করোনাকালে ক্রমে স্বাভাবিক হচ্ছে পরিস্থিতি। ভ্রমণপিয়াসীরা একে একে বেরিয়েও পড়ছেন গন্তব্যস্থলে। আপনি যদি পাহাড় ভালবাসেন তবে তিন-চার দিন সময় বার করে, রুকস্যাক আর ওয়ালেট নিয়ে বেরিয়ে পড়ুন কাছে ধারেই। দার্জিলিং-কালিম্পং অথবা লাভা-লোলেগাঁও তো অনেক গিয়েছেন। তার চেয়ে বরং বেছে নিন, এমন পাঁচ অফবিট জায়গা যা আপনাকে পৌঁছে দেবে প্রকৃতির খুব কাছে, আরামে, নিরাপদে…
দু’দিকে সারি সারি পাইন গাছ। তার মাঝখান দিয়ে উঁকি দিচ্ছে কাঞ্চনজঙ্ঘা। কালিম্পং থেকে ১৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত রামধুরাকে যেন দু’হাত খুলে সাজিয়েছে প্রকৃতি। ট্রেক করতে যারা ভালবাসেন তাঁদের কাছে এ এক স্বর্গরাজ্য। হনুমান টক থেকে বরফ ঘেরা কাঞ্চনজঙ্ঘাকে দেখে আপনিও বলে উঠতে পারবেন, “আহা কী দেখিলাম, জন্ম জন্মান্তরেও ভুলিব না”। প্যারাগ্লাইডিং, বার্ডওয়াচিংও কিন্তু করতে পারেন এখান থেকে। নিউ জলপাইগুড়ি থেকে খাতায় কলমে ৮৬ কিমি সময় লাগবে রামধুরা পৌঁছতে। আর বাগডোগরা থেকে ৮৯ কিমি এর মতো।
চটকপুর ঘুরতে যাওয়ার আদর্শ সময় হল ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি। বর্ষার সময় ধস নামে, তাই সে সময় এড়িয়ে যাওয়াই ভাল। দার্জিলিং থেকে চটকপুরের দূরত্ব মাত্র ২৬ কিলোমিটার। শহরের কোলাহল থেকে দূরে, পাহাড় ঘেরা ছোট্ট এই গ্রামে যদি প্রকৃতির খুব কাছে হারিয়ে যেতে চান, তবে একবার ঘুরে আসতেই পারেন। এখানে ওয়াচ টাওয়ার থেকে সান্দাকফুও আপনি দেখতে পারবেন। কে বলতে পারে কপাল ভাল থাকলে আপনার দর্শন হয়ে যেতে পারে মাউন্ট এভারেস্টও!
পাহাড়ে ঘেরা ছোট্ট শৈল শহর। দার্জিলিং থেকে ১৯ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত জোরপোখরি ভ্রমণপিপাসুদের পছন্দের জায়গা। জোড় কথার অর্থ দুই। এবং পোখরি মানে হ্রদ। জোড়া সরোবর রয়েছে বলেই এই জায়গার নাম রাখা হয়েছে জোড়পোখরি। আপনি যদি জঙ্গল ভালবাসেন তাহলে ঘুরে আসতে পারেন এই জায়গা। এই অঞ্চলেই একমাত্র দেখতে পাওয়া যায় হিমালয়ান স্যালামান্ডার।
তাকদা থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখা যায় না। তবে চা গাছের বাগান আর পাইনের সমারোহ আপনার মন ভরিয়ে দেবে। তাকদা থেকে আপনি চএল যেতে পারেন তিনচুলেতেও। তাকদা কথার অর্থ ‘কুয়াশা’। দেখলেই মনে হয় কে যেন এক সাদা আস্তরণ বিছিয়ে দিয়েছে জায়গাটার উপর। শান্ত, নিরিবিলি, নির্জন। এখানে ক্রশিং ভিউ পয়েন্ট থেকে টাইগার হিল, দূরপীন দেখতে পারবেন। নিউ জলপাইগুড়ি থেকে দূরত্ব ৯০ কিমি। আর দার্জিলিং থেকে ৩০ কিলোমিটারের মধ্যে।
হোটেল থেকেই কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখতে চাইলে এ জায়গা আপনার। জলপাইগুড়ি থেকে গাড়ি নিলে পেডং পেরিয়েই সিলারি গাঁও। সিঙ্কনা প্ল্যান্টিং থেকে শুরু করে দামসাং দুর্গ…এই জায়গা আপনার জন্য সাজিয়ে রেখেছে তার কৃষ্টি। দেখে নিন ৩০০ বছরের পুরনো বৌদ্ধ মনেস্ট্রি। তাতে বৌদ্ধ তান্ত্রিকদের আঁকা ছবি। দাকশাম কেল্লা যদি দেখতে চান গাইড নেবেন সঙ্গে। জোঁকের উপদ্রব রয়েছে। সাবধানে থাকবেন। নেটওয়ার্কের সমস্যা রয়েছে। তাই ফোন যে সব সময় সচল থাকবে এ কথা বলা যায় না।