কলকাতা: তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্র (Madan Mitra) ডাক দিয়েছেন ‘SAY NO TO PG’। এসএসকেএমের পরিষেবা নিয়ে একের পর এক বিস্ফোরক অভিযোগ শাসকদলেরই বিধায়কের। যার প্রেক্ষিতে শনিবার দুপুরে সাংবাদিক বৈঠক এসএসকেএম কর্তৃপক্ষের। কিন্তু শুক্রবার রাতে তৃণমূল বিধায়কের মন্তব্যের পর এসএসকেএমে বেড না পাওয়ার ছবি কি বদলাল? কাটোয়ার কার্তিক দাসের ঘটনা তো অন্য কথাই বলছে। বৃহস্পতিবার গাছ থেকে তাল পাড়ার সময় বাঁ হাতে কাটারি পড়ে নবম শ্রেণির ছাত্র কার্তিকের শিরা ছিন্নভিন্ন হয়ে যায়। কার্তিককে নিয়ে স্থানীয় হাসপাতালে গেলে সেখান থেকে এনআরএসে রেফার করে দেওয়া হয়। আবারও এনআরএস থেকে রেফার এসএসকেএমের ট্রমা কেয়ারে। সেখানে ড্রেসিং করে রোগীকে বিদায় করা হয় বলে অভিযোগ। এই কার্তিকেরই ৭২ ঘণ্টা পর অপারেশনের দিন ধার্য হয়েছে। এসএসকেএমের চিকিৎসকরাই তা করবেন। অথচ নিয়ম অপারেশনের আগে রোগীকে ভর্তি করানো।
আপাতত বেড না পেয়ে গাছতলায় অপারেশনের দিনের প্রহর গুনছে কার্তিক। তীব্র যন্ত্রণায় ঘুম হচ্ছে না। তার উপর এমন গরম। এভাবে ফাঁকা জায়গায় পড়ে থাকায় জখম জায়গায় সংক্রমণের আশঙ্কা তো রয়েইছে। সেই অবস্থায় শনিবার দুপুর পর্যন্ত গাছতলায় পড়ে রইল সে। অপারেশনের রোগীরও বেড নেই এসএসকেএমে?
কার্তিক দাসের মামা বৈদ্য দাসের কথায়, “আমরা বলেছিলাম ছেলেটাকে ভর্তি করে নিতে। নিলেন না ডাক্তারবাবুরা। কোনওদিন শুনিনি কারও অপারেশন হবে অথচ দু’দিন আগে ছেড়ে দিচ্ছে হাসপাতাল। আমার ভাগ্নের ওয়ার্ডের ভিতর থাকার কথা ছিল, ও পড়ে আছে গাছতলায়। কী আর করব?”
যন্ত্রণায় কাতর কার্তিকের মুখ। কথা বলতে পারছে না সে। ছলছল চোখে বলল, “খুব যন্ত্রণা হচ্ছে।” রাস্তার উপর প্লাস্টিক পেতে শুয়ে আছে কার্তিক। রাস্তা গরম হচ্ছে, প্লাস্টিকও গরম হয়ে উঠছে। কার্তিক বলছে, হাসপাতালে বেড আছে। কিন্তু ডাক্তারবাবুরা বলেছেন, তাই বাড়ি পাঠিয়ে দিল।
কার্তিকের অপেক্ষা দিন তিনেকের। আর তিন মাস ধরে উডবার্নের উল্টোদিকের গলিতে কাটা পেট নিয়ে পড়ে রয়েছে বর্ধমানের বাসিন্দা সোনা দাস। প্রস্রাব বন্ধ হওয়ার পাশাপাশি মূত্রনালি থেকে রক্ত বার হচ্ছিল সোনার। বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ থেকে কলকাতা মেডিক্যাল। সেখান থেকে এনআরএস হয়ে ঠাঁই এসএসকেএমের গলিতে। চিকিৎসকেরা ভর্তি লিখে দেওয়ার পরও এমন ঘটনা। তৃণমূল বিধায়কের বক্তব্যকে পুরোপুরি সমর্থন জানিয়েছেন সোনা।