SLST Protest: ‘আমরা খুব স্বার্থপর হয়ে যাচ্ছি…’, চাকরির দাবিতে ৭০০ দিনের আন্দোলনে মিশছে ব্যক্তিগত যন্ত্রণাও

Recruitment Scam: ঋতুপর্ণার স্বামী প্রাইভেট টিউশন করেন। এখনও চাকরি পাননি। এদিকে তাঁদের ৫ বছরের একটি মেয়ে আছে।

SLST Protest: 'আমরা খুব স্বার্থপর হয়ে যাচ্ছি...', চাকরির দাবিতে ৭০০ দিনের আন্দোলনে মিশছে ব্যক্তিগত যন্ত্রণাও
ধরনামঞ্চে ঋতুপর্ণা।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Feb 12, 2023 | 8:09 PM

কলকাতা: ৭০০ দিন ধরে রাস্তায় বসে চাকরির দাবিতে। অভিযোগ, মেধার ভিত্তিতে যে চাকরি তাঁদের পাওয়ার কথা, তা অন্য কেউ কিনেছেন টাকার বদলে। ধর্মতলায় গান্ধী মূর্তির পাদদেশে এসএলএসটি (SLST) নবম-দ্বাদশের চাকরিপ্রার্থীদের এই আন্দোলন আর ৩০ দিন পার করলেই ২ বছরে পা দেবে। রাজপথে স্লোগান, পুলিশের চোখরাঙানির অভিযোগ, চোখের জল সঙ্গী করে আবারও পথে বসা। বৃত্ত পূর্ণ হচ্ছে আন্দোলনের। তবু দাবি আদায় হচ্ছে না, মিলছে না চাকরি। ২০১৬ সালে বিজ্ঞপ্তি, পরীক্ষা, রেজাল্ট সব বেরিয়েছে। কিন্তু যোগ্যরা চাকরি পাননি বলে অভিযোগ। বদলে লক্ষ লক্ষ টাকায় বিক্রি হয়েছে চাকরি, চোখের জল। গরীব বাড়ির শিক্ষিত মেধাবী পরীক্ষার্থীরা এখন ‘কেয়ার অব ফুটপাথ’। তাঁদের এই আন্দোলনের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে জীবনের বহু ত্যাগের গল্প। যেমন সুন্দরবনের ঋতুপর্ণা। তিনি নিয়মিত ধর্মতলায় আসেন। তবে তাঁর চাকরির জন্য নয়, স্বামীর চাকরির দাবিতে।

ঋতুপর্ণার স্বামী প্রাইভেট টিউশন করেন। এখনও চাকরি পাননি। এদিকে তাঁদের ৫ বছরের একটি মেয়ে আছে। ঘরে বাবা, মা আছেন। সংসার চালাতে প্রাইভেট টিউশন করেন ঋতুপর্ণার স্বামী। আর তিনি মেয়েকে নিয়ে সকাল সকাল চলে আসেন ধর্মতলায়। সুন্দরবন থেকে রোজ যাতায়াত সম্ভব নয়। তাই অনেক কষ্টে আড়াই হাজার টাকা দিয়ে হাসনাবাদে ঘর ভাড়া নিয়েছেন।

ঋতুপর্ণা বলেন, “মেয়েটাকে এখনও স্কুলে ভর্তি করতে পারলাম না। ঘর ভাড়া নিয়ে হাসনাবাদে থাকি। কে দেখবে ওকে। কে স্কুলে নিয়ে যাবে, নিয়ে আসবে। ঘুম থেকে তুলে ওকে নিয়ে চলে আসি এখানে। নিয়ে গিয়ে আবার ঘুম পাড়িয়ে দিই। কষ্টের কথা আর কী বলব। এ লড়াই শুধু আমার নয়, এখানকার সকলের। আমার স্বামী চাকরিপ্রার্থী। ও টিউশন পড়ায়। তাই আসতে পারে না। আমি আসি। এই ৭০০টা দিন আমাদের কাছে ৭০০ বছরের সমান। খুব কষ্টে আছি আমরা।”

ঋতুপর্ণা নিজেও বিএড করেছেন। তবে স্বামীর অধিকারের লড়াই লড়তে নামায় নিজের দিকে আর তাকানোর সময়ই পান না। তাঁর একটাই আফশোস, “মাঝে মাঝে মনে হয়, আমরা খুব স্বার্থপর হয়ে যাচ্ছি। ৫ বছর বয়স মেয়ের। স্কুলে দিতে পারলাম না। অথচ ওর যে এখন ভিত তৈরির সময়। এখনই নড়বড়ে হয়ে গেলে ওর ভবিষ্যৎ কী হবে জানি না।”