New BJP State President: হু ইজ দ্য বস? উথাল-পাথাল বঙ্গ বিজেপি, সিংহাসনে বসতে চলেছেন কে
New BJP State President: পরিষদীয় রাজনীতির আঙিনায় থেকেও বিজেপিতে বরাবরই সংগঠনিক গঠনতন্ত্র শেষ কথা বলেছে, ‘পার্টি উইথ অ্য়া ডিফারেন্স’ যাদের ধমনীতে সেখানে যে চমক যে কোনও সময় আসতে পারে তা বলার অপেক্ষা রাখে না।

প্রদীপ্তকান্তি ঘোষের রিপোর্ট
কলকাতা: হু ইজ দ্য বস? কে হবেন বঙ্গ বিজেপির মুখিয়া? ‘এক নেতা এক পদে’ বিশ্বাসী বিজেপিতে প্রফেসর সুকান্ত মজুমদারকে নিয়ে প্রশ্নটা তীব্র হয়েছিল চব্বিশের লোকসভা ভোটের পর তাঁর মন্ত্রিত্বপ্রাপ্তির পর থেকেই। যদিও রাজনীতির কারবারিদের একাংশের মতে, ঠিক চব্বিশের ভোটের পর নয়, দলের অন্দরেই সভাপতি বদল নিয়ে জোরদার দাবি উঠছিল একুশের বিধানসভা ভোটে দলের রক্ষক্ষয়ের পর থেকেই। যে ক্ষয় আজও অব্যহত। একুশে ভোটে সত্তরের চৌকাঠ পেরিয়ে থামতে হয়েছিল বিজেপিকে। চব্বিশের লোকসভাতেও ধরে রাখা যায়নি আঠারোর ১৮। কমে দাঁড়ায় বারো। আর তারপরই বারবার উঠেছিল একটাই দাবি। বামদের সরিয়ে যাঁর হাত ধরে বাংলার ১ নম্বর বিরোধী হয়েছিল বিজেপি, আরএসএসের প্রিয় পাত্র সেই দিলীপ ঘোষকে ফের ফেরানোর দাবি জোরাল হয়েছিল একটা অংশে। শেষ পর্যন্ত কে বসতে চলেছেন এই পদে? নতুন কেউ নাকি সুকান্ততেই আস্থা? উত্তর আগামী সপ্তাহেই।
‘পার্টি উইথ অ্যা ডিফারেন্স’
পরিষদীয় রাজনীতির আঙিনায় থেকেও বিজেপিতে বরাবরই সংগঠনিক গঠনতন্ত্র শেষ কথা বলেছে, ‘পার্টি উইথ অ্য়া ডিফারেন্স’ যাদের ধমনীতে সেখানে যে চমক যে কোনও সময় আসতে পারে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। সাম্প্রতিক অতীতের দিকে তাকালে দেখা যাবে এক নেতা এক পদের নীতিতে অবিচল থেকেছেন অমিত শাহ, জে পি নাড্ডার মতো তাবড় তাবড় পদ্ম নেতারা। মন্ত্রীত্ব ছেড়ে সংগঠনের শীর্ষ পদে বসেছেন নাড্ডা। আবার মন্ত্রিত্ব হাতে পেয়েই সংগাঠনিক শীর্ষ পদ ছেড়ে দিয়েছেন শাহ। এমতাবস্থায় আর কী বঙ্গ বিজেপির রাজ্য সভাপতির পদে থাকবেন সুকান্ত? ৬ মুরলীধর সেন লেনে কান পাতলেও এতদিন মুখে কুলুপ ছিল পদ্ম নেতাদের। শুভেন্দু, থেকে দিলীপ, জল্পনার ঢেউয়ে বাদ যায়নি কারও নামই। এরইমধ্যে চলে এল খবর। চব্বিশ ঘণ্টা আগেই তিন রাজ্যের সভাপতি ও জাতীয় কাউন্সিল সদস্য নির্বাচনের জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের নাম ঘোষণা করেছে বিজেপি। আর সপ্তাহ ঘুরলেই বঙ্গ বিজেপি পেয়ে যাবে নতুন সভাপতি। বিজেপির অন্দরে কান পাতলে এখন তা নিয়েই চর্চা শোনা যাচ্ছে পুরোদমে।
নতুন কেউ না কি পুরনোতেই আস্থা?
পশ্চিমবঙ্গের সভাপতি নির্বাচনের প্রক্রিয়ার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা সাংসদ রবি শঙ্কর প্রসাদকে। শুক্রবার তা জানিয়েছেন বিজেপির সাংগঠনিক নির্বাচন প্রক্রিয়ার জাতীয় রিটার্নিং অফিসার কে লক্ষ্মণ। কে হবেন বঙ্গ বিজেপির ক্যাপ্টেন? নতুন কেউ না কি পুরনোতেই আস্থা?
বিজেপির একটি অংশের মতে, পূর্ণ সময়ের সভাপতির প্রয়োজন রয়েছে। তাই নতুন কাউকে করা উচিত। আর বিজেপি একটি সিস্টেমের মধ্যে দিয়ে চলে। ফলে ভোটের জন্য সময় কম থাকলেও অসুবিধা হবে না। সূত্রের দাবি, নতুন নাম হিসাবে আলোচনার উপরের সারিতে রয়েছে শমীক ভট্টাচার্যের নাম। শোনা যাচ্ছে শমীকের প্রতি আরএসএসের পূর্ণ সমর্থন রয়েছে।
অন্যদিকে আগ্নিমিত্রা পালের নাম চর্চায় থাকলেও সম্ভাবনা অনেকটাই কম। আবার আলোচনায় ভেসে রয়েছেন জ্যোতির্ময় সিং মাহাতোরও নামও। এসবের বাইরে নতুন কোনও চমক দেবে বিজেপি নাকি চর্চিত নামেই আস্থা রেখে ২০২৬ সালের জন্য ক্যাপ্টেন বাছবে গেরুয়া শিবির? আলোচনায় ব্যস্ত রাজনীতির কারবারিরা।
না কি ফের সুকান্ত?
বাংলা ছাড়াও রাজ্য সভাপতি নির্বাচন হবে মহারাষ্ট্র আর উত্তরাখণ্ডেও। সূত্রের খবর, ওই দুই রাজ্যে পুরনো সভাপতিদের উপর আস্থা রাখতে চলেছে বিজেপি। আর সেই তালিকার সঙ্গে জুড়ে গিয়েছে পশ্চিমবঙ্গের নাম। তবে কি বর্তমান সভাপতি সুকান্ত মজুমদারে আস্থা রাখা হবে বলেই কি উত্তরাখণ্ড আর মহারাষ্ট্রের সঙ্গে জুড়ে রাখা হল পশ্চিমবঙ্গের নাম? শুরু হয়েছে চর্চা।
সূত্রের দাবি, এই দুই রাজ্যেও পুরনো সভাপতিদের উপরেই ভরসা রাখতে চলেছে দল। সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা চলছে বিজেপির একাংশের মধ্যে। তাঁদের মতে, মন্ত্রিত্ব এর সঙ্গেই সভাপতি হিসাবে প্রচুর পরিশ্রম করছেন সুকান্ত মজুমদার। এখন নতুন সভাপতি না করে তাঁকে সভাপতি হিসাবে রেখে দেওয়া হলে ভাল হবে। নতুন কেউ দায়িত্ব পেলে ভোটের আগে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব আরও মাথা চাড়া দিতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন কেউ কেউ। সে কারণেই সুকান্তের পুনরায় সভাপতিত্বের পক্ষে সওয়াল একাংশের। এখন দেখার একটাই, চর্চিত হিসেব অনুযায়ী উঠে আসা সম্ভাবনাগুলোই দিনের আলো দেখবে নাকি যাবতীয় পাশা উল্টে যাবে শেষ মুহূর্তে চমক দিতে ভালবাসা মোদী শাহের নেতৃত্বাধীন বিজেপির ঘোষণায়।
