জার্মানি- ৪ ( ডায়াস আত্মঘাতী ৩৫’, গুয়েরেইরো আত্মঘাতী ৩৯’, হ্যাভার্জ ৫১’, গোসেন্স ৬০’)
পর্তুগাল- ২ (রোনাল্ডো ১৫’, জোটা ৬৭’)
মিউনিখঃ ৪০০ মিটার রিলেতে প্রথম পাকের পর বোঝা যায়না কে হবেন প্রথম। টেস্ট ক্রিকেটের প্রথম সেশনের পর বোঝা সম্ভব নয়, দিনের শেষে ম্যাচের হাল কোন দিকে গড়াচ্ছে। ঠিক তেমনি ফুটবল(FOOTBALL) ম্যাচের প্রথম ১৫ মিনিট দেখে যে ঠাহর করা যায়না, ফাইনাল বাঁশি বাজার সময় স্কোর কত হতে পারে, তা যেন বুঝিয়ে দিল জার্মানি(GERMANY)। ইউরো কাপে(EURO 2021) পর্তুগালকে(PORTUGAL) এদিন ৪-২ গোলে উড়িয়ে দিয়ে পরের রাউন্ডে যাওয়ার আশা জোরালো করল জোয়াকিম লো-র দল। ম্যাচে প্রথম রোনাল্ডোর(CRISTIANO RONALDO) গোলে পর্তুগাল এগিয়ে গেলেও শেষরক্ষা হল না।
ঘরের মাঠে প্রথম ম্যাচে ফ্রান্সের কাছে হারের পর জার্মানির বর্তমান ফুটবল অবস্থা নিয়ে শুরু হয়েছিল কাঁটাছেড়া। আজ যেন কড়ায় গন্ডায় সব কিছুর জবাব দিল জার্মান জাত্যাভিমান। এদিন ম্যাচের পনেরো মিনিটে দুরন্ত কাউন্টার অ্যাটাকে এগিয়ে যায় পর্তুগাল। জোটার মাপা পাস থেকে গোল করতে ভুল করেননি সিআর সেভেন। মিউনিখ তখন ভাবতে শুরু করেছে, দিনটা বোধ হয় রোনাল্ডোর। কিন্তু ম্যাচের ১৫ মিনিটেই যে ৯০ মিনিটের ভবিষ্যত নির্ধারণ করা যায়না। গোল হজম করতেই বদলে গেল জার্মানির শরীরী ভাষাটাই। পিঠ ঠেকে যাওয়া দলের কাছে যেন গোলটা হয়ে গিয়েছিল কামব্যাকের সুপারডোজ। এরপর ম্যাচ জুড়ে শুধুই জার্মানি। ঘরের মাঠে সাদা জার্সি উজ্জ্বল থেকে উজ্জ্বলতর হতে শুরু করে ম্যাচের প্রতিটি মিনিট গড়াতেই।
টনি ক্রুজ, হ্যাভার্জদের আক্রমণে ক্রমশ আলগা হতে শুরু করে পর্তুগাল ডিফেন্স। ডানদিক থেকে কিমিচের ক্রস । সেখান থেকে রবিন গোসেন্সের জোরালো শট। ক্লিয়ার করতে গিয়েই বিপত্তি বাড়ালেন পর্তুগালের রুবেন ডায়াস। জালে বল জড়াল পর্তুগালের। প্যাট্রিসিও কিচ্ছু করার ছিলনা। গোল পেতেই যেন রক্তের স্বাদ পেল জার্মানি। আক্রমণের ঝাঁঝ বাড়ল জার্মানদের। ডিফেন্স আরও দুর্বল হতে শুরু করে রোনাল্ডোর দলের। ফের একবার আত্মাঘাতী গোল পর্তুগালের। কিমিচের জোরালো শট ক্লিয়ার করতে গিয়ে এবার পর্তুগালের বিপদ বাড়ালেন রাফায়েল গুয়েরেইরো।
প্রথমার্ধে এগিয়ে গিয়েও ১-২ গোলে পিছিয়ে থাকা। চাপ বাড়ছিল পর্তুগালের উপর। আর জার্মানি যেন ঘরের মাঠে নিজেদের সুনাম ফেরাতে মরিয়া। দ্বিতীয়ার্ধে আরও ভয়ঙ্কর জার্মানি। রোনাল্ডো তখন ম্যাচে কামব্যাক করার কথা ভুলে নিজেদের ডিফেন্স সামলাতে ব্যস্ত। ম্যাচের ৫১ মিনিটে আবার গোল জার্মানির। বক্সের ৬ গজ বাইরে থেকে গোসেন্সের আবার বিষাক্ত পাস। গোল করে জার্মানিকে এগিয়ে দিলেন ২২ বছরের হ্যাভার্জ। গড়লেন নয়া কীর্তি। সর্বকনিষ্ঠ জার্মান ফুটবলার হিসেবে ইউরোতে গোল করলেন হ্যাভার্জ। রোনাল্ডোরা ততক্ষণে বুঝে গিয়েছেন, ম্যাচ হাতছাড়া।
৬০ মিনিটে আবার গোল। এবার গোসেন্স। মিউনিখ জুড়ে তখন আশঙ্কা, তবে কি পর্তুগালে ২০১৪ বিশ্বকাপে ব্রাজিলের মত হাল করবে জার্মানি? আশঙ্কা ক্রমশ জোরালো হচ্ছিল, জার্মানির আক্রমণের ঝড় উত্তরোত্তর বাড়তে থাকায়। ৬৭ মিনিটে জার্মানির ঝড় সামলে প্রতি আক্রমণে গোল করে ব্যবধান কমালেন জোটা। আক্রমণের ঝড় কমল মুলারদের। ফিরল ২০১৪ বিশ্বকাপের স্মৃতি।
এদিন গোল করে নয়া রেকর্ডের সামনে রোনাল্ডো। আর ২টি গোল করলেই ছুঁয়ে ফেলবেন ইরানের আলি দায়িকে। আন্তর্জাতিক ফুটবলে ১০৯ টি গোল করার রেকর্ড রয়েছে আলি দায়ির। ২ গোল করলেই তা ছুঁয়ে ফেলবেন ১০৭ আন্তর্জাতিক গোলের মালিক রোনাল্ডো।