Sabysachi Gets Open Letter: H&M-এর সঙ্গে চুক্তি নিয়ে এবার ভারতীয় ডিজাইনারদের তোপের মুখে সব্যসাচী
১২ অগাস্ট যখন সব্যসাচীর 'ওয়ান্ডারলাস্ট' অনলাইনে যায়, কয়েক মুহূর্তের মধ্যেই সমস্তটা বিক্রি হয়ে যায়। যদিও অনেকে এটিকে বিশ্বব্যাপী ভারতীয় নকশার জয় হিসেবে দেখেছেন, ভারতীয় কারিগর সম্প্রদায় এই কোলাবোরেশনকে সব্যসাচীর নীতির বিরোধী হিসেবে দেখেছে।
প্রায় এক সপ্তাহ আগে, সব্যসাচী মুখোপাধ্যায় একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ঘটিয়েছিলেন। তিনি সুইডিশ পোশাক প্রস্তুতকারক সংস্থ এইচঅ্যান্ডএমের সাথে কোলাবোরেট করেছিলেন। এই কোলাবোরেশন সব্যসাচীকে কার্ল লেগারফেল্ড, গিয়ামবটিস্তা ভ্যালি, জিমি চু এবং ভার্সেসের মতো একই লিগে পরিণত করেছিল।
H&M- এর সঙ্গে মুখার্জির কোলাবোরেশনের প্রথম কালেকশনের নাম ছিল ‘ওয়ান্ডারলাস্ট’। এতে বোহেমিয়ান কাফতান, ট্রাউজার, টি-শার্ট, পোশাক এবং শাড়ির বিভিন্ন প্রকার রয়েছে। সংগ্রহটি অন্যান্য ভারতীয় কারুশিল্পের ঐতিহ্যের পাশাপাশি রাজস্থানের সাঙ্গানেরি প্রিন্ট থেকে অনুপ্রেরণা নিয়েছিল। ১২ অগাস্ট যখন এই কালেকশন অনলাইনে যায়, কয়েক মুহূর্তের মধ্যেই সমস্তটা বিক্রি হয়ে যায়। যদিও অনেকে এটিকে বিশ্বব্যাপী ভারতীয় নকশার জয় হিসেবে দেখেছেন, ভারতীয় কারিগর সম্প্রদায় এই কোলাবোরেশনকে সব্যসাচীর নীতির বিরোধী হিসেবে দেখেছে।
View this post on Instagram
ডিজাইনার, টেক্সটাইল রিভাইভালিস্ট লায়লা তৈয়াবজি, আর্টিসনাল কালেক্টিভ দস্তকরি হাট সমিতির প্রতিষ্ঠাতা জয়া জেটলি, দ্য ক্র্যাফটস কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়া এবং ক্যালিকো প্রিন্টারস কো -অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেড, সাঙ্গানেয়ার প্রমুখরা সবাই মিলে একটি ‘ওপেন লেটার’ দিয়েছেন। এইচ অ্যান্ড এম কোলাবোরেশনের বিষয়ে তাঁদের উদ্বেগের কথা জানান। কারিগর সম্প্রদায়ের ভবিষ্যৎ নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয়। তাঁরা তাঁদের চিঠিতে জানায়, “… ‘ওয়ান্ডারলাস্ট’ কালেকশনের অংশ হতে না পেরে আমরা গভীরভাবে ব্যথিত। কারিগরদের জন্যও এটি একটি ক্ষতিকর ছাপ ফেলেছে। প্রচারটি এমনভাবে করা হয়েছে জেন এই কালেকশনে ভারতীয় নৈপুণ্যতা রয়েছে। কিন্তু বাস্তবে এই কালেকশনের মধ্যে কোনো ভারতীয় কারিগরের হাত নেই। বিশ্বের দরবারে ভারতীয় ডিজাইনকে যথাযোগ্য সম্মান দেওয়ার এটি একটি সুবর্ণ সুযোগ ছিল, যা অর্থনৈতিক দিক দিয়েও ভারতকে প্রভুত লাভবান করত। অনেকেই বিশ্বের বিভিন্ন মার্কেটে সব্যসাচীর এই কোলাবোরেশনে বিক্রিত পোশাক ‘সোল্ড আউট’ হওয়ায় বেশ গর্ব করছেন। একবার ভেবে দেখুন, এই পুরো ব্যাপারটার মধ্যে যদি ‘হ্যান্ডমেড ইন ইন্ডিয়া’ লেখা থাকতো তাহলে তা লক্ষ লক্ষ চাকরি, ইক্যুইটি এবং টেকসই প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনাকে বাড়িয়ে তুলতে পারতো। এমনকি যদি পুরো সামগ্রীর অর্ধেকও ভারতীয় কারিগরদের দ্বারা নির্মিত হতো, তবে এই মহামারীর সময়ে সেটিই বেশ প্রভাব ফেলতে পারতো…।”
কলকাতা-ভিত্তিক মুখার্জি তার ইনস্টাগ্রাম পৃষ্ঠায় একটি গল্প পোস্ট করে চিঠির জবাব দিয়ে ব্যাখ্যা করেছেন যে এইচ অ্যান্ড এম এর কোলাবোরেশনের সংগ্রহ তাঁর ‘সাধারণ ভাণ্ডার’ থেকে আলাদা। “… H&M ছিল একটি ভিন্ন লক্ষ্যের অংশ, ভারতীয় নকশা আন্তর্জাতিক মানচিত্রে রাখার লক্ষ্য। যদিও এটি নিঃসন্দেহে আমার এবং আমার ব্র্যান্ডের জন্য একটি বড় জয়, আমি এটাও বুঝতে পারি যে এটি ভারতেরও একটি বড় জয়… ”
জেটলি বলেন, “এই পুরো ব্যাপারটা খুব বেশি পরিমাণে সব্যসাচীর নাম আর ব্র্যান্ডকে তুলে ধরেছে। আমরা সবাই, কারিগর এবং কারিগর সম্প্রদায়, শিল্পের রূপ এবং জীবিকার কথা ভাবি। তিনি যা করেছেন তা হলো ‘ডিজিটাইজেশন’। আমাদের কারিগররা এত দক্ষ এবং উদ্ভাবনী, তারা যা চাইবে তাই তৈরি করতে পারবে। তার জন্য আপনাকে বিশাল ব্যাপ্তির উপস্থাপনা করতে হবে বলে মনে হয় না। কারুশিল্পে কাজ করার ইচ্ছে যারাই প্রকাশ করে তাদের সবাইকেই আমরা বলি, ‘সরাসরি কারিগরের কাছে যাও, তাদের দক্ষতা বোঝ’। কিন্তু যদি আপনি তাদের কাজকে ‘হাইব্রিড’ বলে চালিয়ে দেন তাতে তাঁদের নিজস্বতা থাকে না। এটা খুবই হতাশজনক।”
আরও পড়ুন: ভারতীয়দের জন্য প্রথমবার শাড়ি তৈরি করল এইচঅ্যান্ডএম