বড় কর্মসূচিতে রাশ চায় আলিমুদ্দিন স্ট্রিট, ‘ময়দান ছেড়ে যাব না’ বললেন সূর্যকান্ত

tista roychowdhury |

Apr 16, 2021 | 2:46 PM

এই সময়ে আলিমুদ্দিনের এই সিদ্ধান্ত 'শাঁখের করাত' বলে মনে করছেন বাম নেতাদের একাংশ। কারণ, অন্যান্য দলের তুমুল প্রচার চালু থাকলে আর নিজেদের 'সদিচ্ছার' কথা বলে পিছিয়ে গেলে কথা উঠবে বাম শিবির যুদ্ধের আগেই পরাজয়ের আশঙ্কা করছে।

বড় কর্মসূচিতে রাশ চায় আলিমুদ্দিন স্ট্রিট, ময়দান ছেড়ে যাব না বললেন সূর্যকান্ত
প্রচারে সূর্যকান্ত, নিজস্ব চিত্র

Follow Us

পশ্চিম বর্ধমান: নির্বাচনী প্রচারে উপচে পড়া ভিড় আর করোনা (COVID-19) আতঙ্কে ভোটের প্রচারে বড় কর্মসূচিতে রাশ টানার সিদ্ধান্ত নেয় সিপিএম। আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে বৈঠকের আটচল্লিশ ঘণ্টা পড়েই পথে প্রচারে সিপিএমের (CPIM) রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র। শিল্পনগরী দুর্গাপুরে শুক্রবার সকালে এক বর্ণাঢ্য রোড-শোয়ে অংশগ্রহণ করলেন বাম নেতা। দুর্গাপুর পূর্বের জোট প্রার্থী সিপিএম নেতা আভাস রায় চৌধুরী ও দুর্গাপুর পশ্চিমের কংগ্রেস প্রার্থী দেবেশ চক্রবর্তীর সমর্থনে এ দিন রোড শো করেন সূর্যকান্ত।

প্রশ্ন ওঠে তবে কি ‘স্ববিরোধী সিদ্ধান্ত’-ই অনুসরণ করছে বাম শিবির (CPIM)? আলিমুদ্দিন স্ট্রিট থেকে যেখানে বুধবার বৈঠক ডেকে ঘোষণা করা হয়, বড় কর্মসূচিতে রাশ টেনে ছোট ছোট নির্বাচনী প্রচার করবে সিপিএম, ক্রমবর্ধমান করোনার কথা মাথাই রেখেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাম শিবির, সেখানে কী করে এত বড় রোড শো করা যেতে পারে?

এ প্রসঙ্গে, বর্ষীয়ান বাম নেতা বলেন, ”সরকার চাইছে সকলে ঘরে ঢুকে যাক। আর কেবল ওরাই যা নয় তাই করুক। তা তো হয় না। ময়দান ছেড়ে যাওয়ার প্রশ্নই নেই। প্রচার আমরা করব এবং  কোভিড প্রোটোকল মেনে করব। সকলেই এখানে মাস্ক পরে সামাজিক দূরত্ববিধি বজায় রেখেই প্রচার করছে। আমরা এখনও নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তকে সম্মান করি। ডিজিটাল প্রচারের প্রসঙ্গ আমরাই নির্বাচন কমিশনের কাছে উত্থাপন করেছি। বিজ্ঞানসম্মতভাবে করোনাকে রুখতে হবে।”

তিনি আরও বলেন, ”নির্বাচনী প্রচারের নামে যে নেতারা কুকথা বলে বেড়াচ্ছেন তারা করোনা থেকেও ভয়ঙ্কর। কেউ বলছেন জায়গায় জায়গায় শীতলকুচি হলে ভাল হত, মুখ্যমন্ত্রী আবার বাহিনীকে ঘেরাওয়ের নির্দেশ দিচ্ছেন। ওঁদের কাউকে চব্বিশ ঘণ্টা, কাউকে আটচল্লিশ ঘণ্টা ব্যান করা হয়েছিল। আমার মনে হয়, নির্বাচন কমিশনের উচিত, পুরো ভোটের সময়টাতেই ওঁদের ব্যান করা।”

প্রসঙ্গত, বুধবার আলিমুদ্দিনে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর বৈঠকে কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা হয়। তার পরে দলের পলিটব্য়ুরো সদস্য় মহম্মদ সেলিম ও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী বড় কর্মসূচির কমিয়ে আনার সিদ্ধান্তের কথা জানান। রাজ্যে ১৩২ টি বিধানসভা আসনে ভোট হয়ে গিয়েছে। আরও চার দফায় ১৬২ টি আসনে নির্বাচন বাকি।

এই সময়ে আলিমুদ্দিনের এই সিদ্ধান্ত ‘শাঁখের করাত’ বলে মনে করছেন বাম নেতাদের একাংশ। কারণ, অন্যান্য দলের তুমুল প্রচার চালু থাকলে আর নিজেদের ‘সদিচ্ছার’ কথা বলে পিছিয়ে গেলে কথা উঠবে বাম শিবির যুদ্ধের আগেই পরাজয়ের আশঙ্কা করছে। তাই আবেদনের সুরেই বুধবার সেলিম বলেন, ”সরকার বা কমিশন (Election Commission) উদাসীন থাকলেও মানুষের পাশে আমাদের থাকতে হবে। কমিশন অনেক কথা বলেছিল। আশা ছিল যথাযথ ব্যবস্থা নেবে। কিন্তু, এখন যা পরিস্থিতি তাতে নিজেদেরকেই সচেতন হতে হবে।” তাহলে কি বন্ধ হবে রোড শো?

এ প্রসঙ্গে সেলিম বলেন, ” ছোট ছোট সৃজনশীল প্রচার চলবে। পুরোপুরি প্রচার বন্ধ হবে না।” যদিও যুযুধান দুই শিবির তৃণমূল ও বিজেপির প্রচারে কোনও খামতি নেই। তবে তৃণমূলের দাবি, আটদফা নির্বাচনের জন্যেই করোনার প্রকোপ বাড়ছে। নির্বাচন কমিশন যে বিজেপির অঙ্গুলিহেলনে চলছে এমন অভিযোগও বারবার তুলেছে ঘাসফুল শিবির।

সেই প্রসঙ্গে, সেলিমের মন্তব্যের রেশ টেনেই এ দিন সূর্যকান্ত বলেন, ”করোনা বিজেপি বা আট দফার নির্বাচনের জন্য বেড়েছে, এটা অত্য়ন্ত মূর্খের মতো কথা। মহারাষ্ট্রে কি নির্বাচন হচ্ছে যে করোনা (Corona) বেড়ে গেল! মানুষের অসচেতনতা ও সরকারের গাফিলতিই এর কারণ। ভারতের অবস্থা এত খারাপ তো সরকারেরই জন্য। মানুষকে আরও সচেতন হতে হব।” শুক্রবার, দুর্গাপুরের ভিড়িঙ্গী মোড় থেকে প্রান্তিকার পাঁচমাথা মোড় পর্যন্ত রোড শো করেন সূর্যকান্ত মিশ্র।

আরও পড়ুন: বিজেপি প্রার্থীর উস্কানিমূলক মন্তব্যের জের, ছেঁড়া হল দলীয় পতাকা, অভিযোগ ঘাসফুলের

Next Article