Fake medicine: অতিরিক্ত ডিসকাউন্টের আশায় অনলাইনে ওষুধ কিনতে গিয়ে জাল ওষুধ ঘরে আনছেন না তো? কীভাবে বাঁচবেন জানুন

সৌরভ গুহ | Edited By: Sukla Bhattacharjee

Dec 21, 2023 | 10:12 PM

Online pharmacy: অনলাইনে ওষুধ কেনা ও ক্রেতাদের ডিসকাউন্টের পিছনে দৌড়নোর প্রবণতাকে দায়ী করছেন পশ্চিমবঙ্গের ওষুধ সংগঠনের চেয়ারম্যান ও আহ্বায়ক তথা ব্যবসায়ী পৃথ্বী বসু। তাঁর মতে, সাধারণত মুনাফা বজায় রেখে যে দামে ওষুধ বিক্রি করা সম্ভব, তার থেকে কম দামে অর্থাৎ অতিরিক্ত ডিসকাউন্ট দিয়ে ওষুধ বিক্রি করছে অনেক দোকান ও সংস্থা।

Follow Us

নয়া দিল্লি: বর্তমানে গ্যাসট্রিক, ব্লাড প্রেসার, ডায়াবেটিস, ক্যানসারের মতো রোগ ঘরে-ঘরে। স্বাভাবিকভাবেই রোগ-মুক্তির লক্ষ্যে বা রোগের সঙ্গে লড়াই করতে ওষুধের উপর নির্ভরশীলতা বাড়ছে। অনেক পরিবারেরই সংসার খরচের সিংহভাগ চলে যায় ওষুধ খরচে। বর্তমানে অবশ্য ওষুধের দামে বিশেষ ছাড় দেওয়ার অফার শুরু হয়েছে। ফলে অনেকেই ওষুধের খরচ থেকে কিছুটা রেহাই পেতে যেখানে ডিসকাউন্ট বেশি, সেখান থেকেই ওষুধ কেনেন। অনলাইন সংস্থাগুলিতে ডিসকাউন্টের পরিমাণ অনেকটাই বেশি। স্বাভাবিকভাবে অনলাইনে ওষুধ কেনার প্রবণতা বেড়েছে। কিন্তু, ডিসকাউন্টের পিছনে ছুটতে গিয়ে জাল ওষুধ কিনছেন না তো? কেন্দ্রের সাম্প্রতিক রিপোর্টে এমনই আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

সম্প্রতি সংসদে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী জাল ওষুধের রমরমা নিয়ে একটি রিপোর্ট পেশ করেছেন। সেই রিপোর্টে বলা হয়েছে, জাল ওষুধের রমরমা ঠেকাতে সম্প্রতি ভারত সরকারের ড্রাগ স্টান্ডার্ড কন্ট্রোলের অর্গানাইজেশন (CDSCO) দেশের বিভিন্ন রাজ্যে অভিযান চালিয়েছে। সেই অভিযানে বিভিন্ন জায়গায় জাল ওষুধের কারবারের হদিশ মিলেছে এবং অনেক জাল ওষুধ বাজেয়াপ্ত হয়েছে। যার মধ্যে কেবল কলকাতার কলুটোলা স্ট্রিটে একটি বাড়ির ভিতরে লাইসেন্স-বিহীন ওষুধের গুদাম থেকে ২ কোটি টাকার জাল ওষুধ বাজেয়াপ্ত হয়েছে। যার মধ্যে ছিল ঘুমের ওষুধ, ব্যথার ওষুধ, অ্যান্টিবায়োটিক, অ্যান্টিম্যালেরিয়াল, এমনকি ডায়াবেটিস, ক্যানসারের মতো জীবনদায়ী ওষুধ। গত কয়েক বছরে দেশে জাল ওষুধের রমরমা ক্রমশ বেড়েছে বলে সংসদে রিপোর্ট পেশ করেছেন স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী। সেই রিপোর্ট দেখে নেওয়া যাক একনজরে…

সাল              নমুনা পরীক্ষা      নিম্নমান      জাল
২০২০-২১      ৮৪,৮৭৪           ২,৬৫২      ২৬৩
২০২১-২২      ৮৮,৮৪৪          ২,৫৪৫      ৩৭৯
২০২২-২৩     ৯০,০০০           ২,৯২১        ৪২২

CDSCO-র সাম্প্রতিক অভিযানে দেশে সাড়ে ১০ শতাংশ নিম্নমান ও জাল ওষুধ পাওয়া গিয়েছে বলে কেন্দ্রের রিপোর্টে উল্লিখিত। যা উদ্বেগের বিষয়। কিন্তু, কীভাবে দেশে জাল ওষুধ ক্রমশ শিকড় ছড়াচ্ছে? এমন প্রশ্ন উঠছে।

জাল ওষুধের রমরমা কীভাবে বাড়ছে?

অনলাইনে ওষুধ কেনা ও ক্রেতাদের ডিসকাউন্টের পিছনে দৌড়নোর প্রবণতাকে দায়ী করছেন পশ্চিমবঙ্গের ওষুধ সংগঠনের (BCDA) চেয়ারম্যান ও আহ্বায়ক তথা ব্যবসায়ী পৃথ্বী বসু। তাঁর মতে, সাধারণত মুনাফা বজায় রেখে যে দামে ওষুধ বিক্রি করা সম্ভব, তার থেকে কম দামে অর্থাৎ অতিরিক্ত ডিসকাউন্ট দিয়ে ওষুধ বিক্রি করছে অনেক দোকান ও সংস্থা। বিশেষত, অনলাইনে ওষুধ কেনার উপর অতিরিক্ত ডিসকাউন্ট দেওয়া হয়। এই সস্তায় ওষুধ কেনার প্রবণতা বৃদ্ধির ফলেই জাল ওষুধের ব্যবসা বৃদ্ধি পাচ্ছে।

সম্প্রতি জাল ওষুধের রমরমা ঠেকাতে সম্প্রতি ইন্টারপোল অভিযানও হয়েছে। ২০২১ সালের মাঝামাঝি সময়ে ৯২টি দেশে অভিযান চালায় ইন্টারপোল। সেই অভিযানে ব্রিটেনে ৩০ লক্ষ, ইতালিতে ১ কোটি জাল ওষুধ ও চিকিৎসা সরঞ্জাম বাজেয়াপ্ত হয়েছে। অনুমোদিত নয় এরকম হাজার-হাজার ফার্মাসি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, আমেরিকার অর্ধেকের বেশি মানুষ অনলাইনে ওষুধ কেনেন। অনলাইনে ফার্মাসি আসার পর জাল ওষুধের কারবার বেড়েছে। তাই অতিরিক্ত ডিসকাউন্টের পিছনে না ছুটে ওষুধ কেনার সময় যাচাই করে দেখে নেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন BCDA-র চেয়ারম্যান।

জাল ওষুধের হাত থেকে বাঁচবেন?

BCDA-র চেয়ারম্যানের মতো একই পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসক থেকে ওষুধ ব্যবসায়ীদের একাংশ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নামজাদা ওষুধের দোকানের মালিক বলেন, যদি ক্রেতা সচেতন হয়, তাহলেই জাল ওষুধের রমরমা কমতে পারে। ক্রেতা নিজে দোকানে গিয়ে প্রেসক্রিপশন দেখে ওষুধ কিনলে এবং ক্যাশমেমো নিলে পরে সেটা নিয়ে দোকানে চ্যালেঞ্জ করতে পারবে। কিন্তু, অনলাইন সংস্থার ক্ষেত্রে এই সুযোগ কম।

ডা. জয়দীপ ঘোষ (ইন্টারনাল মেডিসিন)-এর পরামর্শ, দোকানে গিয়ে ওষুধ কিনলে ক্যাশমেমো নেওয়া জরুরি। সেই ক্যাশমেমো অনুযায়ী ওষুধের বিবরণ মিলিয়ে নেওয়া উচিত। কোনও বিষয়ে সন্দেহ হলে দোকানে চ্যালেঞ্জ করা উচিত। অর্থাৎ অনলাইন-নির্ভরতা কমিয়ে ক্রেতারা সচেতন হলেই জাল ওষুধের হাত থেকে বাঁচা সম্ভব বলে জানাচ্ছেন চিকিৎসক থেকে ওষুধ প্রস্তুতকারকেরা।

নয়া দিল্লি: বর্তমানে গ্যাসট্রিক, ব্লাড প্রেসার, ডায়াবেটিস, ক্যানসারের মতো রোগ ঘরে-ঘরে। স্বাভাবিকভাবেই রোগ-মুক্তির লক্ষ্যে বা রোগের সঙ্গে লড়াই করতে ওষুধের উপর নির্ভরশীলতা বাড়ছে। অনেক পরিবারেরই সংসার খরচের সিংহভাগ চলে যায় ওষুধ খরচে। বর্তমানে অবশ্য ওষুধের দামে বিশেষ ছাড় দেওয়ার অফার শুরু হয়েছে। ফলে অনেকেই ওষুধের খরচ থেকে কিছুটা রেহাই পেতে যেখানে ডিসকাউন্ট বেশি, সেখান থেকেই ওষুধ কেনেন। অনলাইন সংস্থাগুলিতে ডিসকাউন্টের পরিমাণ অনেকটাই বেশি। স্বাভাবিকভাবে অনলাইনে ওষুধ কেনার প্রবণতা বেড়েছে। কিন্তু, ডিসকাউন্টের পিছনে ছুটতে গিয়ে জাল ওষুধ কিনছেন না তো? কেন্দ্রের সাম্প্রতিক রিপোর্টে এমনই আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

সম্প্রতি সংসদে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী জাল ওষুধের রমরমা নিয়ে একটি রিপোর্ট পেশ করেছেন। সেই রিপোর্টে বলা হয়েছে, জাল ওষুধের রমরমা ঠেকাতে সম্প্রতি ভারত সরকারের ড্রাগ স্টান্ডার্ড কন্ট্রোলের অর্গানাইজেশন (CDSCO) দেশের বিভিন্ন রাজ্যে অভিযান চালিয়েছে। সেই অভিযানে বিভিন্ন জায়গায় জাল ওষুধের কারবারের হদিশ মিলেছে এবং অনেক জাল ওষুধ বাজেয়াপ্ত হয়েছে। যার মধ্যে কেবল কলকাতার কলুটোলা স্ট্রিটে একটি বাড়ির ভিতরে লাইসেন্স-বিহীন ওষুধের গুদাম থেকে ২ কোটি টাকার জাল ওষুধ বাজেয়াপ্ত হয়েছে। যার মধ্যে ছিল ঘুমের ওষুধ, ব্যথার ওষুধ, অ্যান্টিবায়োটিক, অ্যান্টিম্যালেরিয়াল, এমনকি ডায়াবেটিস, ক্যানসারের মতো জীবনদায়ী ওষুধ। গত কয়েক বছরে দেশে জাল ওষুধের রমরমা ক্রমশ বেড়েছে বলে সংসদে রিপোর্ট পেশ করেছেন স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী। সেই রিপোর্ট দেখে নেওয়া যাক একনজরে…

সাল              নমুনা পরীক্ষা      নিম্নমান      জাল
২০২০-২১      ৮৪,৮৭৪           ২,৬৫২      ২৬৩
২০২১-২২      ৮৮,৮৪৪          ২,৫৪৫      ৩৭৯
২০২২-২৩     ৯০,০০০           ২,৯২১        ৪২২

CDSCO-র সাম্প্রতিক অভিযানে দেশে সাড়ে ১০ শতাংশ নিম্নমান ও জাল ওষুধ পাওয়া গিয়েছে বলে কেন্দ্রের রিপোর্টে উল্লিখিত। যা উদ্বেগের বিষয়। কিন্তু, কীভাবে দেশে জাল ওষুধ ক্রমশ শিকড় ছড়াচ্ছে? এমন প্রশ্ন উঠছে।

জাল ওষুধের রমরমা কীভাবে বাড়ছে?

অনলাইনে ওষুধ কেনা ও ক্রেতাদের ডিসকাউন্টের পিছনে দৌড়নোর প্রবণতাকে দায়ী করছেন পশ্চিমবঙ্গের ওষুধ সংগঠনের (BCDA) চেয়ারম্যান ও আহ্বায়ক তথা ব্যবসায়ী পৃথ্বী বসু। তাঁর মতে, সাধারণত মুনাফা বজায় রেখে যে দামে ওষুধ বিক্রি করা সম্ভব, তার থেকে কম দামে অর্থাৎ অতিরিক্ত ডিসকাউন্ট দিয়ে ওষুধ বিক্রি করছে অনেক দোকান ও সংস্থা। বিশেষত, অনলাইনে ওষুধ কেনার উপর অতিরিক্ত ডিসকাউন্ট দেওয়া হয়। এই সস্তায় ওষুধ কেনার প্রবণতা বৃদ্ধির ফলেই জাল ওষুধের ব্যবসা বৃদ্ধি পাচ্ছে।

সম্প্রতি জাল ওষুধের রমরমা ঠেকাতে সম্প্রতি ইন্টারপোল অভিযানও হয়েছে। ২০২১ সালের মাঝামাঝি সময়ে ৯২টি দেশে অভিযান চালায় ইন্টারপোল। সেই অভিযানে ব্রিটেনে ৩০ লক্ষ, ইতালিতে ১ কোটি জাল ওষুধ ও চিকিৎসা সরঞ্জাম বাজেয়াপ্ত হয়েছে। অনুমোদিত নয় এরকম হাজার-হাজার ফার্মাসি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, আমেরিকার অর্ধেকের বেশি মানুষ অনলাইনে ওষুধ কেনেন। অনলাইনে ফার্মাসি আসার পর জাল ওষুধের কারবার বেড়েছে। তাই অতিরিক্ত ডিসকাউন্টের পিছনে না ছুটে ওষুধ কেনার সময় যাচাই করে দেখে নেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন BCDA-র চেয়ারম্যান।

জাল ওষুধের হাত থেকে বাঁচবেন?

BCDA-র চেয়ারম্যানের মতো একই পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসক থেকে ওষুধ ব্যবসায়ীদের একাংশ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নামজাদা ওষুধের দোকানের মালিক বলেন, যদি ক্রেতা সচেতন হয়, তাহলেই জাল ওষুধের রমরমা কমতে পারে। ক্রেতা নিজে দোকানে গিয়ে প্রেসক্রিপশন দেখে ওষুধ কিনলে এবং ক্যাশমেমো নিলে পরে সেটা নিয়ে দোকানে চ্যালেঞ্জ করতে পারবে। কিন্তু, অনলাইন সংস্থার ক্ষেত্রে এই সুযোগ কম।

ডা. জয়দীপ ঘোষ (ইন্টারনাল মেডিসিন)-এর পরামর্শ, দোকানে গিয়ে ওষুধ কিনলে ক্যাশমেমো নেওয়া জরুরি। সেই ক্যাশমেমো অনুযায়ী ওষুধের বিবরণ মিলিয়ে নেওয়া উচিত। কোনও বিষয়ে সন্দেহ হলে দোকানে চ্যালেঞ্জ করা উচিত। অর্থাৎ অনলাইন-নির্ভরতা কমিয়ে ক্রেতারা সচেতন হলেই জাল ওষুধের হাত থেকে বাঁচা সম্ভব বলে জানাচ্ছেন চিকিৎসক থেকে ওষুধ প্রস্তুতকারকেরা।

Next Article