কলকাতা: কোভিড ভ্যাকসিনের টিকাদান প্রক্রিয়ার প্রথম দিন শেষে স্বস্তিতে রাজ্যের স্বাস্থ্য কর্তারা। তবে প্রত্যাশিতভাবেই অতি সামান্য কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার ঘটনাও লক্ষ্য করা গিয়েছে। গোটা রাজ্যে টিকাপ্রাপকদের তালিকায় এদিন ২০ হাজার ৭০০ জনের নাম ছিল। যাদের মধ্যে টিকা নিয়েছেন ১৫ হাজার ৭০৭ জন। মোট প্রাপকদের মধ্যে ১৪ জনের শরীরে অল্প-বিস্তর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা যায়। অন্যদিকে রাজধানী নয়া দিল্লিতেও ভ্যাকসিন নেওয়ার পর সামান্য পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যায় ৫১ জনের শরীরে।
তবে দিনের শেষে কোভিশিল্ডকে (Covishield) ‘কার্যত নিরাপদ’ বলে মান্যতা দিয়েছে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর। প্রথম দিনের টিকাকরণের পরে রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তী বলেন, “কোভিড ভ্যাকসিনে সাংঘাতিক পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নেই।”
রাজ্যের যে ১৪ জনের শরীরে কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা গিয়েছিল, তার মধ্যে একমাত্র বিধানচন্দ্র রায় হাসপাতালের পিঙ্কি সুর নামের এক নার্স অসুস্থ হয়ে পড়েন। এই প্রসঙ্গে অজয় চক্রবর্তী জানান, “বিকেল ৪টের সময় তিনি ভ্যাকসিন নেওয়ার পর অসুস্থ বোধ করেন এবং তাঁর একটা কাঁপুনি হয়। এরপর সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে পিঙ্কিদেবীকে ভর্তি করা হয় নীলরতন সরকার হাসপাতালে। সেখানে বিশেষজ্ঞরা সমস্ত রকম পরীক্ষা করেছেন। শরীরে রক্তচাপ এবং অক্সিজেনের মাত্রা পুরোপুরি স্বাভাবিক রয়েছে। তাঁর স্বামী অবশ্য জানিয়েছেন, ছোটবেলা থেকেই কিছু কিছু ড্রাগের ক্ষেত্রে তাঁর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হয়। তবে তিনি স্থিতিশীল রয়েছেন। ভয় পাওয়ার কোনও কারণ নেই।”
এই প্রসঙ্গে স্কুল অব ট্রপিক্যাল মেডিসিনের ফার্মাকোলজি বিভাগের প্রাক্তন বিভাগীয় প্রধান শান্তুনু ত্রিপাঠী বলেন, “এই ধরনের সমস্যা ভ্যাকসিন নেওয়ার পরে হতেই পারে। ড্রাগ অ্যালার্জির ইতিহাস থাকার কারণে একে প্রত্যাশিত বলা যেতে পারে। এটা ভ্যাকসিনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতেও পারে সেটাও আমরা খতিয়ে দেখছি। তবে ভয় পাওয়ার বা শঙ্কিত হওয়ার কোনও কারণ নেই।”
উল্লেখ্য, যে বাকি যে ১৩ জনের শরীরে এদিন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা যায় তাঁরা সকলেই সুস্থ রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে কয়েকজনের ক্ষেত্রে সামান্য মাথা ঘোরার ঘটনা দেখা যায়। তবে কাউকে এক ঘণ্টা, কাউকে বা দু’ঘণ্টা পর্যবেক্ষণে রেখে ছেড়ে দেওয়া হয়। তবে পিঙ্কি সুরকে আরও দু’দিন পর্যবেক্ষণে রেখে ছুটি দেওয়া হবে। স্বাস্থ্য অধিকর্তার দাবি, “১৫ হাজারের মধ্যে মাত্র ১৪ জনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া প্রমাণ করে দেয়, নজরদারিতে আমরা ভারতের মধ্যে অন্যতম শ্রেষ্ঠ।” একই সঙ্গে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার এই হারও অত্যন্ত স্বাভাবিক বলে দাবি করেছেন তিনি।