারা নিজেদের অসন্তোষ গোপন করেননি। কিন্তু এই পরিস্থিতির নাটকীয় পরিবর্তন ঘটে শনিবার বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের সঙ্গে রাজ্যপালের বৈঠকের পর। রবিবার রাজ্যপালের প্রধান সচিবের পদ থেকে নন্দিনী চক্রবর্তীকে সরানো হচ্ছে বলে সূত্র মারফত জানা গিয়েছে। প্রশাসনের অন্দরে কান পাতলে শোনা যায়, নন্দিনী রাজ্য সরকারের ঘনিষ্ঠ। এই পরিস্থিতিতেই রাজ্য রাজনীতিতে ফের গুঞ্জন শুরু হয়েছে রাজ্য সরকারের সঙ্গে তবে কী দূরত্ব বাড়াচ্ছেন রাজ্যপাল? সেই জল্পনা আরও জোরদার হয়েছে, রাজ্যপালের দিল্লি সফর ঘিরে। রবিবার গভীর রাতে দিল্লিতে পৌঁছেছেন পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল আনন্দ বোস। চাণক্যপুরীর বঙ্গভবনে উঠেছেন তিনি। সোমবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে সাক্ষাত হতে পারে রাজ্যপালের। রাজ্যপালের এই দিল্লি সফরের রাজনৈতিক তাৎপর্য খুঁজতে শুরু করে দিয়েছেন বিশ্লেষকরা।
রাজ্যপালের শপথ থেকে সরস্বতী পুজোর দিন ‘হাতেখড়ি’, সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজের অনুষ্ঠান থেকে বিধানসভার অধিবেশন- পর পর ঘটনায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের সঙ্গে রাজ্যপাল আনন্দ বোসের সুসম্পর্ক ফুটে উঠেছিল। ধনখড়ের মতো রাজ্যের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সরব হতেও দেখা যায়নি বোসকে। যা নিয়ে সুকান্ত মজুমদার, শুভেন্দু অধিকারীদের মতো বিজেপি নেতারা নিজেদের ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন। কিন্তু শনিবার সুকান্তের সঙ্গে ঘণ্টাখানেকের বৈঠকের পর পরিস্থিতির বদল ঘটে। সে দিন সন্ধ্যায় রাজভবনের পক্ষ থেকে কড় বিবৃতি দেওয়া হয় রাজ্যের পরিস্থিতি নিয়ে। এর পর রাজ্যপালের ব্যাপারে শুভেন্দু বলেছিলেন, “ট্রাকে ফিরে আসছেন।”
এর পরই সামনে আসে রাজ্যপালের প্রধান সচিবের পদ থেকে নন্দিনী চক্রবর্তীকে অপসারণের কথা। ১৯৯৪ সালের ব্যাচের আইএএস নন্দিনী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। নতুন রাজ্যপালের সঙ্গে রাজ্যে সুসম্পর্কের পিছনে নন্দিনীর ভূমিকা রয়েছে বলেও গুঞ্জন। নন্দিনীর ভূমিকা নিয়ে অভিযোগ করেছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। তাঁকে অপসারণের পরই রাজ্যপালের দিল্লিযাত্রা এবং শাহের সঙ্গে বৈঠক দিকে নজর রাখছে রাজনৈতিক মহল। এই দিল্লি সফরের পর রাজ্যপালের সঙ্গে রাজ্যের সম্পর্কে কী পরিবর্তন ঘটে সে দিকেও থাকবে নজর।