Tapas Chatterjee: রেশনের লাইনে ভিড় সামলানো ছেলে, পুর রাজনীতি থেকেই কোণঠাসা করে দিল, একের পর এক বিস্ফোরণ তাপসের
Tapas Chatterjee: তাপস চট্টোপাধ্যায়ের ক্ষোভ, "এতদিন আমি রয়েছি, আমাকে কর্পোরেশন ভোটের তালিকাতে পর্যন্ত রাখা হয়নি। এমনকী আমার কে প্রার্থী হবে, না হবে, জানতেও চাওয়া হয়নি।"
কলকাতা: দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক জীবন তাপস চট্টোপাধ্যায়ের (Tapas Chatterjee)। তাঁর ৬১ বছর বয়স। এরমধ্যে ৪৭ বছরের রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা। ৩৯ বছরের জন প্রতিনিধি। তবে তৃণমূলই তাঁকে বিধায়ক হওয়ার সুযোগ দিয়েছে। এর আগে যখন সিপিএম করতেন পুর প্রতিনিধি ছিলেন তিনি। রাজারহাট-গোপালপুর পুরসভার দীর্ঘদিনের কাউন্সিলর। মূলত পুরসভার (এখন অবশ্য রাজারহাট পুরনিগম) রাজনীতিতেই তাঁর রাজনৈতিক ভিত। কিন্তু গত দেড় দু’বছরে সেই পুর রাজনীতিতে তাঁকে কোণঠাসা করে রাখা হয়েছে বলে অভিযোগ রাজারহাট-নিউটাউনের তৃণমূল বিধায়ক তাপস চট্টোপাধ্যায়ের। বৃহস্পতিবার টিভি নাইন বাংলার ম্যানেজিং এডিটর অমৃতাংশু ভট্টাচার্যকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সে ক্ষোভ উগরে দিলেন অনর্গল।
তাপস চট্টোপাধ্যায় নিজেই জানালেন, তিনি সেই নেতা যিনি এক সময় পুর এলাকায় রেশন দোকানের ভিড় সামলেছেন। তাপস চট্টোপাধ্যায়ের কথায়, “আমি ছোট থেকে পুরএলাকায় বড় হওয়া। রেশন দোকানে মানুষের লাইন সামাল দিয়েছি। কেরোসিন তেলের লাইন সামলেছি। এটা একটা পর্যালোচনা হবে না? হঠাৎ নাম বাদ। অথচ কলকাতা কর্পোরেশনে বিধায়কও থাকছেন, কাউন্সিলররাও থাকছেন। পলিসিটা কী?”
তাপস চট্টোপাধ্যায়ের ক্ষোভ, “এতদিন আমি রয়েছি, আমাকে কর্পোরেশন ভোটের তালিকাতে পর্যন্ত রাখা হয়নি। এমনকী আমার কে প্রার্থী হবে, না হবে, জানতেও চাওয়া হয়নি। আমি কিন্তু সবকিছু মেনে নিয়েই দলের হয়ে কাজ করলাম। যাকে পছন্দ নয় তাকেও বুকে টেনে নিয়ে কাজ করলাম।” তাপসের দাবি, সংবাদমাধ্যমে এভাবে দলের অন্দরের কথা তিনি বলতে চাননি। তবে দলের অন্দরে বলার জায়গা না পেয়ে কার্যত বাধ্য হয়েই প্রকাশ্যে মুখ খোলা।
তাপস চট্টোপাধ্যায় বলেন, “যখন আমাদের বোর্ড ভেঙে গেল আমার নামটা হঠাৎ বাদ চলে গেল। আমাকে মুখ্যমন্ত্রী ফোন করলেন। বললেন, সব্যসাচীকে আমি দলে নিচ্ছি। ও অন্য জায়গায় কাজ করবে। তোমাদের কোনও… উনি বলেছেন এটাই শিরোধার্য। আমি কোনওদিনই কিছু বলিনি। তখন বললাম, দিদি আমি কেন বাদ? উনি বললেন, আমি তো জানি না। সঙ্গে সঙ্গে উনি নির্দেশ দিলেন ফিরহাদ হাকিমকে। আমার নামটা যুক্ত হল। এটা শুনেছি নাকি কারও কারও রাগের কারণ। ইগোর লড়াই।”
তাপসের সংযোজন, “দেখুন আমি মিডিয়ার কাছে এসে বলছি আমার নিজেরই খুব লজ্জা লাগছে। অভ্যন্তরীণ কথা বলব কেন বাইরে? মতবিরোধ প্রকাশ্যে বলব কেন? দুই ভাইয়ের মধ্যে লড়াই হলে প্রকাশ্যে বলব আমি এই প্রফেশনালিজমে বিশ্বাস করি না। কিন্তু কোনও বলার জায়গা নেই। তাই দুঃখে বলছি। এটা একটা মর্যাদার ব্যাপার।” বুধবার নিউটাউনে দলের বিজয়া সম্মিলনীতে ডাক না পাওয়ার ‘অপমান’ই নয়, পুর রাজনীতি থেকে ‘সরিয়ে দেওয়ার’ ক্ষতও যে তাপসকে তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে, এদিন প্রকাশ্যে বললেন সে কথাও।
তাপস বলেন, “আমি বিধায়ক, স্ট্য়ান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান আরবান ডেভেলপমেন্টে। গতবারও ডাক পাইনি এক অনুষ্ঠানে। আমি পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে বললাম আমাকে ডাকা হল না। দেখলাম অন্য কেউ আছে। কোথাও মনে হচ্ছে আমি খুব নেগলেকটেড হচ্ছি। আগে তো হিডকোর অনুষ্ঠানেও বলা হত না। ববিদাকে বলার পর বলে।”