কলকাতা: চিকিৎসকদের বয়সের চুক্তির মেয়াদ বাড়াল স্বাস্থ্য দফতর। রাজ্যে চিকিৎসকের ঘাটতি মেটাতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে দাবি রাজ্য সরকারের। ন্যাশনাল হেল্থ মিশনের আওতায় চিকিৎসকদের চুক্তির মেয়াদ বাড়ছে আরও। বৃহস্পতিবার এই সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। যে চুক্তি ৬২ বছরে শেষ হয়ে যেত, সেটা বাড়িয়ে ৬৭ বছর করা হয়েছে। এছাড়া চুক্তি পুনর্নবীকরণের ক্ষেত্রে বা পুনরায় নিয়োগের ক্ষেত্রে বয়সের ঊর্ধ্বসীমা ছিল ৬৫ বছর, সেটা বাড়িয়ে ৭০ বছর করা হয়েছে। মেডিক্যাল অফিসারদের ক্ষেত্রে এই নির্দেশিকা কার্যকর হবে বলে জানানো হয়েছে।
তবে রাজ্য সরকারের এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছেন চিকিৎসকের একাংশ। চিকিৎসক মানস গুমটা বলেন, ‘ভারতবর্ষের মানুষের গড় আয়ু ৭০ বছর। ৬৭ বছর বয়সে নিয়োগের কথা অতীতে আমরা শুনিনি।’ তাঁর মতে, সদ্য পাশ করা চিকিৎসকেরা যে উদ্যমে কাজ করবেন, ৭০ বছর বয়সেও সেভাবে কাজ করা আদৌ সম্ভব কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। চিকিৎকের প্রশ্ন, বছরে ৪৫০০ আধুনিক মেডিসিনের চিকিৎসক তৈরি হচ্ছে বলে সরকার দাবি করে। তাহলে ডাক্তারের অভাব থাকবে কেন? কেন অবসরের বয়স বাড়িয়ে দেওয়া হবে? অতীতেও মেডিক্যাল এডুকেশন সার্ভিস বা হেলথ সার্ভিসে কোনও বিকল্প পথ খোলা না রেখে এক তরফা অবসরের বয়স বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
চিকিৎসক সংগঠনের নেতা মানস গুমটা বলেন, ‘চিকিৎসকদের বন্ডেড লেবার করে দেওয়া হয়েছে। ন্যাশনাল হেলথ মিশনের কাজ পুরোপুরি জনস্বাস্থ্যের সঙ্গে যুক্ত। এই কাজ ঠান্ডা ঘরে বসে করা যায় না। গোটা জেলায় ঘুরে ঘুরে এই কাজ করতে হয়। ৭০ বছর বয়সে এই কাজ করা সম্ভব? এই আদেশনামার মানেই হল জনস্বাস্থ্যকে পিছনের সারিতে ঠেলে দেওয়া। এটা ভয়ঙ্কর প্রবণতা।’
চিকিৎসকের অভাব নিয়ে অবশ্য প্রশ্ন উঠেছে আগেও। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও জানিয়েছিলেন, চিকিৎসকের অভাব মেটাতে পদক্ষেপ করা হবে। গ্রামে গ্রামে কোয়াক ডাক্তারদের কাজে লাগানোর কথাও বছর দুয়েক আগে জানিয়েছিলেন মমতা।