AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

Dark Dining: আলো নয়, গন্ধ ও স্বাদেই যত জোর! ডার্ক ডাইনিং এর অভিজ্ঞতা হয়েছে কখনও?

Restaurant in the Dark: বর্তমান যুগে রেস্তোরাঁয় গিয়ে ভাল খাবার টেবিলে আসা মানেই আগে ছবি তোলা। নিখুঁত 'ফুড এস্থেটিক শট' না হলে যেন পেটে খাবার ওঠে না! কিন্তু একবার ভাবুন তো, যদি এমন কোনও জায়গায় খেতে যান, যেখানে আপনি আপনার খাবার দেখতেই পাবেন না?

Dark Dining: আলো নয়, গন্ধ ও স্বাদেই যত জোর! ডার্ক ডাইনিং এর অভিজ্ঞতা হয়েছে কখনও?
Dark Dining: আলো নয়, গন্ধ ও স্বাদেই যত জোর! ডার্ক ডাইনিং এর অভিজ্ঞতা হয়েছে কখনও? (প্রতীকী ছবি)Image Credit: chatgpt
| Updated on: Nov 19, 2025 | 10:55 AM
Share

বর্তমান যুগে রেস্তোরাঁয় গিয়ে ভাল খাবার টেবিলে আসা মানেই আগে ছবি তোলা। নিখুঁত ‘ফুড এস্থেটিক শট’ না হলে যেন পেটে খাবার ওঠে না! কিন্তু একবার ভাবুন তো, যদি এমন কোনও জায়গায় খেতে যান, যেখানে আপনি আপনার খাবার দেখতেই পাবেন না? ভাবছেন এ কেমন পাগলামি? ঠিক এর উল্টো ধারণাকেই জনপ্রিয় করে তুলেছে ‘ডার্ক ডাইনিং’ (Dark Dining) নামে এক বিশেষ অভিজ্ঞতা! আলো নয়, যেখানে মূল ফোকাস হল খাবারের স্বাদ, গন্ধ এবং টেক্সচার। সেটাই হল ‘ডার্ক ডাইনিং’।

অন্ধকারেই খাওয়াদাওয়া… কেন এমন রেস্তোরাঁ?

গত শতকের নব্বইয়ের দশকের শেষদিকে ইউরোপে এই অভিনব ধারণাটির জন্ম হয়। ১৯৯৭ সালে প্যারিসে প্রথম এমন একটি পরিষেবা শুরু হয়। শীঘ্রই সুইজারল্যান্ডের জুরিখ শহরে বিশ্বের প্রথম স্থায়ী ডার্ক ডাইনিং রেস্তোরাঁ ‘ব্লাইন্ডেকু’ (Blindekuh) চালু হয়। জার্মান ভাষায় ‘Blindekuh’ কথাটির অর্থ হল ‘ব্লাইন্ড ম্যানস বাফ’ (Blind Man’s Buff)।

এই ধারণার মূল উদ্দেশ্য দুটি। সেগুলি হল –

১. সংবেদনশীলতার জাগরণ

যখন আমাদের দৃষ্টিশক্তি কাজ করে না, তখন আমাদের অন্য সংবেদনগুলি যেমন স্বাদ, গন্ধ এবং স্পর্শ অনেক বেশি সক্রিয় হয়ে ওঠে। এই পরিবেশে খেলে খাবারের প্রতিটি উপাদান, সুগন্ধ এবং টেক্সচারকে আরও গভীরভাবে উপভোগ করা যায়।

২. সহানুভূতি সৃষ্টি

এই রেস্তোরাঁগুলির প্রধান লক্ষ্য হল দৃষ্টিহীন মানুষদের জীবনযাত্রা সম্পর্কে সচেতনতা এবং সহানুভূতি সৃষ্টি করা।

বিশেষত্ব: পরিবেশন করেন দৃষ্টিহীন কর্মীরা

এই রেস্তোরাঁগুলির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও মন ছুঁয়ে যাওয়া দিকটি হল এখানে খাবার পরিবেশনের দায়িত্ব পালন করেন দৃষ্টিহীন কর্মীরা। যেহেতু তাঁদের দৃষ্টি নেই, তাই তাঁরা সম্পূর্ণ অন্ধকারেও অবলীলায় চলাফেরা করতে পারেন। যখন গ্রাহকরা রেস্তোরাঁর সম্পূর্ণ অন্ধকার ডাইনিং রুমে প্রবেশ করেন, তখন এই দৃষ্টিহীন কর্মীরাই তাঁদের পথ দেখিয়ে আসনে বসিয়ে দেন। এই অভিজ্ঞতার সময় কোনও ফোন বা সামান্য আলো বেরতে হতে পারে এমন কোনও ডিভাইস ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া হয় না।

খাবারের অর্ডার দেওয়ার ক্ষেত্রেও থাকে চমক। বেশিরভাগ জায়গায় মেনুতে খাবারের নির্দিষ্ট নাম উল্লেখ থাকে না, শুধু ভেজিটেরিয়ান, সি-ফুড বা মাংসের মতো কিছু সাধারণ বিভাগ বেছে নিতে হয়। ফলে প্লেটে কী এল, তা আন্দাজ করাই আসল চ্যালেঞ্জ!

বিশ্বজুড়ে ডার্ক ডাইনিং

জুরিখের ব্লাইন্ডেকু-এর হাত ধরে শুরু হওয়া এই ধারণাটি আজ বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে। প্যারিস, লন্ডন, সিঙ্গাপুরের NOX বা ভিয়েতনাম-এর Noir রেস্তোরাঁগুলিতে এই অভিজ্ঞতা পাওয়া যায়। ভারতে অতীতে ‘সক্ষম ট্রাস্ট’-এর মতো এনজিও-এর উদ্যোগে ‘নাইট অফ দ্য সেন্সেস’-এর মতো ইভেন্টের মাধ্যমে ‘ডার্ক ডাইনিং’-এর স্বাদ পেয়েছেন অংশগ্রহণকারীরা। এক কথায়, ডার্ক ডাইনিং একটি সাধারণ খাবারকে এক গভীর সংবেদনশীল অ্যাডভেঞ্চারে পরিণত করে। যা আমাদের মনে করিয়ে দেয় চোখ ছাড়াও জীবন এবং স্বাদ উপলব্ধি করা সম্ভব।