কলকাতা: রেফার নীতির বাস্তবায়ন নিয়ে এবার প্রশ্ন তুলল ছ’বছরের শিশুর চিকিৎসা পদ্ধতি। এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে খেলতে খেলতে প্লাস্টিকের সামগ্রী গিলে ফেলে মালদহের কালিয়াচকের ৬ বছরের শিশু মহম্মদ হামিম আনসারি। তাকে মালদহ মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যায় তার বাবা। চিকিৎসকেরা জানান শিশুর বুকে জল জমেছে। তবে সেই জল বের করা সম্ভব হয়নি। জল জমে নাকি পাথর হয়ে গিয়েছে, জানান ডাক্তাররা। এই চিকিৎসা মালদহ মেডিক্যাল কলেজে সম্ভব নয়। মালদহ থেকে শিশুকে এনআরএসে ভর্তি করেন শিশুর বাবা। গত ২৬ এপ্রিল থেকে ১৮ দিন এনআরএসে (NRS) চিকিৎসাধীন ছিল শিশু।
পরিবারের দাবি, দু’বার ব্রঙ্কোস্কোপি করানোর পর শিশু যে প্লাস্টিকের সামগ্রী গিলে ফেলেছে তা ধরা পড়লেও চিকিৎসা হয়নি। ১৮ দিন ধরে চিকিৎসা না হওয়ায় ছেলেকে নিয়ে বাড়ি চলে যান বাবা। বাড়ি ফিরে সন্তানের অসুস্থতা বাড়ছে দেখে আবার কলকাতামুখী হন বাবা। তবে এবার আর এনআরএস নয়। শনিবার এসএসকেএমের ইএনটি বিভাগে ছেলেকে দেখান। সোমবার শিশুর অস্ত্রোপচার হয়ে যায়। এখন স্থিতিশীল সে।
প্রশ্ন উঠছে, সরকারি পরিকাঠামোর উন্নতির দাবি সত্যি হলে ছ’বছরের শিশুর চিকিৎসা তৎপরতার সঙ্গে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ, এনআরএসে সম্ভব হল না কেন? কেন এভাবে ছেলেকে নিয়ে ঘুরতে হল বাবাকে? বাবা মহম্মদ হামিদুল হক বলেন, “এসএসকেএমে খুব ভাল পরিষেবা পেয়েছি। শনিবার এসেছিলাম। সোমবারের মধ্যে অপারেশন করে প্লাস্টিকের জিনিসটা বের করে দিলেন ডাক্তাররা। এমনকী এসএসকেএমে দু’বার ব্রঙ্কোস্কপিও হয়েছে। এখনও ডাক্তারবাবুরা পাথর জমার কথাও কিছুই বলেননি।” অন্যদিকে হামিদুল বলেন, এনআরএসেও ব্রঙ্কোস্কপি হয়েছে। একটা রিংয়ের মতো কিছু আটকে আছে বলেছেন চিকিৎসকরা। তবে তার চিকিৎসা এখানে সম্ভব হবে না বলেও জানান।
এসএসকেএমের স্পেশালিস্ট মেডিক্যাল অফিসার মৈনাক মৈত্র বলেন, “পেশেন্ট যখন প্রথম আমাদের কাছে আসে বলা হয় দেড় মাস ধরে ওর সর্দিকাশি কমছে না। পেশেন্টের থোরাক্সের সিটি স্ক্যান করাই। তাতে দেখি বাঁ দিকে ফুসফুসের কিছুটা অংশ কোলাপ্স হয়। আমাদের সন্দেহ হয়, কোনও ফরেন বডি সেখানে আছে। এরপর ভর্তি করি ব্রঙ্কোস্কপি করার জন্য। তাতেই দেখা সবুজ রঙের প্লাস্টিকের রাবারের ফরেন বডি। সেটা বের করা হয়েছে। এখন ও স্থিতিশীল।”